গভীর রাতে বগুড়ায় এক কলেজ ছাত্রকে র্যাবের পোশাক পরে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের নেপথ্যে জড়িত চক্রের এক সদস্যকে শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। মুক্তিপণের টাকা লেনদেনের ফাঁদ পেতে দুই নারীকে গ্রেপ্তারের পর অপহরণকারী চক্রের এক সদস্যকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় তারা।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) পুলিশের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে জানা যায়, ‘র্যাবের পোশাক পরে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ে জড়িত সাঈদ হাওলাদার (৫০) নামের এক ব্যক্তি। তাঁর বাড়ি বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগাতি গ্রামে। তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলায়।’
পেশায় দরজি সাঈদ হাওলাদার । তিনি গাজীপুরে পুলিশের পোশাক তৈরির একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। সাঈদ হাওলাদার গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে নেমেছে।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে পুলিশ সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীকে অপহরণের পর তার পরিবারের কাছে সাত লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। মুক্তিপ বাবদ ৭৫ হাজার টাকা নেওয়া হয় সাভারের একটি বিকাশ নম্বরে। আর এক লাখ টাকা পাঠানোর জন্য নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের বিকাশের দোকানের নম্বর দেওয়া হয়। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা-পুলিশ আগে থেকেই বিকাশের ওই দোকানে ওৎ পেতে থাকে। এরপর সেখানে মুক্তিপণের টাকা তোলার জন্য সাঈদ হাওলাদার তাঁর মেয়ে সাদিয়া আকতারকে (২০) পাঠানো হলে পুলিশ তাঁকে আটক করে। মেয়ে সাদিয়া আকতার (২০) এর সঙ্গে আসে মা রুমা খাতুন । তাকেও আটক করা হয়। মা-মেয়েকে আটকের পরপরই অপহরণকারীদের হোতা সাঈদ হাওলাদারের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী-কন্যা যোগাযোগ করারর পরপরই অপহরণকারীরা অপহৃত কলেজ ছাত্র ফেরদৌস কে মুক্তি দেয়। এরপর নরসিংদীর মাধবদী থেকে অপহৃত কাওলেজ ছাত্র ফেরদৌস কে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় বগুড়া আদালতের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক সাঈদ হাওলাদারের স্ত্রী রুমা খাতুন ও মেয়ে সাদিয়া আকতারকে বগুড়া সদর থানায় করা অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে বগুড়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন খাতুন পরে দুজনকেই কারাগারে পাঠনোর আদেশ দেন।
অফহরণকারী র্যাবের পোশাক পরিহিত ব্যক্তিরা কারা ? এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন বলেন, সিদ্দিরগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার মা-মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদে মুক্তিপণের টাকা আদায়ের সঙ্গে সাঈদ হাওলাদার জড়িত বলে নিশ্চিত। তবে অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে আছে। মুক্তিপণের ৭৫ হাজার টাকা নেওয়ার চেষ্টা করেছে সাভারের একটি বিকাশের দোকানে। ওই অপহরণের সাথে জড়িত র্যাবের পোশাক পরিহিত কলেজ ছাত্র ফেরদৌস অপহরণের সঙ্গে ঠিক কতজন জড়িত তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায় নাই।
এস এম মঈনুদ্দীন আরো বলেন, র্যাবের পোশাক পরে বিভিন্ন জেলায় অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ে সংঘবদ্ধ দলের সদস্য সাঈদ হাওলাদারসহ সকলকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।









Discussion about this post