নানা অপকর্মের হোতা অসংখ্য মামলার আসামী নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সমালোচিত সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ নিসেবে সর্বজন স্বীকৃত অপরাধী দূর্নীতি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী সেই কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি শেষ পর্যন্ত কারাগারে যেতে হয়েছে।
সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে আদালত কর্তৃক ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীর নাকের ঢগায় এক প্রকার সকলকে চ্যালেজ্ঞ ছুড়ে দিয়ে দাবড়িয়ে বেড়ােচ্ছিলো এই মতি ।
সকল সমালোচনার পর জেলার একজন দূর্ণীতিবাজ শীর্ষ কর্মকর্তার পরামর্শক্রমে আদালতে আত্মসমর্পন করলে দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ও মানিলন্ডারিং মামলায় সোমবার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি মতিউর রহমান মতিকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে জেলায় কর্মরত একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়ে নগরীর সর্বত্র প্রকাশ্যে চষে বেড়াচ্ছিলো এই মতি। এই মতি তার বিশাল ক্ষমতা এমনটা বুঝাতে জেলা শীর্ষ পুলিশসহ কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদকে কোটি কোটি টাকা দিয়ে অপকর্ম চালিয়ে আসছিলো মতি ও তার বাহিনী । আর প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছিলো পুলিশ। এমন প্রশ্ন বিদ্ধ হওয়ার কারণে এবং জেলা পুলিশের সম্মান আর যাতে ক্ষুন্ন না হয় সেই জন্য ওই কর্তার পরামর্শ অনুযায়ী আদালতে আত্মসমর্পন করে এই মতি ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মতিউর রহমান মতি মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত, ঢাকায় জামিনের জন্য আবেদন করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামান কাউন্সিলর মতির আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান মতি। ছবি : সংগ্রহিত
দুদককের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন। ইতিপূর্বে আদালত কাউন্সিলর মতির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদুকের নারায়ণগঞ্জ কার্যালেয়ের উপ-পরিচালক মঈনুল হাসান রৌশনী।
উল্লেখ্য, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কাউন্সিলর মতিউর রহমান (মতি) ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয় ১-এর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
আসামি কাউন্সিলর মো. মতিউর রহমান মতির বিরুদ্ধে ৬ কোটি ১ লাখ ৭২ হাজার ২৬৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনসহ ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৫ হাজার ৬৩৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাংকে ৮২ কোটি ৫১ লাখ ৪২৪ টাকা জমা করে তার থেকে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮৯ টাকা উত্তোলন করে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অবস্থান গোপন করার অভিযোগ আনা হয়।
অপর মামলার এজাহারে বলা হয়, কাউন্সিলর মতির স্ত্রী রোকেয়া রহমানের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৬১ লাখ ১৮ হাজার ৩৯৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ১ কোটি ৮৬ লাখ ৬৭ হাজার ৩৯৫ টাকা জমা করেন। এর পর সেখান থেকে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৮ টাকা উত্তোলন করে তা রূপান্তর, হস্তান্তর ও স্থানান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে।









Discussion about this post