মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর হোসেন ও তার তিন সহযোগী একটি চাঁদাবাজি মামলায় খালাস দিয়েছেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক । বৃহস্পতিবার (১২ মে) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাবিনা ইয়াসমিনের আদালত এ রায় দেন।
খালাসপ্রাপ্ত নুর হোসেনসহ তার সহযোগীরা হলেন- শাহ জালাল বাদল, নুর উদ্দিন ও লোকমান। যাদের ভয়ে সিদ্ধিরগঞ্জে এখনো বাঘে মহিষে এক ঘাটে জল খায়।
চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর হোসেন কে এখনো ভয় সিদ্ধিরগঞ্জবাসীর । তাই কুখ্যাত সেই নূর হোসেন ও তার বাহিনীর ভয়ে আদালতে আসেন নাই সাক্ষীরা।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাবিনা ইয়াসমিনের আদালতে মাদক ও চাঁদাবাজি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য থাকলেও এদিন কোনো সাক্ষী উপস্থিত হননি।
এ বিষয়ে জেলা ও দায়রা জজ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মো. সালাহ উদ্দীন সুইট বলেন, নূর হোসেনের ভয়েই আদালতে সাক্ষীরা আসতে চান না। দুই মামলায় আজ কয়েকজনের সাক্ষী দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেউই আসেননি।
পুলিশকে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলেছেন আদালত। আদালত বলেছেন আমি অর্ডার পাঠাবো, আপনি বাধ্য করবেন। যদি কোনো সাক্ষী ভয় পায় এ দায়িত্ব আমাদের। তাদের নিরাপদে নিয়ে আসবেন।
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খোকন সাহা বলেন, ভয়ের কোনো বিষয় নেই। মামলার বাদীই আপোষ করে ফেলেছেন। চাঁদাবাজি মামলার বাদী আপোষ করে ফেলেছেন।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, কেউ কাউকে ভয়ভীতি দেখাননি। যদি ভয়ভীতি দেখানো হতো তাহলে আমাদের কাছে অভিযোগ আসতো। কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি।
আদালত সূত্র জানায়, সাতখুন মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর হোসেনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা বিচারিক কার্যক্রমে ছিল। এরমধ্যে অস্ত্র মামলায় চারজনের সাক্ষ্য নিয়ে যুক্তিতর্ক শেষে আদালত আগামী ৪ জুলাই রায়ের দিন ধার্য করেছেন।
একটি চাঁদাবাজি মামলায় আদালত কুখ্যাত খুনী নূর হোসেনসহ চার সহযোগীকে খালাস দেন। বাকি দুটি মামলায় সাক্ষীরা আদালতে আসেননি।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোড থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজন অপহৃত হন। ৩০ ও ৩১ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এক কিলোমিটারের মধ্যে পায়ে ২৪টি করে ইট বোঝাই সিমেন্টের ব্যাগ দিয়ে বাঁধা অবস্থায় নদীতে ডোবানো ছিল। হাত-পা দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল।
এ ঘটনায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এমন কুখ্যাত খুনী ও তার পরিবারের অন্যান্যদের ভয়ে এখনো টটস্থ থকে সিদ্ধিরগঞ্জের সাধারণ মানুষ । কেউ এই অপরাধদের বিরুদ্ধে কোন কথা বলেন না ।
২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারীর নাসিক নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে পৃথক ওয়ার্ডে সেই কুখ্যাত খুনী নূর হোসেনের ভাই নূর উদ্দিন ও ভাতিজা শাহজালাল বাদল কে জয়লাভ করাতে কাশিমপুর কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি থেকে নূর হোসেন নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে সিদ্ধিরগঞ্জের অনেককেই ফোন করে নানাভাবে হুমকি দেয়ার ঘটনাও ব্যাপক চাঞ্চল্যের ঝড় তুলে । এতো ঘটনার পরওনিাসিক নির্বাচনে নূর হোসেনের ভাই ও ভাতিজা কাউন্সিলর হিসেবে জয়লাভ করে। যা সকলকে হতবাক করেছে ।









Discussion about this post