মঙ্গলবার ২৬ ডিসেম্বর দুপুরে মুড়াপাড়া ইউপির গঙ্গানগর এলাকায় প্রচারণার সময় সাংবাদিকদের রকারের বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) বলেছিলেন, ‘আমার প্রতিপক্ষরা ভূমিদস্যুদের পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের অর্থে নির্বাচনে নেমেছে। ভূমিদস্যুরা ওই প্রার্থীদের পেছনে কোটি কোটি টাকা খরচ করছেন। তারা একজন পুতুল এমপি বানিয়ে রূপগঞ্জকে দখল করতে চায়।’
গোলাম দস্তগীর গাজীর এমন মন্তব্যের একদিনের মধ্যে রূপগঞ্জের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়ার নির্বাচনী গণসংযোগে এই প্রার্থীর ঘনিষ্ঠ এক অনুসারীকে প্রকাশ্যে টাকা বিলি করতে দেখা গেছে। যা ব্যাপকভাবে সমালোচনার ঝড় উঠেছে ।
টাকা বিলি করা ওই ব্যক্তির নাম নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর ওরফে জাহাঙ্গীর মাস্টার। তিনি রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
গোলাম দস্তগীরের এই বক্তব্যের একদিন পরই আসনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়ার নির্বাচনী গণসংযোগে টাকা ছড়ানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, শাহজাহান ভূঁইয়ার পক্ষে নির্বাচনী গণসংযোগ করছেন ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম। তাঁর পেছনে কর্মী-সমর্থকরা শাহজাহানের নির্বাচনী প্রতীক ‘কেটলি’র পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন। এ সময় নুরুল ইসলামকে টাকা বিলি করতেও দেখা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২১ ডিসেম্বর সকালে দাউদপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ‘কেটলি’ প্রতীকের প্রচারণায় যান ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর। ওই সময় প্রচারণার ভিডিও ধারণ করে তা নিজের ফেসবুক একাউন্টে পোস্ট করেন শাহজাহান ভূঁইয়ার অনুসারী ছাত্রলীগের নেতা নাসিম মোল্লা। ওই ভিডিওতে নুরুল ইসলামকে প্রকাশ্যে টাকা বিলি করতে দেখা যায়।
এই বিষয়ে জানতে দাউদপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীরের মুঠোফোনের নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
এই বিষয়ে নৌকার প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘ভূমিদস্যুরা যে আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থীদের বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে প্রকাশ্যে টাকা বিলির ভিডিও তারই প্রমাণ। এই টাকা বিলি করার মধ্য দিয়ে ওই ভূমিদস্যুরা সুকৌশলে নির্বাচন ও নির্বাচন নিয়ে সরকার ও প্রশাসনের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। প্রধানমন্ত্রী রূপগঞ্জবাসীর কল্যাণে আবারও কাজ করার জন্য আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমার বিশ্বাস, রূপগঞ্জবাসী আগেও এই ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে যেমন ছিলেন, এবারও তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। একইসাথে প্রশাসনকে বলবো, যারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তৎপর তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’
তবে ‘কেটলি’ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়া বলেন, ‘যে টাকা বিলি করছে, সে আমার কতটুকু কাছের লোক, সে আমার নির্বাচন করে কিনা সেইটা দেখার ব্যাপার আছে। ওই ব্যক্তি আমাকে বিতর্কিত করার জন্য এমনটা করেছেন কিনা সেটাও একটি বিষয়। কারণ টাকা বিলিয়ে নির্বাচন আমি করি না।’
এমন টাকা প্রকাশ্যে বিলির ভিডিও চিত্র দেখে রূপগঞ্জের অনেকেই বলেন, “এখন তো দেখা যাচ্ছে গাজীর মন্তব্য ই সত্যি হলো । বিগত সংসদ নির্বাচনে রূপগঞ্জের জমি দখল করতে আন্ডা রফিক কে দিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের ভূমিদস্যু বাপ বেটা গোলাম দস্তগীর গাজী কে আওয়ামী লীগের নমিনেশন না পেতে এমন কোন অপচেষ্টা নাই যা তারা করে নাই । গাজীকে হটাতে পারলে একাই রূপগঞ্জের সকল ভূমি যে ভাবে পারে তাদের ইচ্ছে মতো দখল করে রাম রাজত্ব চালাতে পারবে এমন চিন্তা থেকেই আন্ডা রফিক কে দিয়ে নানা দৌড়ঝাপ করিয়েছে । এবার আন্ডা রফিকের সাথে বিরোধীতার সুযোগ নিয়ে একদিকে নারায়ণগঞ্জে একটি চিহ্নিত একটি চক্র তৈমূর আলম কে দিয়ে নির্বাচনের মাঠে নামিয়েছেন । অপর দিকে বসুন্ধরা গ্রুপ ও নারায়ণগঞ্জের ওই চক্র শাহজাহান চেয়ারম্যান কে তার চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করিয়ে অবৈধ ভূমি,দস্যূতার অর্থ দিয়ে নির্বাচনী সহায়তা করেই যাচ্ছে। তৈমূর আলম খন্দকারকে ওই চিহ্নিত চক্র হাত্তির (বিশাল বিশাল) মতো প্রলোভন দেখিয়ে প্রাথমিকভাবে কিছু অর্থ দিয়ে নির্বাচনী মাঠে ছেড়ে দিয়েছে । নেপত্যে সকল কলকাঠি নাড়ছেন ভূমিদস্যূ আনভীর সোবহান ও তার বাবা শাহ আলম। মোটা মাথার এই তৈমূর ই আগামীতে কোন এক সময় নিজেই বলবেন কোথায়- কখন – কি করে – কত টাকা দিয়ে তাকে নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছে কে এবং কারা।“









Discussion about this post