“শেখ হাসিনা দেশে দুর্বৃত্ত, মাফিয়া ও গডফাদারদের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। তার নির্দেশে ত্বকী হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করলেও তাতে এখনও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।”
এভাবেই বুধবার (৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর হত্যার বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ সাড়ে এগারো বছর পরও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি এমন ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রফিউর রাব্বি বলেন, “ওসমান পরিবার নারায়ণগঞ্জে হত্যা, দখল, চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্যের মাধ্যমে দুর্বিসহ পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। তারা এখন পালিয়ে গেলেও নতুন দুর্বৃত্তচক্র নারায়ণগঞ্জে গডফাদার হওয়ার চেষ্টায় মরিয়া।”
তিনি বলেন, অন্তরবর্তিকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর তারা অনেক তৎপর হয়ে উঠেছিলো। ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে, ১জনের জবানবন্দি নিয়েছে। আমরা মনে করেছিলাম এই হত্যার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে। কিন্তু এই হত্যাকান্ডের বিচার শুরু হলেও আশানুরূপ অগ্রগতী লক্ষ্য করলাম না। নিজেদের করা অত্যাচার-নির্যাতনের কারণে ওসমান পরিবারে পালিয়ে গেছে। তবে, তাদের হাজার হাজার দোষর, যারা তাদের হয়ে অপকর্মগুলো করতো; তারা কেউই বিচারের আওতায় আসে নাই। এদের মধ্যে অনেকেই বিএনপির সাথে মিলে তাদের টাকা দিয়ে হেফাজতে থাকছে।
রফিউর রাব্বি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের একজন কাউন্সিলর ছিলো সে মামলা বানিজ্য শুরু করেছে, বিএনপির অনেকেই করছে। যে কাউন্সিলর ওসমান পরিবারের সাথে এক মঞ্চে উঠে জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়েছে সে এখন হত্যা মামলায় বানিজ্য শুরু করেছে। আর তার টার্গেট হচ্ছে ব্যাবসায়ী ও হিন্দু সম্প্রদায়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির অনেকেই শুরু করেছে মামলা বানিজ্য। আর সিটি কর্পোরেশনের কয়েকজন শুরু করেছে নিয়োগ বানিজ্য। নিয়োগ দিয়ে দুই-পাঁচ লাখ টাকা করে নিচ্ছে। প্রশাসকের পিএস ও সিইও সম্পর্কেও এই অভিযোগ রয়েছে। এই শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে একটা লুটেরা দেশ কি আমরা দেখতে চেয়েছিলাম। যে ওসমান পরিবারের পর আরেকটি মাফিয়া গডফাদার তৈরি হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের বলছি আপনারা আপনাদের দলের চাঁদাবাজ ও মামলাবাজদের বিরত রাখার উদ্যোগ নেন। নয়তো নারায়ণগঞ্জে কি হয় আপনারা জানেন।
আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব হালিম আজাদ, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক এড. মাহাবুবুর রহমান মাসুম, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা ভবানী শংকর রায়, সিপিবি জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদ জেলা সদস্য সচিব আবু নাইম খান বিপ্লব, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহমুদ হোসেন, সমমনা সংগঠনের সাবেক সভাপতি দুলাল সাহাসহ অন্যান্য বক্তাগণ ত্বকী, সাগর-রুনি, তনুসহ নারায়ণগঞ্জের অন্যান্য হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করে বলেন, “শামীম ওসমান ও তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জে ত্রাস সৃষ্টি করেছে। তাদের সহযোগীরা এখনো বহাল তবিয়তে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ত্বকী হত্যার নির্দেশদাতা শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমানসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।”









Discussion about this post