মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নীতি, আদর্শ ও শৃঙ্খলা বিসর্জন দিয়ে দলীয় পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে জাতীয়তাবাদী কৃষকদল নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী দেওয়ান মাহমুদ ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী-কে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ব্যাপক সমালোচনার পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদল-কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্তে আওয়ামীলীগ সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরে রূপগঞ্জে গাজী গোলাম দস্তগীরের শেল্টারে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া দেওয়ান মাহমুদ ও মোহাম্মদ আরলি বিরুদ্ধে উল্লেখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এমন ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে ।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদল-কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল উল্লেখিত বহিস্কারের এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন।
২৫ মার্চ (মঙ্গলবার) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন এবং সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ডা. মো. শাহীন মিয়াকে আহবায়ক, মো. আলম মিয়াকে সদস্য সচিব এবং হাজী দেওয়ান মাহমুদকে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক করে ৭৯ সদস্যবিশিষ্ট জেলা কমিটির অনুমোদন দেয়। প্রায় কোটি টাকার বিনিময়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষকদলের নবগঠিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে হত্যা মামলার আসামি হাজী দেওয়ান মাহমুদ ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী-কে স্থান পাওয়া নিয়ে নানা বিতর্কের ঝড় তুলে সর্বত্র ।
হত্যা মামলার আসামি হাজী দেওয়ান মাহমুদ ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে দায়ের কার মামলার এজাহার পর্যালোচনা করে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মাবরুর হোসাইন হত্যার ঘটনায় গত ২১ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। যে মামলায় ২৫ নম্বর আসামি হচ্ছেন হাজী দেওয়ান মাহমুদ। এছাড়া ওই মামলায় সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্র্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি শামীম ওসমান, তার ভাতিজা আজমেরী ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান, ফতুল্লা যুবলীগ নেতা মীর সোহেল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহবায়ক কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির নাম রয়েছে ওই মামলায়।
বহিষ্কৃত ২ জন হাজী দেওয়ান মাহমুদ ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সম্পর্ক রয়েছে। কমিটি ঘোষণার পরপর তাদের দুইজনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দলের ভিতরে নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তারা এই দুই নেতার বহিষ্কারের দাবি উঠে জোড়ালোভাবে ।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে রূপগঞ্জের অনেকেই বলেন, “এই হাজী দেওয়ান মাহমুদ ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর নাম মুছে ফেলতে এবং মামলা থেকে রক্ষা পেতে কোটি কোট টাকা ব্যয় করে । কমিটিতে নিজেদের নামের স্থান করাতে গোপনে চালায় মহা তদ্বির। বিগত ১৫ বছর গাজী গোলাম দস্তগীর ও তার পুত্রসহ অন্যান্য প্রভাবশালীদের শেল্টারে সিটি মিলের মালামাল, ভূমিদস্যতা, সিটি মিলের পক্ষে পুরো সরকারী খাল ভরাট করে খালের অস্তিত্ব মুছে ফেলতে ও এলাকাবাসীর জমি দখলসহ সকল অপকর্ম করে শত শত কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে এখন সাপের খোলসের মতো নিজেদের খোসল পাল্টে নতুন করে বিএনপির রাজনীতিতে ফিরতে ফের এই সিটি মিল দখলে রাখতে মহাপরিকল্পনা করে আসছিলো হাজী দেওয়ান মাহমুদ ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী । কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না এই চক্রের। আর শীর্ষ পর্যায়ের অবস্থানে থাকা অনেক নেতাই কোটি টাকার লেনদেনের বিষয়টি বেমারুম ভুলে গেছেন মুহুর্তের মধ্যে।”









Discussion about this post