নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
নারায়ণগঞ্জের আইনশৃংখলা বাহিনীর নানা তৎপরতার পর নারায়ণগঞ্জ জেলার রাজনীতিতে এক বৈরী আবহাওয়া শুরু হয়েছে । বিশেষ করে সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহেমেদ টিটুকে নিয়ে জেলা পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি।
এমন ঘটনায় জেরা পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ বরাবরের মতো তার বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জবাসীকে জানান দিচ্ছেন, কোন অবস্থাতেই নারায়ণগঞ্জে কোন চাঁদাবাজ, ভূমিদস্যু, জুট সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, জুয়াসহ কোন ধরণের অপরাধীদের ছাড় দেয়া হবে না । নারায়ণগঞ্জে জেলায় যোগদানের পর কয়েক বছর যাবৎ প্রভাবশালীদের দ্বারা পরিচালিত প্রকাশ্যে চলমান বিশাল জুয়ার আসর গুড়িয়ে দিয়ে ৪২ জন জুয়ারীকে আটক করে আদালতে পাঠায় পুলিশ সুপার । আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর ফতুল্লার পাগলা এলাকার নিরাপদ মাদকে সেবনের আস্তানা হিসেবে পরিচিত মেরী এন্ডারসনে হানা দিয়ে ৬৮ জন মাদক সেবী ও ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে । এমন সাড়াসী অভিযানের পর শহরের ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয় তানভীর আহমেদ টিটু নাম এই মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকায় উঠে আসায় ।
উত্তপ্ত এমন ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ চেম্বার এন্ড কমার্স সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে আবার তা পবিবর্তন করে রোববার ৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করবেন বলে জানান । শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ ৪ আসেনর সংসদ সদস্য শামীম ওসমান জরুরী কর্মীসভায় প্রশাসনকে নানাভাবে সমালোচনা করে বক্তব্য প্রদান করেন । একই সাথে নেতাকর্মীদের আগামী ১০/১২ দিনের মধ্যে খেলা শেষ হবে বলে শান্ত থাকার আহবান জানান। পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের নাম উচ্চারণ না করে নানাভাবে সমালোচনা করেন এমপি শামীম ওসমান । একই সাথে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে নিয়ে মন্তব্য করেন সাংসদ । এর একদিন পর স্বারকলিপি প্রদানের খবরে রোববার সারাদিন সংবাদকর্মীদের সরব উপস্থিতি ছিলো আদালতপাড়ায় । কি হতে যাচ্ছে তার পরিস্কার ধারণা জানতে । এমন স্বারক লিপি প্রদানের কর্মসূচী থেকেও ফিরে আসেন ব্যবসায়ী নেতা খালেদ হায়দার খান কাজল ।
৭ এপ্রিল রোববার স্বারকলিপি প্রদানের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল রোববার বিকেলে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে বলেন, ‘আমাদের ব্যবসায়ীদের অভিভাবক হলেন এমপি সেলিম ওসমান। তিনি পবিত্র ওমরা হজ পালনের জন্য সৌদিতে ছিলেন। আজ রোববার তিনি দেশে এসেছেন। তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা সিদ্ধান্ত জানাবো ।’
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে বলেছেন, ‘আমি কয়েকদিন দেশে ছিলাম না। নারায়ণগঞ্জের ঘটনা সম্পর্কে আমি অবহিত। আসলে আমাদের কোন ধরনের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করা যাবে না। আমি সব সময়ে আলোচনার টেবিলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি। এবারও সেটা করবো। প্রয়োজনে আমি সোমবার পুলিশ সুপারের সঙ্গে আলোচনা করবো যদি পুলিশ প্রশাসন চায়। আমি মনে করি এখনো এমন কিছুই হয়ে যায়নি। কোন ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকতে পারে। আলোচনার টেবিলে বসলেই সব কিছুর সমাধান হয়।
সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ও চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজলের এমন বক্তব্য প্রদানের পর নারায়ণগঞ্জের অনেক বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ, প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা ও সাধারণ জনগণ নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেটকে বলেন, আসলেই কি হতে যাচ্ছে নানায়ণগঞ্জে ? পুলিশ সুপার বনাম ওসমান পরিবার নিয়ে এ কোন খেলা শুরু হয়েছে । এর অবসান কি ? এতা আল্টিমেটাম, এতো হুংকারের পর সেলিম ওসমান আসলেই কি সমাঝোতা করতে চাইছেন উত্তপ্ত এমন পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য ? তবে কেন এমন ঘটনা ঘটলো শহরে ? সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের শ্যালকের বিরুদ্ধে পুলিশের এমন গুরুতর অভিযোগের প্রমাণ চাইতে ও তো পারতো ? এতো হুংকার এতো আন্দোলনের হুমকি, জলকামানসহ পলিশের অবস্থান মহানগরবাসীকে এখনো রেখেছে আতংকে। এতা কিছুর পর এখন কি ঘটতে যাচ্ছে সমাঝোতা নাকি বিদায় ঘন্টা ? আসলে পর্দার আড়ালে কি ঘটতে যাচ্ছে ?
এমন অসংখ্য মন্তব্য, সমালোচনার ঝড় উঠেছে সর্বত্র ।









Discussion about this post