শিল্পাঞ্চলখ্যাত ফতুল্লা তল্লা এলাকার প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা জানে আলম বিপ্লবকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে সম্বোধন করে তার বিরুদ্ধে হামলা ও ৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেছেন আজমেরীবাগ কেন্দ্রীয় উন্নয়ন ও পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) বেলা ১২টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি।
মিজানুর রহমান বলেন, গত ৩১ মে রাত পৌনে ১২টার দিকে তল্লার আজমেরীবাগ এলাকায় অভিযুক্ত জানে আলম বিপ্লব ও তার লোকজন নিয়ে মিজানুর রহমানের উপরে হামলা চালায়। এই সময় সাথে থাকা ৫ লাখ টাকাও ছিনতাই করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ তার। বাবাকে হামলা থেকে বাঁচানোর জন্য কলেজপড়ুয়া ছেলে মুশফিকুর রহমান এগিয়ে আসলে তাকেও গুরুতর আহত করে হামলকারীরা। হামলা থেকে বাঁচার জন্য প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিলে সেখানেও ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ মিজানুর রহমানের। পরে জাতীয় জরুরি সেবার হটলাইন ৯৯৯ এ কল করে উদ্ধার হন তারা। এই ঘটনায় ১ জুন সকালে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন মিজানুর।
তিনি বলেন, আজমেরীবাগ এলাকায় একটি ওষুধ বিক্রয়ের দোকান রয়েছে তার। পাশাপাশি স্থানীয় সামাজিক কর্মকান্ডের সাথেও সম্পৃক্ত তিনি। আজমেরীবাগ কেন্দ্রীয় উন্নয়ন ও পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। এই কমিটির সভাপতি স্থানীয় শিল্পপতি মডেল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদুজ্জামান।
স্থানীয় সামাজিক কর্মকান্ড করতে গিয়ে জানে আলম বিপ্লবের সাথে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে বলে দাবি মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিপ্লব একজন সন্ত্রাসী। সে তার বাহিনী দিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালায়। এলাকায় কেউ ভালো কাজ করতে গেলে তার বিরুদ্ধে চলে যায় বিপ্লব। সে রাজনৈতিক লেবাস লাগিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালায়। বিগত সময়ে সে বিএনপি করতো। মালয়েশিয়া থেকে এসে এখন আওয়ামী লীগের লেবাস ধরেছে। সে দল ও দলীয় এমপির সুনাম ক্ষুন্ন করছে। বিগত সময়ে এলাকায় ওয়াসার লাইন সংযোগের জন্য প্রতি বাড়ি থেকে ৩ হাজার টাকা করে প্রায় ১০ লাখ টাকা তুলেছে। যার একটি টাকারও হিসাব নাই, ওয়াসার সংযোগও নাই। করোনার সময় বাড়িওয়ালাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা তুলেছে। কিন্তু সেই টাকায় কাকে বা কাদের সহযোগিতা দিছে কেউ জানে না। কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তার বিরুদ্ধে দাঁড়াইছি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল বাতেন, অর্থ সম্পাদক আফম আব্দুল আউয়াল, ইসলামী বিষয়ক সম্পাদক হাজী শহীদুল্লাহ স্থানীয় কয়েকজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত জানে আলম বিপ্লব স্থানীয় যুবলীগ নেতা। যদিও যুবলীগের কোন কমিটিতে তার পদ নেই। তবে স্থানীয় সাংসদের ঘনিষ্ঠ পরিচয়ে তার বেশ প্রভাব রয়েছে। হামলা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জানে আলম বিপ্লব প্রেস নারায়ণগঞ্জকে পাল্টা অভিযোগ তুলে বলেন, শফিকুল ইসলাম নামে এক আইনজীবী আজমেরীবাগ এলাকায় ৯০ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ১০ শতাংশ জমি বায়না করেছেন। এই জায়গাটা মিজানুর রহমান ও কয়েকজন রেজিস্ট্রি করে নিতে চেয়েছিলেন। ঘটনার রাতে ওই জমিতে কাজ করতে গেলে মিজানুর রহমানের লোকজন বাধা দেয়। এ নিয়ে একটু ধাক্কাধাক্কি হইসে। তবে এসবের সাথে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেন বিপ্লব।
তিনি বলেন, ‘আমার প্রতি প্রতিহিংসাপরায়ন কিংবা জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এমন অভিযোগ করেছেন তিনি। আর তার অভিযোগের কতটুকু সত্যতা আছে তা এলাকায় এসে স্থানীয়দের সাথে কথা বললেই বুঝতে পারবেন।’









Discussion about this post