দূর্ণীতি কোন অবস্থাতেই থামানো যাচ্ছে না। যে যেভাবে পারছে সে তার মতো করেই যেন দূর্ণীতিতে লাগামছাড়া ঘোড়ার মতো ছুটে চালাচ্ছে ।
আর আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা যেন ঠুঁটো জগন্নাথের মতো তাকিয়ে দেখে। এমন হাজারো দূর্ণীতিতে নারায়ণগঞ্জ তো কোন কথা ই নাই । এই নারায়ণগঞ্জে একজন কর্মকর্তা বদলী হয়ে পোষ্টিং নিতে গুণতে হয় কোটি টাকা । আর একজন সামান্য কনষ্টেবল এই নারায়ণগঞ্জে বদলী হয়ে আসতে প্রথমেই গুণতে হয় ৭০ হাজার। এরপর ধাপে ধাপে আরো খরচা করেই চাহিদা মতো স্থানে পোষ্টিং নিয়ে শুরু করে নানা অপকর্ম। পুলিশের একটি সংস্থা ছাড়াও সরকারী প্রতিটি সংস্থায় চলছে এমন তুগলঘি ঘৃন্য কর্মকান্ড ।
যা নারায়ণগঞ্জের শাসক শ্রেণীর কেউ দেখেন না এতো দূর্ণীতির ঘটনা। সড়ক ও জনপথের এমন এক সামান্য ঘটনা উঠে এসেছে গণমাধ্যমে। যা তোলপাড় উঠেছে । এখন দেখার বিষয় নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ আসলে অপকর্মের ব্যাপারে কি করে ?
অভিযোগ পাওয়া গেছে, সোনারগাঁয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) জমি দখল করে দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়ার। উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নের দড়িকান্দি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, দড়িকান্দি গ্রামের শাহজাহান মিয়া, মামুন মিয়া ও বাবু নামের তিন ব্যক্তি কয়েক মাস আগে ওই জমিতে দোকানঘর নির্মাণ করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, দড়িকান্দি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নিরাপদে রাস্তা পারাপারের জন্য পদচারী সেতু (ফুটওভারব্রিজ) নির্মাণ করে নারায়ণগঞ্জ সওজ। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পরপরই সেতুর পাশে পরিত্যক্ত জায়গায় আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ে ওই তিন ব্যক্তি ৮-১০টি দোকানঘর নির্মাণ করেন। প্রতিটি দোকান থেকে অগ্রিম ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। এসব দোকান থেকে প্রতি মাসে তাঁরা ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া তুলছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিজেদের আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দিলেও দলটিতে শাহজাহান, মামুন বা বাবুর কোনো পদ-পদবি নেই। তবু এই পরিচয়েই পুরো ইউনিয়নে প্রভাব দেখান তাঁরা।
গত সোমবার দড়িকান্দি এলাকায় দেখা যায়, সেতুর নিচের পূর্বাংশে সওজের জায়গায় টিনশেড দোকান করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা অগ্রিম ও ভাড়া দোকান নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মালামাল সাজিয়ে বসেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দড়িকান্দি এলাকার একাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, ‘সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গাতে শাহজাহানের নেতৃত্বে কয়েকজন দোকানঘর নির্মাণ করে ভাড়া খাচ্ছেন। তাঁরা একটু সরকারি জায়গা পেলেও সেটা দখল করে নেন। এসব দখলদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাই।’
জানতে চাইলে সওজের ওই জমির এক দোকানি কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা অগ্রিম টাকা দিয়ে দোকান নিয়েছি। সরকারি জায়গা কি না, আমার জানা নেই।’
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ সরকারি জায়গা দখল করে চাঁদাবাজি করলে এর দায়ভার আমরা নেব না।’
এ বিষয়ে শাহজাহান এবং মামুনের সঙ্গে কথা বলতে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁরা রিসিভ করেননি।
অভিযুক্ত বাবু মোবাইল ফোনে বলেন, স্ট্যান্ডের দোকানগুলো শাহজাহান মিয়া নির্মাণ করেছেন। বাবুর দাবি, দখলে থাকা এসব দোকানের আয় থেকে বাসস্ট্যান্ড মসজিদের খরচ ও ইমামের বেতন দেওয়া হয়। তবে তাঁরা এ জায়গা লিজ (ইজারা) নেননি বলেও জানান বাবু।
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মহসীন মিয়া বলেন, ‘মহাসড়কের ২০ কিলোমিটার এলাকায় সওজের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। আশা করি, দ্রুত এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।’
নারায়ণগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, সওজের জায়গায় গড়ে ওঠা এই অবৈধ স্থাপনা দ্রুত উচ্ছেদ করা হবে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, ‘দখলদাররা যত বড়ই শক্তিশালী হোক না কেন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সওজের পক্ষ থেকে উচ্ছেদে সহযোগিতার জন্য চিঠি পেয়েছি। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।’









Discussion about this post