২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের আগে থেকেই দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ফের নারায়ণগঞ্জে ফিরে এসেই ওসমান পরিবারের হাতে বন্দী হয়ে পরে জেলাবাসী । নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি নাসিম ওসমানের ছেলে আজমীর ওসমান ও তার মা পারভীন ওসমানের শেল্টারে অনেক দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীরা আশ্রয় খুঁজে নিয়েছিল। জাতীয় পার্টির যুক্ত থাকার সুবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্র সমাজের নামে গড়ে তুলেছিলো বিশাল এর সন্ত্রাসী বাহিনী। যাতের কাজ ছিলো সাধারন মানুষের জায়গা দখল নেওয়া ও বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে চাঁদাবাজি করা আর তার সবটা নিয়ন্ত্রণ করতো পারভীন ওসমান। পারভীন ওসমানের নিয়ন্ত্রণে কুখ্যাত অপরাধী পিজা শামীমের নেতেৃত্বে প্রায় কয়েকশত ছিচকে সন্ত্রাসী পুরো নগরী দাবড়ে বেড়াতো । একই সাথে রাতুল মটরসের ফারুক এই আজমীর ওসমানের নাম ব্যবহার করে এবং তার এই চোরাই শত শত মটর সাইকেল দিয়ে নগরীর তান্ডবে অগ্রভাগে থাকতো ফারুক, রুপু , সবুজসহ অনেক অপরাধী । রুপু , সবুজ, ফারুক চক্রকে গ্রেফতার এখন সময়ের দাবী বলেও নগরীর অনেকেই মনে করেন
তবে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি শাহাদত হোসেন রুপু ও মহানগর ছাত্র সমাজের সভাপতি সবুজ ছিলো সেই সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্যতম লিডার। পারভীন ওসমানকে সেই সন্ত্রাসী বাহিনী আম্মাজান খেতাব দিয়েছিল, আজমেরী ওসমানের বাহিনীর নাম ছিল ভাইজান বাহিনী। আর এই ভাইজান বাহিনীর অন্যতম অপরাধী ছিলো পতিতাপল্লীতে জন্ম নেয়া রাতুল মটরসের ফারুক। নারায়ণগেঞ্জ মটর সাইকেল সমিতি গঠন করে এই ফারুক সভাপতিও বনে যায় । এরপর হাজার হাজার পাচার হওয়া চোরাই মটর সাইকেল ভারত থেকে নারায়ণগঞ্জে এনে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে করাগাছ বনে যান।
সূত্র জানিয়েছে, শহরের বালুর মাঠ এলাকায় ইসলাম হার্ট ফাউন্ডশেন এর সামনে তাদের অস্থায়ী কার্যালয় বানিয়ে রাত-দিন এখানে হোন্ডা বাহিনী নিয়ে আড্ডা দিতো এবং হার্ট ফাউন্ডেশন দখল করে রাখতো যাতে সাধারন মানুষ ঠিক মত চিকিৎসা নিতে পারতো না। আজমীর ওসমান ও তার মা পারভীন ওসমান হাত রুপু ও সবুজ এর মাথার উপরে থাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠে ছাত্র সমাজের এ সব সন্ত্রাসীরা। তাদের অন্যতম কাজ হলো বিচার শালিশ করার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া। শহরের একাংশের চাঁদাবাজির টাকাও যেত তাদের পকেটে।
সূত্র জানায়, ২ থেকে ৩ লাখ টাকার মধ্যে হলে রুপু ও সবুজ মিলে সমাধান দিয়ে দিতো কিন্তু টাকার পরিমান বেশি হলে সে বিচার চলে যেতো পারভীন ওসমান এর কাছে। এসব করে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সাধারন মানুষের কাজ থেকে। রুপু আজমীর ওসমান এর নাম ব্যবহার করে ইসদাইর এলাকায় গড়ে তুলে বিশাল এক বাহিনী যা নিয়ন্ত্রন করে তার আপন বড় ভাই অপু। ইসদাইর এলাকায় যে কোন ধরণের বাড়ি নির্মাণ কাজ করার আগেই সেখানে হাজির হন অপু বাহিনীর সদস্যরা।
তাদের দিতে হতো মোটা অঙ্কের চাঁদা । তবে চাদাঁবাজি, জমিদখল, বিচার শালিশ নামে তারা যে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনা করতো এসব করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে এবং বেশ কয়েকবার পুলিশ ও ডিবি পুলিশের জাতে আটক হন তারা। তবে গত ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার এর ছাত্র আন্দোলনের প্রকাশ্যে আসেন সন্ত্রসী বাহিনী নিয়ে, এসময় তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় ছাত্রদের উপরে। সূত্র জানায়, এই পোষ্য বাহিনীর হাতে রয়েছে নানা ধরনের দেশি ও বিদেশি অস্ত্র গত ৫ আগষ্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর গা ঢাকা দিয়েছে এই সন্ত্রাসীরা।
সুত্র মতে জানাযায়, পারভীন ওসমানের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি শাহাদাত হোসেন রুপু দেশ থেকে পালিয়ে ভারত এর গিয়ে অবস্থান নিয়েছে। আর আরেক সন্ত্রাসী মহানগর ছাত্র সমাজের সভাপতি মাসদাইর লিচুবাগ এলাকায় বিএনপি কর্মীদেও মোটা অংকের টাকার দিয়ে তার বাড়ি পাহারায় বসিয়েছেন।
যাতে বাহিরের কোন লোক তার বাড়ির সামনে যেতে না পারে। তবে কিছুদিন আগে মাসদাইর এলাকা থেকে কিছু লোক সবুজকে খুঁজতে গেলে তার ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা তাদের কুপিয়ে দেয় এবং তারা প্রাণ ভয়ে সেখান থেকে চলে আসে। মাসদাইর ও ইসদাইর এলাকাবাসী অভিযোগ, আজমীর ওসমানের বেশ কিছু অস্ত্র তাদের কাছে রয়েছে। যা আগামীতে আবার সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে পারে।
সম্প্রতি দৈনিক যুগের চিন্তা পত্রিকায় উল্লেখিত এমন ঘটনায় নগরীর অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, বিগত ১৫ বছর এই ওসমান পরিবারের অন্যতম সন্ত্রাসী আজমীর ওসমানের ভয়ে জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে কেউ কোন টুশ্বদটি করতে পারতো । আজমীর ওসমান ও তার মা পারভীন ওসমানের অপরাধের বিশাল ফিরিস্তির অন্যতম হোতা শাহাদত হোসেন রুপু ছাত্র সমাজের নামধারী সভাপতি সবুজ কে গ্রেফতার করেলেই সকল অপরাধের তথ্য উদঘাটন করা সম্ভব ।









Discussion about this post