রূপগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্র আকাশ হত্যা মামলায় নারীসহ দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
একই সাথে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার (৩১আগষ্ট) জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুন্সী মোঃ মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
উল্লেখিত রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন আসামিরা।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- হবিগঞ্জের ছোট বহুলার জিতু মিয়ার মেয়ে জান্নাতি বেগম ও দক্ষিন তেঘরিয়ার ফিদার আলীর ছেলে সিদ্দিক আলী।
নারায়ণগঞ্জ আদালতের ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান উল্লেখিত রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান , পাওনা টাকার নিয়ে দ্বন্দের জেরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল হবিগঞ্জের তেগরিয়া গ্রামের ১৭ বছর বয়সী মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র আয়বুর রহমান খোকন অরফে আকাশকে হবিগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বরাত এলাকায় এনে খাবারের সাথে নেশাদ্রব্য মিশিয়ে অচেতন করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা চারজনকে আসামি করে মামলা করেন৷ মামলার আসামিরাও আদালতে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। মামলার চার আসামীর মধ্যে জান্নাতী ও সিদ্দিক নামে দুইজনের সাজার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার অপর দুই আসামি সাবিনা ও সুমন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেবেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালত।
উল্লেখ্য, হবিগঞ্জ দারুচ্ছুন্নাত আলীয়া মাদ্রাসার ছাত্র কে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নিয়ে হত্যা করার ঘটনায় নিহতের দুই প্রেমিকাসহ এক যুবককে ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল আটক করেছে হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশ। এ সময় তারা পুলিশের কাছে ঘটনার কথা স্বীকার করেছে।
ওই বছর ৮ এপ্রিল হবিগঞ্জ সদর উপজেলার দক্ষিণ তেঘরিয়া গ্রামের হাজি আব্দুল হেকিমের ছেলে আলিয়া মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আরিফুর রহমান খোকনকে (১৮) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ নিয়ে যায় তার প্রেমিকা সদর উপজেলার ছোট বহুলা গ্রামের জিতু মিয়ার কন্যা শাবনূর আক্তার (২০)। সেখানে যাবার পর শাবনূর জানতে পারে খোকন তার বান্ধবী বানিয়াচং উপজেলার শান্তিপুর গ্রামের বর্তমানে হবিগঞ্জ শহরের সুলতান মাহমুদপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের কন্যা সাবিনা আক্তারের (১৪) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে খোকনের।
এমন ঘটনার একপর্যায়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রেমিকা শাবনূর ও সাবিনাসহ পোদ্দার বাড়ি এলাকার সোহেল মিয়ার ছেলে সুমন (১৮) মিলে খোকনকে ১১ এপ্রিল হত্যা করে লাশ রুপগঞ্জ থানার তারাব এলাকায় ফেলে রাখে। পরে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্ত শেষে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের নিকট হস্তান্তর করলে ১২ এপ্রিল লাশ রূপগঞ্জ এলাকায় দাফন করা হয়।
এদিকে ছেলেকে হারিয়ে বাবা আব্দুল হেকিম বিভিন্নস্থানে খোঁজ করতে থাকেন। কোথাও না পেয়ে তিনি নিরাশ হয়ে পড়েন।
মাদ্রাসার ছাত্র নিখোঁজের ঘটনায় থানায় কোনো সাহায্য না পেয়ে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লার নিকট যান। তিনি ডিবির ওসি আল আমিনকে দায়িত্ব দেন। দুই ঘণ্টার ভেতরেই হবিগঞ্জ শহরের বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করে ডিবি পুলিশ৷
আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। পরে ডিবি পুলিশ রূপগঞ্জ থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লা বলেন, রহস্য উদঘাটন হয়েছে। রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। Acceptance রূপগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পরবর্তীতে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ দ্রুততম সময়ে তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।









Discussion about this post