রূপগঞ্জে অজোপাড়াগাঁ হিসেবে পরিচিত কাঞ্চন এলাকার কেরাবো দেওয়ান বাড়ী জামে মসজিদে রাতের নামাজের পর গোপন বৈঠকে নাশকতা ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার অভিযোগে গ্রেফতার ১৩ জামায়াত নেতার দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলা হলে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. বদিউজ্জামান আসামীদের ২ (দুই) দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
একই সঙ্গে এই মামলায় গ্রেফতার দুই আইনজীবীর রিমান্ড ও জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়।
রিমান্ডপ্রাপ্তরা হলেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মমিনুল হক (৭০), রূপগঞ্জ থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হক (৫৩), রূপগঞ্জ উপজেলা কমিটির সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক (৫৩), রূপগঞ্জ ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি খায়রুল ইসলাম (৪২), ভোলাব ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সদস্য দেলোয়ার হোসেন (৫৩), দাউদপুর ইউনিয়ন কমিটির সদস্য মো. রকিবুজ্জামান (৫১), জামায়াতে ইসলামীর সদস্য জাকির হোসেন (৪২), মো. শহীদুল্লাহ (৩২), হাজী মো. শহীদুল্লাহ (৬৫), মজিবুর রহমান (৫৭), আব্দুস সাত্তার (৬৫), নূরে আলম (৫১) ও শহীদুল্লাহ (৪৮)।
রূপগঞ্জ থানা কমিটির আমির অ্যাডভোকেট ইসরাফিল হোসেন (৪১) এবং অ্যাডভোকেট ওসমান খানের (২৮) রিমান্ড ও জামিন নামঞ্জুর করা হয়।
কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, গোপন বৈঠকে নাশকতা ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার অভিযোগে গ্রেফতার ১৫ জনের মধ্যে ১৩ জনের দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। আর দুইজন আইনজীবীর রিমান্ড ও জামিন নামঞ্জুর করা হয়েছে।
এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে রূপগঞ্জের কাঞ্চনের দেওয়ান-বাড়ি জামে মসজিদ এলাকা থেকে তাদের আটক করে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
মামলার এজাহারে পুলিশ জানায়, রূপগঞ্জের কাঞ্চন এলাকার দেওয়ান বাড়ি জামে মসজিদের সামনের একটি খালি জায়গা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গোপন ষড়যন্ত্র করে সেখানে নাশকতার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়। ওই সময় পুলিশ চারটি মোটর সাইকেল ও ২০টি অবিস্ফোরিত ককটেল, ইসলামী বই জব্দ করা হয়।
ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জ পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) ছাইলাউ মারমা বলেন, রূপগঞ্জের কাঞ্চনের দেওয়ানবাড়ি জামে মসজিদে গোপন বৈঠকে নাশকতা ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, এমন খবরে অভিযান চালায় পুলিশ। পরে জামায়াতের জেলা কমিটির আমিরসহ ১৫ জনকে আটক করা হয়।
কাঞ্চন দেওয়ান বাড়ী জামে মসজিদের একাধিক মুসুল্লী নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে: আরো জানায়, রূপগঞ্জের কাঞ্চন এলাকার কেরাবো দেওয়ান বাড়ি জামে মসজিদের ঈমাম হালিম মোল্লা নানাভাবে নাশকতা ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডের চালিয়ে আসছিলো বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের শাসনামল ২০০৩ সাল থেকেই । এরপর আর এই হালিম মোল্লাকে দমিয়ে রাখা যায় নাই।
বিগত সময় থেকে শুরু করে বর্তমান প্রেক্ষাপটের প্রতিনিয়ত: প্রকাশ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ও তার পরিবারের সকলকে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় খুনিদের জাতীয় বীর উল্লেখ করে প্রতি জুম্মা নামাজের সময় উস্কানিমূলক রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে পুরো এলাকাবাসীদের নানাভাবে হুমকিও প্রদান করেন ।
বিএনপি অধ্যুষিত কেরাবো এলাকায় ঈমাম হালিম মোল্লার এমন কর্মকাণ্ডের কেউ টু শব্দ করতে সাহস করতো না। অত্যান্ত ধূর্ত এই ঈমাম হালিম মোল্লাকে আটক করা হলেও নিজেকে মসজিদের ঈমাম পরিচয় দিয়ে এবারো গ্রেফতার এড়াতে সক্ষম হন।
নির্ভরশীল সূত্র আরো জানায়, এই কেরাবো দেওয়ান বাড়ি জামে মসজিদের ঈমাম হালিম মোল্লার জঙ্গিদের মূল হোতা হলেও এবার কি করে গ্রেফতার এড়ারো তা অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেন । ঈমাম হালিম মোল্লার নের্তৃত্বে জোট সরকারের শাসনামলে কুখ্যাত সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী আতাউর রহমান সানী এই দেওয়ান বাড়ি এলাকায় জংগীদের ট্রেনিং করা হতো বলেও জানায় নির্ভরশীল এই সূত্রটি ।









Discussion about this post