মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় একটি জঙ্গি আস্তানায় ‘অপারেশন হিলসাইড’ অভিযান শেষ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টার অভিযানে দু’টি বাড়ি থেকে নারী-পুরুষসহ ১০ জঙ্গি ও তাদের সাথে থাকা তিন শিশুকে আটক করা হয়েছে।
উদ্ধার করা হয়েছে তিন কেজি বিস্ফোরক, হাই এক্সক্লোসিভ ৫০টি ডেটোনেটর, নগদ তিন লাখ ৬১ হাজার টাকা, জঙ্গি প্রশিক্ষণ সামগ্রী ও জিহাদী বই।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে উপজেলার কর্মদা ইউনিয়নের পূর্ব টাট্টি উলি গ্রামের জুগিটিলায় বাইশালী এলাকায় একটি টিলার ওপর নতুন স্থাপিত বাড়িটি ঘিরে রাখে আইশৃঙ্খলা বাহিনী।
কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) একটি চৌকস দলের সাথে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ অস্ত্র ও কৌশল ইউনিট সোয়াট এবং জেলা পুলিশের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে। তাদের সাথে ছিল বোম ডিসপোজাল ইউনিট।
অভিযান শেষে সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান জানান, আমাদের কাছে তথ্য ছিল নতুন একটি উগ্রবাদী সংগঠন ব্যাপক সংখ্যক লোকদের উগ্রবাদের দীক্ষা দিয়েছে। আমরা জানতে পারি, মৌলভীবাজারের যেকোনো একটি পাহাড়ে তারা তাদের আস্তানাটি তৈরি করেছে। গতকাল আমরা চূড়ান্ত তথ্য পাই। ঢাকায় আমরা একজনকে গ্রেপ্তার করেছি, যিনি এই জঙ্গি আস্তানা থেকে তার পরিবারকে আনার জন্য গিয়েছিলেন।

সিটিটিসি প্রধান আরও বলেন, বিনা বল প্রয়োগে আমরা তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। তাদের হেফাজতে নেওয়ার পরে আমরা জঙ্গি আস্তানায় ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৩ কেজি বিস্ফোরক ও ৫০টির মতো ডেটোনেটর উদ্ধার করি। যা দিয়ে গ্রেনেডসহ হাই এক্সপ্লোসিভ তৈরি করা হয়। জঙ্গি আস্তানা থেকে নারী-পুরুষ মিলিয়ে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজন পুরুষ ও ছয়জন নারী। তাদের সাথে তিন শিশুও ছিল। এছাড়া তিন লাখ ৬১ হাজার টাকা, প্রশিক্ষণ সামগ্রী, কমব্যাট বুট, বক্সিন ব্যাগ এবং কয়েক বস্তা জিহাদি বই জব্দ করা হয়েছে।
আটকরা হলেন, সাতক্ষীরা সদরের দক্ষিণ নলতা গ্রামের শরীফুল ইসলাম (৪০), কিশোরগঞ্জের ইটনার কানলা এলাকার হাফিজ উল্লাহ (২৫), নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার রসুলপুর গ্রামের খায়রুল ইসলাম (২২), সিরাজগঞ্জের কাজীপুর থানার মাইজবাড়ী গ্রামের রাফিউল ইসলাম (২২), পাবনার আটঘরিয়া থানার শ্রীপুর গ্রামের শাপলা বেগম (২২), নাটোর সদরের চাঁদপুর গ্রামের মাইশা ইসলাম (২০), বগুড়ার শরিয়াকান্দি থানার নিজবলাই গ্রামের মোছা. সানজিদা খাতুন (১৮), সাতক্ষীরার তালা থানার দক্ষিণ নলতা গ্রামের আমিনা বেগম (৪০) এবং তার মেয়ে মোছা. হাবিবা বিনতে শফিকুল (২০)।
এছাড়া ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীকে আটক করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে থাকা শিশুদের বয়স ১২ মাস, ১৮ মাস ও ছয় বছর।

এলাকাবাসী জানান, তারা মাস দেড়েক আগে ওই এলাকায় জায়গা কিনে বাড়ি বানায়। সেখানে প্রায় সময় বেশ কিছু লোকের আনাগোনা থাকতো। তবে তারা কি কাজ করতেন সেটি স্পষ্ট করে বলতে পারেননি এলাকাবাসী। তবে তারা জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের কথাবার্তা চলাফেরা সন্দেহজনক ছিল।
আটকদের ঢাকায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।









Discussion about this post