বিতর্ক যেন কোন অবস্থাতেই পিছু ছাড়ছে না নারায়ণগঞ্জের ব্যাপকভাবে সমালোচিত ব্যবসাযী প্রতিষ্ঠান ফতুল্লার শাহ ফাতেহ উল্লাহ টেক্সটাইল মিলের কর্ণধার ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্য মোহাম্মদ শাহজাহানের।
এর পূর্বেও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের ঘটনা স্ত্রীর হাতে ধরা পরার পর স্ত্রীর পা ধরে, নিজের গালে নিজে চপেটাঘাত করে ক্ষমা চাওয়ার ঘটনার ভিডিও ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয় । এমন নারী কেলেংকারী ছাড়াও খোদ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে নথী জালিয়াতি করে মামলার আসামী হয়ে ফেরারী জীবন শুরু করে শাহজাহান।
নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে একজন চিহ্নিত দালালকে ( যাকে সকলেই নয় লাইক্কা ব্যাংক ডাকাত রাজাকারের শেল্টারদাতা বলে চিনেন ) সাথে নিয়ে নানান কেলেংকারী চালিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন যাবৎ । সেই শাহজাহানের বিরুদ্ধে এবার শত শত কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগে দূদক মামলা করেছে
উল্লেখিত একের পর এক অভিযোগ ছাড়াও ফতুল্লার বিএনপির রাজনীতির এক কুট কৌশলী ব্যবসায়ী শাহ আলমের বড় ভাই শাহজাহানের উল্লেখিত অপকর্ম ছাড়াও এবার ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির সহদ্য শাহজাহান, চেয়ারম্যান আজিমউদ্দিনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৫ মে) দুদকের সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির উপ-পরিচালক ফরিদ উদ্দিন পাটোয়ারী বাদী হয়ে মামলা করেন। বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দুদকের ভারপ্রাপ্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান এবং আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো. হিলালী।
এজাহারে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা দেন আসামিরা। পরে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করেন। তারপর নিজেরা সেই এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, আসামিরা সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে অন্যায়ভাবে লাভবান হয়েছেন। সেই সঙ্গে প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।
দুদকের ভারপ্রাপ্ত সচিব জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪২০/১৬১/১৬৫ক ধারা এবং ১৯৪৭ সালের ২ নম্বর দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারাসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এর আগে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, এফডিআর করার নামে প্রতিষ্ঠানের অর্থ লোপাট, স্ত্রী-স্বজনদের চাকরি দেওয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া, সরকারি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে গাড়ি ক্রয় ও অবৈধভাবে বিলাসবহুল বাড়ি ব্যবহার এবং বিভিন্ন অনৈতিক সুযোগ সুবিধা নেওয়ার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর অনুসন্ধান শুরু হয়।
এরপর একই বছরের ডিসেম্বরে ট্রাস্টি বোর্ডের ছয় সদস্যকে তলব করে দুদক। তবে তারা কেউই হাজির না হওয়ায় চলতি বছর তাদের ফের তলব করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য আজিম উদ্দিন ও এম এ কাশেম সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটি লুটেপুটে খাচ্ছে। মূলত এ সিন্ডিকেটের কারণে নর্থ সাউথে অনিয়ম পরিণত হয়েছে নিয়মে। কম মূল্যের জমি বেশি দামে কেনা, ডেভেলপার কোম্পানির কাছ থেকে কমিশন নেওয়া, শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি থেকে অবৈধভাবে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি কেনা, লাখ টাকা করে সিটিং অ্যালাউন্স গ্রহণ, অনলাইনে মিটিং করেও সমপরিমাণ অ্যালাউন্স গ্রহণ, নিয়ম ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ডের ৪০৮ কোটি টাকা নিজেদের মালিকানাধীন ব্যাংকে এফডিআর, মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা অমান্য করে কয়েকগুণ শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগ রয়েছে।









Discussion about this post