সেই মাজহারুল ওরফে মাজাহার দারোগা ওরফে বস্তি কাজল। যিনি নারায়ণগঞ্জে প্রতাপের সাথে চাকরী করেছেন। নারায়ণগঞ্জের ডিবি পুলিশের কড়া দারোগা মাজহারুল ইসলাম ওরফে কাজল ওরফে বস্তি কাজল মাদারীপুর জেলার বাসিন্দা হওয়ার সুবাধে আওয়ামীলীগের এক শীর্ষ নেতার শেল্টারে ঢাকায় লেখাপড়ার কারণে তেজগাঁও শিল্প এলাকায় চাঁদাবাজির রাম রাজত্ব চালালে তার নামের পাশে বস্তি কাজল উপাধি যুক্ত হয় ।
সেই মাজহারুল ইসলাম কাজল ওরফে বস্তি কাজল আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামলের দারোগা হিসেবে ২০০০ সালে চাকরীতে যোগ দিয়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশে যোগদান করেন । এরপর ডিবি পুলিশে পোষ্টিং নিয়েই যারপরনাই কর্মকান্ড চালিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।
জোট সরকারের শাসনামলে নারায়ণগঞ্জে থেকে আওয়ামীলীগের আন্দোলনে নানাভাবে সহায়তার অভিযোগ ছিলো। এরপর সেনা সমর্থিত সরকারের সময়কালে রাজধানীতে যোগ দিয়ে দ্রুত সময়ে পদন্নতি নিয়ে যাত্রাবাড়ি থানায় প্রথমে সেকেন্ড অফিসার, পরবর্তীতে তদন্ত ইন্সপেক্টর এরপর দফায় দফায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ফের তেজগাঁও থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন । ধূর্ত এই কর্মকর্তা চাকরীর পুরো সময়জুড়ে প্রাইজ পোষ্টিং নিয়ে রাজধানীতে শত শত কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তোলে নামে বেনামে ।
তার দাপটে বাঘে মহিষে এক ঘাটে পানি খেতো। কারণ তিনি ছিলেন সারাদেশের পুলিশ এসোসিয়েশসনের সাধারণ সম্পাদক। সেই মাজহারুল এখন কারাগারে।
ট্রাইব্যুনালের এজলাস কক্ষে কান্নায় ভেঙে পরে গুলশান থানার সাবেক ওসি মাজহারুল ইসলাম বলতে থাকেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম। আমি কোনো শিক্ষাথীকে হত্যা করিনি। আমাকে বাঁচান।’
আজ বুধবার (২০ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে মাজহারুল এম কথা বলেন।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ থানা গুলশানের সাবেক ওসি মাজহারুল ইসলাম জুলাই-আগস্ট গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলার আসামি হিসেবে ট্রাইব্যুনালে হাজির কার হলে উল্রেখিত মন্তব্য করথে সকলের দৃষ্টি ছিলো তার প্রতি।
আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে শুনানির সময় এ ঘটনা ঘটে।
মাজহারুল ইসলাম বলেন, ”জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালে আমি সাভারের ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করিনি। আমি তখন গুলশানের ওসি ছিলাম।“
এ সময় চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম ভুল সংশোধন করে বলেন, “মাজহারুল ইসলাম আন্দোলন চলাকালে গুলশান থানার ওসি ছিলেন। তার নেতৃত্বে গুলশানের প্রগতি সরণি এলাকায় গণহত্যা চালানো হয়েছে ।”
মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত অন্যান্য কর্মকর্তারা হলেন : সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান, ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফি, মিরপুর ডিএমপির সাবেক ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুর ইসলাম, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান, গুলশান থানার সাবেক ওসি মাজহারুল হক এবং ঢাকা উত্তর ডিবির সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।
জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক পুলিশ প্রধান ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালকসহ আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের মামলায় উল্লেখিত আসামীদের কারাগারে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
আগামী ১৯ ডিসেম্বর দিন ধার্য করে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। একই সাথে রাস্ট্রপক্ষের শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
২৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউশনের আবেদন মঞ্জুর করে এই ৮ কর্মকর্তাকে হাজির করতে আদেশ দেয়া হয় ।
জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক পুলিশ প্রধান ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালকসহ আট কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তার আগে প্রিজন ভ্যানে করে ৮ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।









Discussion about this post