রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল এলাকায় বিসমিল্লাহ পাইকারি কাঁচাবাজার ও ফলের আড়ত দখলকে কেন্দ্র করে এবং উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন দেওয়ায় জাপান-বাংলাদেশ গ্রুপের চেয়ারম্যান ক্যাসিনো কান্ডের অন্যতম হোতা সেলিম প্রধানের বাড়িতে দফায় দফায় হামলা ও গুলি করার অভিযোগ উঠেছে।
শুকবার (২৪ এপ্রিল) এমন গুলি বর্ষনের পাশাপাশি পাইকারি কাঁচাবাজার ও ফলের আড়ত দখলে রাখতে জমির মালিক ক্যাসিনো কান্ডসহ নানা অপরাধের হোতা সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে পাইকারি কাঁচাবাজার ও জমির ভাড়াটিয়া মজিবুর রহমানসহ অনস্যান্য দখলদাররা সংবাদ সম্মেলন করে নানা অভিযোগ করে।
সংবাদ সম্মেলনে আড়তের পরিচালক আইয়ুব আলী, ব্যবস্থাপক মামুনুর রহমান, আড়তদার কবির হোসেন, আবু সাঈদ, আব্দুল মালেকসহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
পরবর্তীতে হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ছয় জন নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৪ মে ) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দফায় দফায় তার রূপগঞ্জ উপজেলার সাওঘাট এলাকার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন নিরাপত্তাকর্মী আক্তার হোসেন, ফরহাদ হোসেন, শফিকুল ইসলাম, শিপন হাওলাদার, রানা শেখ ও ফারুক হোসেন।
হামলা প্রসঙ্গে সেলিম প্রধান দাবি করেন, সকালে বালু হাবিবের (সদ্য নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব) নির্দেশে শতাধিক লোক দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। বাড়ির লোকজনকে মারধর করেছে। তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। তারা ঘোষণা দিয়ে আমাকে মেরে ফেলার জন্য এই হামলা করেছে। সদ্য অনুষ্ঠিত উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে বালু হাবিবের (হাবিবুর রহমান হাবিব) প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রানুর পক্ষে সমর্থন দেওয়ায় এই হামলা করা হয়েছে। এমপি সাহেবের ছেলে পাপ্পা গাজীর (গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা) নির্দেশে বালু হাবিব ও তার লোকজন এই হামলার সাহস পেয়েছে।
রাশিয়ান অ্যাম্বাসিতে অভিযোগ করবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার স্ত্রী ও সন্তানরা রাশিয়ার নাগরিক। আমি এই ঘটনায় রাশিয়ান অ্যাম্বাসিতে অভিযোগ করবো। এ অবস্থায় স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই আমি এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ করবো।
জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সেলিম প্রধানের রাশিয়ান স্ত্রী আনা প্রধান বলেন, আমি ও আমার সন্তানরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এই ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে রাশিয়ান অ্যাম্বাসিতে অভিযোগ করবো।
বিকালে হামলা প্রসঙ্গে সেলিম প্রধান দাবি করেন, আমাকে ও আমার পরিবারকে ওরা খুন করতে চায়। তাই এভাবে বারবার হামলা করছে। ৩০ রাউন্ডের অধিক গুলি ছুড়েছে। গুলির খোসা অনেক স্থানে পড়ে আছে। এই ঘটনার অনেক ভিডিও আমার কাছে আছে, যা প্রমাণ হিসেবে রেখে দিয়েছি।
এ বিষয়ে মন্তব্য নেওয়ার জন্য রূপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
রূপগঞ্জ থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, একটি আড়তের ব্যবসাকে কেন্দ্র করে সকালে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিকালে হামলার ঘটনা ও গুলি ছোড়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেখানে পুলিশ রয়েছে। তারা বিষয়টি দেখছে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ মে অনুষ্ঠিত রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু হোসেন ভূঞা রানুকে সমর্থন দিয়ে প্রকাশ্যে তার পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছিলেন সেলিম প্রধান। নির্বাচনে হাবিবুর রহমান হাবিব বিজয়ী হয়েছেন।
এদিকে একাধিক নির্ভরশীল সূত্র নিশ্চিত করে বলেন, “নৈরাজ্যের জনপথে পরিণত হয়েছে রূপগঞ্জে। চলছে দখল আর মহড়া। কে বেশী দখল আর ক্ষমতা দেখাতে পারবে তার প্রতিযোগিতা চলছে রূপগঞ্জে। জমির মালিক ক্যাসিনোকান্ডের সেলিম প্রধান উপজেলা নির্বাচানের আগে ও পরে নানা হুমকি ধমকিতে একদিকে গাজী পরিবারকে অর্থাৎ পাপ্পা গাজীকে চ্যালেজ্ঞ ছুড়ে দিয়ে নানা মন্তব্য করে আসছে। যার কারণে এবার সুযোগ মতো সদ্য বিজয়ী উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিবেব (বালু হাবিব) লোকজন উত্তেজিত হয়ে এমন কান্ড ঘটিয়েছে। এমন হামলায় পুরো এলাকায় এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে ।











Discussion about this post