জ্বালানী তেলবাহী ট্যাংকলরির ভিতরে আরেকটি চোরাই ট্যংকির চাবি খুলতে এবং ওই চোরাই ফার্নেস অয়েল (তেল) নামানোর পাশাশাশি ট্যাংকির ভিতরে পরিস্কার করতে গিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জে আবু সাঈদ (২২) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নিহতের বাবা বাবা নাজির হোসেন (৪৫) ও ছোট ভাই ফাহিম (১২)।
একেবারে অবৈধ পন্থায় কোন ধরণের নিরাপত্তা ছাড়াই এবং সকল ধরণের আইনশৃংখলা বাহিনীর নাকের ডগায় প্রতিনিয়তঃ এমন চোরাই ট্যাংকির জ্বালানী তেল অপসারণ করার ঘটনা ঘটলেও সকল আইনশৃংখলা বাহিনী ও বিশেষ পেশার নামধারী অপরাধী চক্র অবিরামভাবে মাসোয়ারা আদায় করায় এমন গুরুতর অপরাধের এমন বিষয়টি সকলের কাছে যেন বৈধতা পেয়েছে । যার কারণে এমন দূর্ঘটনার প্রাণ দিতে হয়েছে আবু সাঈদ (২২) নামের এই যুবকের । সামান্য কিছু টাকার আশায় প্রতিদিন শত শত দরিদ্র শ্রেণীর লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চোরাই ট্যাংকি থেকে জ্বালানী তেল অপসারণ করে যাচ্ছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর অসাধু কর্মকর্তাদের মাসোয়ারা আদায়ের কারণে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার চোরাই কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে অপরাধী চক্র ।
নাম প্রকাশ না করা অনুরোধে একজন জ্বালানী তেল ব্যবসায়ী বলেন, ‘আবু সাঈদের (২২) মৃত্যুর ঘটনায় এরই মধ্যে শকুনের মতো ভিড় করেছে আইনশৃংখলা বাহিনীর অসাধু চক্র। শকুন যেমন মরা গরুর গন্ধ পেয়ে ছুটে আসে তেমন এমন সাইদের মতো মৃত্যুর ঘটনায় ব্যবসায়ীদের হয়রানী করে এরই মধ্যে আইনশৃংখলা বাহিনীর অসাধু চক্র তাদের স্বার্থ হাসিল করতে নানা কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আর ট্যাংকলরির মালিক এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে তেলচোরদের গডফাদার আর অসাধু আইনশৃংখলা বাহিনীকে ম্যানেজ করতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে । একই সাথে হতাহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে আইনী ঝামালে এড়াতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) সকালে আদমজী এসও রোড এলাকার মেঘনা ডিপোতে এ ঘটনা ঘটে। আবু সাঈদ ওই এলাকার নাজির হোসেনের ছেলে। তিনি এসও রোড এলাকায় ইসমাঈলের তেলের গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে কাজ করতেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন ।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, রোববার রাতে ওই ট্যাংকলরির মালিক জাহাঙ্গীর তাদের গাড়ি থেকে অবশিষ্ট তেল সংগ্রহ করে গাড়িটি পরিষ্কার করে দিতে বলে। এজন্য প্রথমে ফাহিম গাড়িটির ভেতর নামে। পরে সে বের না হওয়ায় তাকে উদ্ধার করতে তার বাবা নাজির ট্যাংকলরির ভেতরে নামে। পরবর্তীতে তাদের দুজনেরই কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে নাজিরের বড় ছেলে আবু সাঈদও ট্যাংকলরির ভেতরে নামে। পরে এলাকাবাসী আহত অবস্থায় তাদের তিনজনকে উদ্ধার করে সুফিয়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। এসময় সাঈদের অবস্থার অবনতি হলে তাকে নারায়ণগঞ্জ খানপুর হাসপাতালে নিলে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন, ট্যাংকলরিটির ভেতর গ্যাসের চাপ থাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে নিহতের বাবা নাজির হোসেন সুস্থ রয়েছেন। আর ফাহিমের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
আবু সাঈদের মৃত্যু আর তার বাবা ও ছোট ভাই অসুস্থতার ঘটনায় এরই মধ্যে শকুনের দল (!) উড়তে শুরু করেছে । বিশেষ পেশার অনেকেই সুবিধা আদায়ের জন্য নানান নাটক মঞ্চায়নের অপচেষ্টা চালাচ্ছে । একইভাবে আইনশৃংখলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে সকলেই যেন হা করে চেয়ে আছে শকুনের মতো মরা গরুর মাংশ ছিড়ে কে কখন কার মুখে দিবে। আর কোন কোন তেলচোরদের গডফাদার নাকি এরই মধ্যে ডিআইজি পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে এই ঘটনা ধামাচাপা দিবেন এমন গুঞ্জন সিদ্ধিরগঞ্জে চাউর রয়েছে ।









Discussion about this post