আবারো সন্তানের বিচারের দাবীতে বাবা রফিউর রাব্বি বলেছেন, “তদন্ত শেষ হলেও সরকারের অনীহার কারণে গত ১১ বছরেও নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়নি ।
সোমবার (৮ জুলাই ) সন্ধ্যায় নগরের দেওভোগে শেখ রাসেল পার্কে ‘ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৩৬ মাস’ উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রফিউর রাব্বি অভিযোগ করে বলেন, সরকার ক্ষমতায় থাকার প্রয়োজনে আমলা, পুলিশসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনী ও প্রতিষ্ঠানকে অবাধে দুর্নীতি করার সুযোগ দিয়েছে। তাদের লাখ লাখ কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার করার সুযোগ করে দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। খাদ্যমূল্য লাগামহীনভাবে বেড়ে চললেও মানুষের প্রতি কোনো দায়বোধ সরকারের নেই। মানুষের দুঃখ–কান্নায় তাদের কর্ণপাত নেই।
নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত ‘মোমশিখা প্রজ্জ্বালন কর্মসূচি’তে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম। সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহার সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নিহত ত্বকীর বাবা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রথীন চক্রবর্তী, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, বাসদের জেলা সদস্যসচিব আবু নাঈম, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের শহর কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহানারা বেগম, সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহাসহ অন্যান্যদের উপস্থিতিতে রফিউর রাব্বি বলেন, সরকারের অনিচ্ছার কারণে ১১ বছরেও ত্বকী হত্যার তদন্ত শেষে র্যাবের তৈরি করে রাখা অভিযোগপত্রটি আদালতে পেশ করা হয়নি। সরকার ত্বকীর ঘাতকদের নিরাপত্তা দানের মধ্য দিয়ে দেশে সামাজিক ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন প্রতিষ্ঠা করেছে, নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশে মাফিয়াতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চার সেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছেন। অচিরেই অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করার কথা বলে র্যাব। কিন্তু সে অভিযোগপত্র আজও আদালতে পেশ করা হয়নি।









Discussion about this post