বড় ভাই ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফরিদ আহম্মেদ লিটন। ভাগ্নে বাবু জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি।
ভাই-ভাগ্নের ক্ষমতার দাপটে মাসুম ওরফে বন্দুক মাসুম পুরো ফতুল্লায় হয়ে উঠেন বেপরোয়া। মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে ভূমি দস্যুতা, সবকিছুতেই জড়িয়ে রয়েছে তার নাম। এলাকার বিস্তার করেছেন আধিপাত্য। বিশাল বাহিনী গড়ে সাধারণ মানুষের উপর ছড়ি ঘুরাচ্ছেন এই বন্দুক মাসুম। কিন্তু সরকার দলীয় নেতার ভাই হওয়ায় কেউ তার অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার টু শব্দ করতে সাহস পর্যন্ত পায় না।
থানায় মামলা হলেও থাকেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে যাচ্ছেন সব ধরনের অপকর্ম অব্যাহত রেখেছে ।
ফতুল্লার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী, একাধিক মামলার আসামি বন্দুক মাসুমের অত্যাচারের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে এই বাহিনীর সন্ত্রাসীরা মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে আশিকুর রহমান বিশাল নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে পিস্তল, দেশীয় অস্ত্র ও বাঁশ নিয়ে হামলা চালায়। যার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ঘটনার ৬ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত এই সন্ত্রাসী বাহিনীর কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।
ফলে সাধারণ মানুষের মনে ‘বন্দুক মাসুম আতংক’ বাসা বেঁধেছে।
সূত্রমতে, মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেয়াকে কেন্দ্র করে ওই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। এতে ফরিদ আহমেদ লিটনের ভাই বন্দুক মাসুম ও তার ভাগিনা বাবু অন্তত ৮ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করেন। এতে কেউ গুলিবিদ্ধ না হলেও দু’জন হামলাকারীদের মারধরে আহত হয়েছেন। যদিও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, পূর্ব শত্রুতার জেরে হামলা চালানো হয়েছে। এবং ৮ রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয়েছে। হামলাকারীরা দুটি মোটর সাইকেলও ভাংচুর করা হয় মাসুমের নেতৃত্বে।
সূত্রটি আরও জানায়, থানায় অভিযোগ হলেও বিষয়টি মীমাংসা করতে তোড়জোড় শুরু করেছে একটি মহল। ওই মহলটি ভুক্তভোগী আশিকুর রহমান বিশাল কে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে চাপ প্রয়োগ করছে।
জানা গেছে, বন্দুক মাসুম বর্তমানে ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পদের জন্য দৌঁড়ঝাঁপ করছেন। এক সময়ে ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুর এলাকায় মাদকের ডন হিসেবে কু-খ্যাতি পেয়েছিলেন তিনি। বর্তমানেও বন্দুক মাসুমের নিয়ন্ত্রণে মাদক ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে, ভাগিনা বাবু ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই ত্রাস সৃষ্টি করে চলেছেন। পান থেকে চুন খসলেই তার অনুগতরা অস্ত্র হাতে মহড়া দেয়া এবং প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালানোর মত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে থাকে। ভাগিনা বাবু এখন স্থানীয়দের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে ন উঠেছে। কথিত আছে, আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ আহমেদ লিটনের শেল্টারেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তার ভাই বন্দুক মাসুম ও ভাগিনা বাবু।
এদিকে, ফরিদ আহমেদ লিটনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার বিষয়ে অবগত নন বলে জানান গণমাধ্যম কে।
অভিযোগ রয়েছে, ফরিদ আহমেদ লিটনের প্রভাব কাজে এলাকায় প্রায় দুই দশক ধরে তার ভাই বন্দুক মাসুম মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছে। ইতিপূর্বে ডিবি ও পুলিশ মাত্র ২ বার বন্দুক মাসুমের মাদকের আস্তানায় অভিযান চালায়। এতে গাঁজা উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ২০১৩ সালের ওই ঘটনায় মামলা হয়েছিল। মামলা নম্বর (৪২) ৫-২০১৩। তবে তদবীরের মাধ্যমে বন্দুক মাসুমকে বাদ কি দিয়ে পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উদ্ধার হওয়া গাঁজা পরিত্যক্ত দেখানো হ হয়েছিল।
এদিকে র্যাব-১১ বন্দুক মাসুমের বাসায় অভিযান চালিয়ে ফেনসিডিল ও ইয়াবা সহ তাকে আটক করে মামলা দেয়। যার নম্বর (৭৭) ১১-২০১৩ । এ মামলায় এক সপ্তাহ কারাভোগ করে বন্দুক মাসুম জামিনে বের হয়ে আবারো মাদক ব্যবসায় সক্রিয় হয়ে উঠে বলে জানা গেছে।
সুত্রে আরো জানা গেছে, বন্দুক মাসুম মাদক পাচার করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের একটি টিম দাপা ইদ্রাকপুর এলাকায় অভিযান চালিয়েছিল। এসময় বন্দুক মাসুম কৌশলে পালিয়ে গেলেও ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চারশত বোতল ফেনসিডিল সহ তার সহযোগী জলিলকে আটক করে। এঘটনার জলিল বন্দক মাসুমকে আসামী করে ডিবি পুলিশ মামলা দায়ের করেন।









Discussion about this post