নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনকালে চরম দূর্ণীতি, দায়িত্ব অবহেলা আর ঘুষের টাকা পেলেই দিনকে রাত, আর রাত কে দিন বানাতে মহাপারদর্শী ছিলেন আনিচুর রহমান মোল্লা । নগরীর চিহ্নিত অপরাধী সেই কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন বিটুকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে নগরীর বিয়াইখ্যাত একজন প্রতারকের সাথ নিয়ে ডিনার করার দৃশ্য দেখে সকলের মুখে ছিলো ছি ছি উচ্চারণ । এরপরেও দীর্ঘদিন নানা দপ্তরেকে ম্যানেজ করে ২০২২ সালের ২১ মে থেকে ১ নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত বহাল তবিয়্যতে ছিলেন এই বিতর্কিত কর্মকর্তা আনিচুর ।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করেই তার ঘনিষ্ট কয়েকজন বন্ধু (ব্যাচম্যাট) দারোগাদের এই থানায় পোষ্টিং করিয়ে মাসোয়ারার রামরাজত্ব চালায় আনিচুর রহমান মোল্লা। প্রতিদিন ও রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা যেন ছিলো বিচার সালিসীর কেন্দ্রস্থল ও টর্চার সেল। জিমখানা বস্তি, র্যালী বাগান বস্তি, সুপার কলোনী বস্তি, সৈয়দপুর, নিতাইগঞ্জ, পাইকপাড়া, দেওভোগ , বাবুরাইল, কলেজ রোড, গলাচিপার অসংখ্য মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোযারা আদায় করতেন আনিচুর রহমানের কয়েকজন ক্যশিয়ারখ্যাত পুলিশ সদস্য। এছাড়া নগরীতে বিভিন্ন নিষিদ্ধ কল-কারখানা, সকল ধরণের ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে মাসোয়ার আদায়ের রামরাজত্ব চালিয়ে গেছে বছরজুড়ে।
একই সাথে পুরো নগরবাসীকে জিম্মি করে পুরো ফুটপাত দখলকারীদের কাছে যেন আরো পোক্তভাবে ইজারা দিয়ে প্রতি মাসে কম পক্ষে ২০ জন লাইনম্যানের (ফুটপাতের চাঁদাবাজ) কাছ থেকে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসোয়ারা আদায় করতো নিয়মিতভাবেই। নগরীর ফুটপাতের চাঁদাবাজদের হোতা রহিম মুন্সী, হত্যা মামলার আসামী আসাদ, সোহেলসহ প্রায় ২০ জন লাইন ম্যান একেবারেই প্রকাশ্যে ফুটপাতের প্রতিটি দোকান থেকে প্রতিদিন চাঁদাবাজির চিত্র সকলের চোখে পরলেও ওসি আনিচুর রহমান মোল্লার চোখে পরতো না কোন সময়েই। অনৈতিক লেদেনের কারণে থানার ওসির টেবিলে বসে রহিম মুন্সী, আসাদ, সোহেলসহ অন্যান্য চাঁদাবাজদের নিয়ে একসাথে রঙ চা পান করার দৃশ্য দেখে অনেকেই বলেছেন কতটা নির্লজ্জ হতে পারেন আনিচুর হচ্ছেন তার জ্বলন্ত উদহারণ ।
পুলিশের কন্সষ্টেবল পদে যোগদান করে নানাভাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মভূমি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার নাম ব্যবহার করে এই নগরীতে তেলচোর, সূতা চোর, গম চোর, ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী, নগরীর প্রতিটি মাদক আস্তানা থেকেও সমানতালে মাসোয়ারা গ্রহণ করতেন এই ওসি ।
ঘুষ দূর্ণীতিতে হাতপাকা ওসি আনিচুর রহমান মোল্লার লোভের মাত্রা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছিলো যে কারণে তিনি বিএনপি আর আওয়ামীলীগ কিংবা জামায়াত শিবির চিনতেন না । ঘুষ যার কাছে থেকে পেতেন তার পক্ষেই কাজ করতেন মহাপটু এই দূর্ণীতিবাজ।
সেই লোভের কারেণ মোটা অংকের টাকায় এবার বিএনপির ডাকা হরতালে নাশকতার মামলায় আওয়ামীলীগের কট্টর সমর্থক আসাদুজ্জামান (৫০) কে ২১ নং আসামী করে মামলা দায়ের করেছে আনিচুর রহমান । নগরীর খানপুর এলাকার জামায়াত শিবির নেতাদের কাছে থেকে মোটা অংকের টাকায় এমন মামলা দায়ের করেছে বলে জোড় গুঞ্জর উঠেছে নগর জুড়ে।
সারাদিন রাত সদ্য বিদায়ী নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ওসির আনিচুর রহমান মোল্লার অনৈতিক লেনদেনে (কন্টেইনার, ট্রাকসহ পন্যবাহী পরিবহণ থেকে নগ্ন পন্থায় চাঁদাবাজির মতো ঘৃন্য এমন কর্মকান্ডে অতিষ্ট নগরবাসী এবার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে।









Discussion about this post