নিজ শিশু সন্তান, স্ত্রী ও স্ত্রীর বড় বোন কে হত্যা করে মাটি চাপা দিয়ে রাখার লোমহর্ষক ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে।
দায়ের করা মামলার আসামীরা হলেন নিহত লামিয়ার স্বামী ইয়াসিন (২৪), তার শ্বশুর মো. দুলাল (৫০) এবং তার ননদ মোছা. শিমু (২৭)। তারা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ২ নম্বর ওয়ার্ডের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম ঘটনার সিত্যতা নিশ্চিক করে বলেন, তদন্ত চলছে জোড়ালোভাবে। আমাদের কাছে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে ইয়াসিন। তবে, লোমহর্ষক এই হত্যাকান্ডের সাথে অন্য দুই আসামি জড়িত না বলে ইয়াসিন আমাদেরকে বলে আসছেন। আমরা তাকে সতর্কতার সাথে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।
লোমহর্ষক ট্রিপল মার্ডারের এই মামলায় গ্রেফতার ইয়াসিনের ৫ (পাঁচ) দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ শনিবার (১২ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেলায়েত হোসেন এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের একটি সূত্র জানান, ইয়াসিন কিভাবে, কি কারণে এই তিন জনকে একাই হত্যা করে মাটি চাপা দিয়েছে তার লোমহর্ষক বর্ণনা দিচ্ছে। যা উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনাও হচ্ছে এই ট্রিপল মার্ডার নিয়ে। আর উর্ধতন কর্মকর্তাগণ ও এই লোমহর্ষক ঘটনার উপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছেন।
তিন জনের মরদেহ উদ্ধারের পর শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় নিহত লামিয়ার বোন মুনমুন বাদী হয়ে এই মামলাটি করেন।
অভিযোগে মুনমুন জানায়, ইয়াসিনের সঙ্গে পাঁচ বছর আগে লামিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই লামিয়ার শ্বশুর ও ননদ প্রায় সময় তাকে মারধর করতো। তাদের আব্দুল্লাহ নামের চার বছর বয়সী এক সন্তানও ছিল। ইয়াসিন মাদকাসক্ত ছিলো। বিয়ের পর থেকে স্ত্রী-সন্তানের কোনো ভরণপোষণ দিতেন না। বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় সময় ঝগড়া ও মারামারি হতো। এ কারণে লামিয়া তার ছেলে আব্দুল্লাহ (৪) ও বড় বোন স্বপ্নাকে (৩৫) নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া পুকুরপাড় এলাকায় মোক্তার হোসেনের বাড়িতে আলাদা ভাড়া বাসায় বসবাস করতো, নিহত লামিয়া সিদ্ধিরগঞ্জ পুল এলাকার মুজিব ফ্যাশন নামের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতো। টাকা না দিলে শারীরিক নির্যাতনসহ খুন করার হুমকি দিতো ইয়াসিন।
৭ এপ্রিল (সোমবার) দুপুরে মুনমুন ও তার স্বামী লামিয়াদের ভাড়াটিয়া বাসায় যায়। তাদের বাসা থেকে আসার পর থেকে লামিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তাদের খোঁজ নেওয়ার জন্য সেই বাড়িতে গিয়েও পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি তাদের।
পরে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে লামিয়াদের ভাড়া বাড়ির সামনে রাস্তার পাশ থেকে অর্ধগলিত মরদেহ তিনটি উদ্ধার করা হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিনূর আলম বলেন, হত্যার ঘটনায় আসামি ইয়াসিনকে আদালতে পাঠানো হয়েছিল। আদালত থেকে রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ায় তাকে থানায় আনা হয়েছে।









Discussion about this post