গেলো ৩১ মার্চ মাদক ও অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ব্যাপক আলোচিত সমালোচিত ইউপি সদস্য বজলুর রহমান ওরফে ডন বজলু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান । এই বজলুর রহমানের ইতিহাস জীবদ্দশায় প্রকাশ হলেও আরো কয়েকজন ইউপি মেম্বার কি করছেন তার অনেকের খবরই রয়ে গেছে অজানা। নিয়মিত পুলিশ-বিশেষ পেশার লোকজন এবং গোয়েন্দাদের নানাভাবে ম্যানেজ করে এই চনপাড়ার বিশাল অপরাধ সাম্রাজ্য এখনো টিকে আছে স্ব স্ব অবস্থান নিয়ে ।
এদের মধ্যে অন্যতম এক সময়ের ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী রীতার নাম উঠে এসেছে মাদক ব্যবসার শীর্ষ তালিকায়। অনেকের মন্তব্য রীতাকে নিয়ে কোন মাতামাতি হলে তার পরিণাম কি করতে পারে তা তিনি ও তার বাহিনীর লোকজন খুব ভালো করেই জানে । তাই রীতা ও তার বাহিনীকে ঘিরে কেউ টু শব্দটিও করে না । দীর্ঘদিন পর এই রীতার অপরাধ সাম্রাজ্য নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ পেয়েছে। তা তদন্ত করে ব্যবস্থান নেয়ার দাবীও উঠেছে জোড়ালোভাবে। সেলিনা আক্তার রিতাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর শান্তিপ্রিয় বস্তির অনেকেই বলেছেন, “বজলু বাইচ্চা থাকাবস্থায়ই এই রীতা তার সাথে সকল অপকর্ম পরিচালনা করতো। মিছিল মিটিংয়ে ভাড়া লোক দিতো আবার মিটিংয়ে অংশ নেয়া লোকদের ৫শ কইরা টাকাও দিতো। এখনো কোন মিটিং মিছিল হইলে রীতা লোক ভাড়া করে আগের ডন বজলুর মতোই। যার কারণে অসাহায় দরিদ্র বস্তিবাসী কেউ মুখ খুলতো না। বজলু মরনের পর এই রীতাই এখন নতুন ‘ডন’।
সেলিনা আক্তার রিতা, ছিলেন ভাঙারি ব্যবসায়ী। অতঃপর মাদকের কারবার কপাল খুলে তার। চনপাড়া বস্তির ভোটে হয়েছেন ইউপি মেম্বার। তার দাপটে বাঘে মোষে জল খায় একঘাটে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চনপাড়া ইউনিয়ন পূণর্বাসন কেন্দ্র। হালের পরিচয় চনপাড়া বস্তি নামে। যেখানে অস্ত্রের মহড়া চলে নিত্যদিন। রাতের আলো আঁধারে চলে গোলাগুলি। শক্তি জানান দিতে মাঝেমধ্যে খুনও হয়। এসবই হচ্ছে মাদকের টাকার ভাগ বাটোয়ার নিয়ে। কখনও মাদক আনা নেয়ার লোক ভাগাতেও চলে হট্টগোল।
এলাকাবাসীরা জানান, তারা গণ্ডগোল করে আর নিরীহ মানুষের বাড়িঘর লুট করে নিয়ে যায়। কোনো বিচার পাওয়া যায়না।
চনপাড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান সেলিনা আক্তার রিতা রয়েছেন মাদক ব্যবসার নেপথ্যে। এক সময় ভাঙারি দোকান চালালেও পরে চনপাড়া বস্তিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের শিশু শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। ক্রমশ রীতা জড়িয়ে যান মাদক কারবারে।
স্থানীয়রা জানান, ইয়াসমিন, কিশোরগ্যাং লিডার রাব্বি, জয়নালকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক তাহলে আমাদের এলাকায় গণ্ডগোল থাকবেনা।
জয়নাল ও ইয়াসমিন নামের দুই সহযোগীও আছেন রিতার সঙ্গে। তবে মাদক ব্যবসার অভিযোগ অস্বীকার করেন ইউপি মেম্বার রিতা।
সেলিনা আক্তার রিতা বলেন, “এগুলো যারা বলে মিথ্যা-বানোয়াট গল্প ছাড়া আর কিছুই নয়। সবচেয়ে বড় কথা, এখানে রাজত্বের কিছু নাই।”
পুলিশ আর র্যাব বলছে, অভিযান থেমে নেই। তারপরও থামানো যাচ্ছে না চনপাড়ার বিশৃঙ্খলা।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তাফা রাসেল বলেন, “জয়নাল-ইয়াসমিন এরা আছে। শাওন, শমসের, রাব্বি আছে দ্বিতীয় সারিতে।”
র্যাব ১ অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ মোসতাক আহমদ বলেন, “মাদকের প্রসারতা নির্মূল করার জন্য সেখানে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মাদককারবারে অভিযুক্তরা বলছেন, তারা যা করেন তা নিতান্তই এলাকার স্বার্থে। কিছু মানুষ হিংসা করে তাদের বিরুদ্ধে বলে বেড়ায়।
ইয়াসমিনের সহযোগী জয়নাল বলেন, “সাধারণ জনগণকে পাশে নিয়ে চনপাড়াকে একটি মাদকমুক্ত এলাকা হিসাবে গড়ে তোলা হবে।”
চনপাড়া বস্তির অভিযান নিয়ে সবসময়ই চোর-পুলিশ খেলা হচ্ছে- এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। তাদের ধারণা, কার্যকরি পদক্ষেপ না নিলে কখনও দূর হবে না মাদককারবারি আর সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম।









Discussion about this post