শিল্পাঞ্চলখ্যাত নারারায়ণগঞ্জে বিএনপি একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কোন্দল এখন প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। কয়েকটি গ্রুপ নিজেদের শক্তির মহড়া প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে চরম আকার ধারণ করেছে।
সম্প্রতি বন্দর উপজেলা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে নিজ দলের নেতাকর্মীদের হামলায় হাত ভেঙ্গে দেয়ার ঘটনা ঘটে। এমন ঘটনা ছাড়[ও প্রায় প্রতিটি পাড়া মহল্লায় চলছে গ্রুপিং। শক্তি প্রদর্শনের উদ্যোগে সমাবেশ করতে বাধা দিয়েছে একেক টি পক্ষ। এ নিয়ে এলাকায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে ।
দীর্ঘদিন স্বৈরচারী আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় প্রকাশ্যে মিটিং-মিছিল করতে পারেনি উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। সরকার পতনের পর পরই প্রকাশ্যে মিছিল-মিটিং করছেন নেতাকর্মীরা। তবে ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপে মিছিল-মিটিং হওয়ায় নেতাকর্মীরা হতাশ হচ্ছেন।
দীর্ঘ ১৪ বছর পরে গত ২০২৩ সালের ১৫ জুন শনিবার বিএনপির সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন সাবেক এমপি মো. গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন গোলাম ফারুক খোকন। ওই কাউন্সিলে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগদান করেছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আর সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান।
মূলতঃ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ও মহানগর বিএনপির কমিটি গঠনের পর থেকেই গ্রুপিং সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রকাশ্যে এসেছে দলীয় কোন্দল।
আর জেলা ও মহানগর বিএনপির এতো বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান না পাওয়ার ক্ষোভ যেন পুঞ্জিভূত হচ্ছে। এ ছাড়াও অর্থের বিনিময়ে পদ পদবী বিক্রি সহ নানা অভিযোগ উঠেছে যা দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। যার ফলে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে একে অপরকে ছাড়তে নারাজ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপিং ছাড়াও নজরুল ইসলাম আজাদের একটি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে সর্বত্র । আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন । স্বৈরচারী আওয়ামী সরকারের পতনের পর প্রতিটি গ্রুপ আলাদা আলাদাভাবে পালন করে নানা কর্মসূচি।
৫ আগাস্টের পূর্ব থেকেই নারায়ণগঞ্জ বিএনপির অধিকাংশ নেতারাই শাসক দলের কোন না কোন নেতার সাথে আঁতাত করে টিকে ছিলো নারায়ণগঞ্জের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মাঠে।
তরে আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন কোন অবস্থাতেই শাসক দলের প্রভাবশালী নেতা নানা অপরাধের হোতা শামীম ওসমান তার বাই ব্যবসায়ী নেতা সাবেক এমপি সেলিম ওসমান কিংবা নজরুল ইসলাম বাবু অথবা সাবেক মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীরের সাথে এক মঞ্চে বসা তো দূরের কথা কোন অবস্থাতেই শাসক দলের কোন নেতাদের পাশেও দেখা যায় নাই।
একেবারেই আপোষহীন গিয়াস উদ্দিনও এখন নানা কারণে কোন ঠাসা দলীয় কোন্দলের কারণে। একদিকে শামীম ওসমান অপরদিকে নিজ এলাকা সিদ্ধিরগঞ্জের কু্খ্যাত অপরাধী মতিউর রহমান মতির অত্যাচার ছাড়াও অসংখ্য মামলার আসামী হয়ে পালিয়ে বেড়াতেন গিয়াস উদ্দিনের মতো অনেকেই।
শত শত মামলায় জর্জরিত হাজার হাজার বিএনপির নেতাকর্মী এতোদিন এতা ত্যাগ সহ্য করলেও এবার ৫ আগষ্টের পর থেকেই নেতাকর্মীদের অনেকেই কোন্দলে জড়িয়ে পরেছে মারাত্মকভাবে।
এমন শক্তি প্রদর্শন দেখানোর ঘটনার এক পর্যায়ে ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মুঠোফোনে ফোন করে থানা ঘোরাও করার হুমকিও দেয় বিএনপির এক নেতা।
এমন ঘটনায় সদর উপজেলার অনেকে নেতাই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আসলেই সকলেই নেতা হতে এবং সাম্রাজ্য দখলে রাখতে কত কি যে করে বেড়াচ্ছে যার খেসারত বিএনপিকেই বহন করতে হবে ।“









Discussion about this post