বন্দর থানার চাঞ্চল্যকর উজ্জল হত্যাকাণ্ডের দশ বছর পর পলাতক ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবুল কাশেম (৫৬) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর জামিনে মুক্ত হয়ে ছদ্মবেশ ধারণ করে বিভিন্ন মাজারে নিজ নাম পরিবর্তন করে ছদ্দবেশে লুকিয়ে থাকতেন কাশেম।
শুক্রবার (৬ মে) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আঃ বারেক হাওলাদার বন্দরের কদম রসুল মাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন।
গ্রেপ্তারকৃত আবুল কাশেম নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলার সোনাকান্দা বড় মসজিদ এলাকার মৃত মোহাম্মদ হোসেন ওরফে মোহাম্মদ আলীর ছেলে। একই দিন দুপুরে তাকে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা (জিআর- ২৬৭/১২) মূলে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।
মামলার তথ্যানুসারে বন্দর থানা পুলিশ জানায়, উপজেলার সোনাকান্দা বড় মসজিদ এলাকায় বিদেশ ফেরত মো. উজ্জল মিয়ার কাছ থেকে সিগারেটের আগুন ধরানোর জন্য ব্যবহৃত একটি লাইটার ম্যাচ ধার নেয় সুজন। এর একদিন পর সুজনের কাছে লাইটার ফেরত চায় উজ্জল।
এই নিয়ে ২০১২ সালের ১৬ জুন তাদের দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে সুজন, কালু, আজমান ও আবুল কাশেমসহ আরো কয়েকজন তাকে মারধর করে মাথায় ছুরিকাঘাতে হত্যা করে।
এই ঘটনায় নিহত উজ্জলের বাবা লুৎফর রহমান বাদী হয়ে সুজনসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
উজ্জল মিয়া হত্যা মামলায় ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রথম বিচারক মিয়াজী শহীদুল আলম চৌধুরী ২০১৫ সালের ৫ অক্টোবর চারজনের মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন।
একই সঙ্গে আদালত মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন। এ ছাড়া মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামি সুজনকে আরো তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং দণ্ডিত অর্থ অনাদায়ে এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।
অন্যদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত ৬ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন বন্দর উপজেলার সোনাকান্দা এলাকার সুজন, কালু, আজমা ও আবুল কাশেম।
রায় ঘোষণাকালে দণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামির মধ্যে শুধু সুজন উপস্থিত ছিল । পলাতক ছিলেন অন্য তিনজন ।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, হত্যার পর প্রায় ১০ বছর পলাতক ছিলেন আবুল কাশেম। তাকে গ্রেফতারের পর বাদীপক্ষের মাধ্যমে আমরা তার পরিচয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত হই। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।









Discussion about this post