নারায়ণগঞ্জে আলোচিত হোসিয়ারি শ্রমিক সুব্রত হত্যাকারীদের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও অদ্যাবধি গ্রেফতার হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কে মিছিলের পর মানববন্ধন করেছে নিহতের স্বজনরা ।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর সাবেক প্যানেল মেয়র আওয়ামীলীগ নেতা মনিরুজ্জামান মনিরের কাছ থেকে উৎকোচ পেয়ে পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করছেনা বলে মানববন্ধনে অভিযোগ করেছেন ।
মামলাটি র্যাব কিংবা সিআইডিতে স্থানান্তরের দাবিও জানিয়েছেন তারা।
রোববার (২৯ মে) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সুব্রত হত্যাকান্ডের বিচার ও খুনিদের ফাঁসির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানান নিহতের স্বজন ও বন্ধুরা। এ সময় “সুব্রতের রক্ত বৃথা যেতে দিবো না, কাউন্সিলর মনিরের ফাঁসি চাই” বলে স্লোগান দেন অংশগ্রহনকারীরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, যে দিন সুব্রতকে ধরে নিয়ে যায়, ওইদিন সায়েম নিজে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর মনিরকে ফোন করে বলেছে ওকে (সুব্রত) মারা হয়েছে এখন কী করবো। তখন মনির বলেছেন ওকে (সুব্রত) ছিনতাইকারী বলে রাস্তায় ফালাইয়া যাও। মারা যাবার আগে আমাদের সামনে সুব্রত নিজে এই কথা বলে গেছে তার পরিবারের কাছে। এখন পুলিশ যদি মনিরকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে, আমরা বিচার চাইবো কার কাছে। পুলিশকে আমরা সন্ত্রাসীদের সকল ভিডিও দিয়েছি, তাও তাদের ধরা হয়নি।
নিহত সুব্রতের ছোট বোন সম্পা মন্ডল বলেন, কাউন্সিলর মনির সন্ত্রাসীদের লালন পালন করে। কাউন্সিলর মনিরের হুকুমেই আমার ভাইকে খুন করেছে সন্ত্রাসীরা। আমার ভাই মরার আগে সব খুনিদের নাম বলে গেছে। আমার ভাই নিজের মুখে বয়ান দিয়ে গেছে তারপরেও কিসের জন্য আমরা বিচার পাচ্ছি না। পুলিশ কাউন্সিলর মনিরের টাকা খেয়ে পিছু হটেছে। পুলিশ নিজে আমার ভাইয়ের কাছ থেকে জবানবন্দি নিয়েছে তাও কেনো খুনিদের ধরা হয়নি। আমরা এখন পুলিশ চাই না আমরা চাই র্যাব ও সিআইডির মাধ্যমে এই হত্যাকান্ডের তদন্ত করা হোক। আমাদের দাবি সুব্রতের খুনিদের যাতে সুষ্ঠু বিচার হয়, তাদের ফাঁসি চাই।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন নিহত সুব্রত মন্ডলের মা গৌরী মন্ডল, বড় বোন লিপি মন্ডল, ছোট বোন জামাই তপন সরকারসহ তার বন্ধুরা।
এদিকে ১১ জনের নাম উল্লেখ সহ ১০ থেকে ১২জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। নিহত সুব্রত মণ্ডল জয় দেওভোগ এলাকার সরেশ চন্দ্র মন্ডলের ছেলে। সে হোসিয়ারী কারখানার শ্রমিক। মামলার আসামিরা হলেন সায়েম ওরফে ইয়াবা সায়েম (৩০), সাজিদ ভূঁইয়া (৩৬), নাইম উদ্দিন বাবু (৩৫), দোলন (২৫), আল আমিন (২৫), নোমান (২২), প্রনয় (২২), রাকেশ (২০), সুদেব (৩২), অনিক রাজিব (২৬) ও মানিক (২৫) ।
উল্লেখ্য নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকার বাড়ি থেকে গত ১৬ মে রাতে ফোনে ডেকে নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ফলে সুব্রত মন্ডল জয় (২২) নামে যুবক ৭ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও আওয়ামীলীগ নেতা মনিরুজ্জামান মনিরের অনুগামীরা এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা। ২২ মে রোববার নিহত সুব্রত মন্ডল জয়ের বড় বোন সম্পা মণ্ডল বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।









Discussion about this post