পহেলা মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুন লেগে ৪৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় পুরো দেশে শোকের ছায়া নেমে আসে । এ ঘটনায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন আরো ১২ জন। ৭তলা বিশিষ্ট ওই ভবনের সব কটি তলায়ই রেস্তোরাঁ ছিল। এমন মর্মান্তিক দূর্ঘটনার পর তোলপাড়ের ঝড় বইছে সর্বত্র। যাদের এই অবহেলার জন্য এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর মিছিল দেখতে হয়েছে সকলের, সেই সরকারী অর্থায়নে লালিত পালিত উচ্ছিষ্ঠভোগী দূর্ণীতিপরায়ণ কর্মকর্তা কর্মচারীরা এখন নিজেদের দায় এড়াতে উঠেপড়ে লেগেছেন কড়িৎকর্ম বাধ্যগত প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে। কাজ দেখতে ব্যস্ত সকলেই। এমন ঘটনার ছোয়াও লেগেছে নারায়ণগঞ্জে ।
নারায়ণগঞ্জে রোববার (৩ মার্চ) জেলা প্রশাসন, নাসিক ও অন্যান্য আইনশৃংখলা বাহিনীর কড়িৎকর্মা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা কর্মচারীদের দৌড়ঝাপ দেখে নগরীর অনেকেই প্রশ্ন করেছেন এই টাইম বোমা কি আজ ই দেখা গেছে নাকি প্রকাশ্যে এমন টাইম বোমা রেখে অসাধু চক্র সকল সংস্থাকে নিয়মিত মাসোয়ারা দিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছিলো ? তাহলে এতোদিন সকল সংস্থা কি করেছে ? প্রতিটি রেস্তোরাঁ থেকে (ফাও) ফ্রি খাওয়া ওই কর্তারা এখন কোথায় ?
স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেছেন, ঢাকার অনেক বাণিজ্যিক ভবনে যেভাবে বিভিন্ন তলায় রেস্তোরাঁ তৈরি করা হয়েছে, তাতে মূলত ভবনগুলো ‘টাইম বোমা’য় পরিণত হয়েছে। যেন কখন এই বোমা বিস্ফোরিত হবে, সেই অপেক্ষায় আছেন সবাই।
শুক্রবার সকালে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বেইলি রোডের বহুতল ভবন গ্রিন কোজি কটেজ ঘুরে দেখে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় এ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনাকে অবহেলাজনিত ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বলে দাবি করেন তিনি।
স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, যে কার্যক্রম চালানো হবে, সে অনুযায়ী ভবনের নির্মাণ-কাঠামো ও নকশা করতে হয়। ইচ্ছা করলেই বাণিজ্যিক বা আবাসিক ভবনে রেস্তোরাঁ করার কোনো সুযোগ নেই। রেস্তোরাঁর জন্য যে ধরনের রান্নাঘর দরকার হয়, তা সাধারণ বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য তৈরি করা ভবনে থাকে না। রেস্তোরাঁর রান্নাঘরের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার দরকার হয়।
বেইলী রোড়ে এমন ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জ শহরের বহুতল ভবনে অবস্থিত খাবারের দোকানে অভিযান চালিয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও ফায়ার সার্ভিস। রোববার (৩ মার্চ) বিকেলে শহরের চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকার বেশ কয়েকটি বহুতল ভবনে এ যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে ভবনগুলোর অগ্নি নির্বাপণ, জরুরি বহির্গমন ব্যবস্থা, খাবারের মান পরীক্ষা করে দেখা হয়। এসময় দোকান মালিকদের বিভিন্ন পরামর্শ ও সতর্ক করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শেখ মোস্তফা আলী বলেন, আমরা ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ টিম এ অভিযান পরিচালনা করছি। আমরা বলেছি যেন দ্রুত অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র ব্যবস্থা করা হয় এবং ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এখানে আছে তাদের সাথে সমন্বয় করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এটি ব্যবস্থা করতে হবে। অনেক রেস্টুরেন্টে রান্না ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা বলেছি যেন নিচে এবং নিরাপদ দূরত্বে গ্যাস সিলিন্ডার রেখে ব্যবহার করা হয় এবং এ ব্যাপারে আমরা জোর দিয়েছি। কয়েকটি ভবনে জরুরি বহির্গমন ব্যবস্থা নেই। সেটিও দ্রুত কীভাবে করা যায়, দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা খাবারের মান ও বিভিন্ন দিক পর্যবেক্ষণ করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়েও সতর্ক করেছি।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক ফখরুদ্দিন বলেন, আমরা ঢাকার ঘটনার পর উদ্বিগ্ন। নাসিকের সহায়তায় আমরা অভিযান চালিয়েছি। যেসব সমস্যা আছে, সেগুলো যেন দ্রুত সমন্বয় করে সমাধান করে নেওয়া হয় সেজন্য আমরা সতর্ক করে সময় দিয়েছি।









Discussion about this post