যে কোন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। ঘুমাতে গেলেও সকল দিক বিবেচনা করে সার্বিক খোজ খবর নিয়ে ঘুমাতে হয়। ঘুমিয়েও একজন ওসিকে টেনশনে থাকত হয় সব সময় । আর থানা এলাকায় কোন অঘটন যাতে না ঘটে, আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষমতাসীন রাজনীতিবিদদের তৈলমর্দন করেই খুবই হিসেব কষে ওসিগিরির চাকরী করতে হয়।
চুন থেকে নুন খসলে এবং বিচক্ষনতার পরিচয় দিয়ে দায়িত্ব পালন না করলে ওসির চৌদ্দগোষ্টিও উদ্ধার করে উর্ধতন কর্মকর্তারা । কোন কোন ক্ষেত্রে থানা থেকে ক্লোজ, সাময়িক বরখাস্ত, বরখাস্তসহ বাধ্যতামূলক অবসরেও পাঠানোর অনেক উদহারণ রযেছে। এমন জ্বলন্ত উদহারণ সোনারগাাঁ থানার সবশেষ ওসি রফিকুল ইসলাম । আবার কোন কোন ক্ষেত্রে ওসিকে থালা বাটি কম্বল হাতে কারাবরণও করতে হয় । এমন উদহারণ ওসি প্রদীপ । এমন ঘটনার মধ্যেই চাকুরী করতে হয় অত্যান্ত বিচক্ষনতার সাথে।
এতো টেনশনের মাঝেও সিদ্ধিরগঞ্জে ডিএনডি লেকে আদমজী এমডব্লিউ কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীরা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ঘুরতে আসলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মশিউর রহমানের নজরে আসে শিক্ষার্থীদের এমন কান্ডে । প্রতিদিনের মতো টহলে বের হয়ে টহল টিম নিয়ে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের সিটি করপোরেশনের নির্মানাধীন লেকে উপস্থিত হন ওসি মশিউর রহমান।
সেখানে তিনি লেকের ভাংগার পুল থেকে নাভানা পর্যন্ত অংশে কলেজের ইউনিফর্ম পরিহিত শিক্ষার্থীদের ঘুরাঘুরি করতে দেখেন। পরে তিনি তাদের ডেকে এনে কলেজ সময়ে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে লেকে ঘুরাঘুরি করতে নিষেধ করেন। ঘুরতে হলে বিকেলে পরিবারের লোকজন নিয়ে সাধারণ পোষাকে আসত বলেন।
এসময় শিক্ষার্থীদের চুলের বাহারি কাটিং দেখে সেলুনে গিয়ে সেগুলো কেটে ফেলতে বলেন। আর কখনো কলেজ টাইমে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে লেকে ঘুরাঘুরি না করতে নির্দেশনা দেন । ভবিষ্যতে যদি আবারও তাদের কলেজের সময়ে লেকে ঘুরাঘুরি করতে দেখে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়ে দেয়। পরে শিক্ষার্থীদের কলেজের সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় ওসি মশিউর রহমান। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলো পরিদর্শক তদন্ত হাফিজুর রহমান, পরিদর্শক অপারেশন আবু বক্কর সিদ্দিক।
শিক্ষার্থীদের সাথে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমানের এমন আচরণের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর অনেকেই ওসি মশিউর রহমানসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের সাধুবাদ জানিয়ে উল্লেখিত বক্তব্য দিয়ে আরো কঠোর হলে সিদ্ধিরগঞ্জ হবে মডেল থানা। এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে কঠোর ভাষায় সমালোচনাও করেন ওসিসহ অসাধুদের নিয়ে ।

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে সিদ্ধিরগঞ্জের অনেকেই বলেন, প্রকাশ্যে সিদ্ধিরগঞ্জের লেকের পাড়ে শিক্ষার্থীদের কলেজ ফাঁকি দিয়ে ঘুরতে দেখে আল্টিমেটাম দিয়ে বাড়ি পাঠালেন ওসি । এমনটি সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন তিনি (ওসি)। কিন্তু সিদ্ধিরগঞ্জের শতাধিক স্থানে কোটি কোটি টাকার তেল চুরি, চুনার ভাট্টিতে নানা অপকর্মসহ গ্যাস চুরির ঘটনায় ওসির নামে মাসোয়ারা আদায়, অনুমোদনহীন কয়েল কারাখানা থেকে নিয়মিত ওসির নামে চাঁদা আদায়, শিমরাইলে ব্যাপক চাঁদাবাজি, ধর্ষনের ঘটনা দামাচাপা দিয়ে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ফের নাটকবাজি, সড়কে অটো রিক্সা থেকে লাখ লাখ টাকার চাঁদাবাজি, তেলচোর অপরাধীদের সাথে ছবি তুলে প্রচারের চিত্র কি পুলিশের সুণাম বৃদ্ধি করে ? এমন অসংখ্য ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের দূর্ণাম রয়েছে পুরো সিদ্ধিরগঞ্জেই ।
এমন ঘটনায় অনেকেই আরো বলেন, লেকের পাড়ে ক্লাশ ফাঁকি দিয়ে ঘুরতে যাওয়া কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের প্রতি আরো কঠোর হওয়া উচিৎ। ওসি এমনটি ঠিক ই করেছেন। কিন্তু লেক পাড়ে ছাড়াও শীতলক্ষা নদীর পাড়ে তো আরো অনেক ছোট ছোট স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী স্কুল ফাঁকি দিয়ে আড্ডা দেয় । যাদের ঘিরে কোন দিনও অভিযান পরিচালনা করেন নাই ওসি মশিউর । তবে কি লেক পাড়ের ঘটনা নিয়ে রাজনীতি থাকতেও পাড়ে ? কারণ সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন মূলক কাজ কে বিতর্কিত করতেই হয়তো এমন কাজও হতে পারেও বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ ।









Discussion about this post