নারায়ণগঞ্জ আদালতের এজলাস কক্ষের ভিতর থেকেই সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে চর থাপ্পর, কিল, ঘুষি ও পেছন থেকে লাথি মেরে লাঞ্চিত করার ঘটনায় ব্যাপক তোলপড়ের ঝড় উঠেছে সর্ব্রত। যা আজ সোমবার ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’।
আদালতের প্রবেশমুখে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মারধরের শিকার হয়েছেন আনিসুল হক। আজ ২৮ এপ্রিল পৌনে তিনটায় ঘটনা ঘটলে পুলিশ দ্রুত তাকে দৌড়ে নিয়ে প্রিজন ভ্যানে তুলেন।
যার ভিডিও অসংখ্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে।
আজ সোমবার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত হাফেজ সোলাইমান হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানির জন্য নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুদ্দিন কাদিরের আদালতে নিয়ে আনা হয় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে । এমনটাই জানান নারায়ণলগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান।
কাইউম খান বলেন, হত্যা মামলাটিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত (৭) দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শুনানি শেষে আদালত চার (৪) দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য ও ভাইরাল হওয়া ভিডিও থেকে জানা যায়, দুপুরে আদালতে তোলার সময় বাইরে বিএনপন্থি আইনজীবীরা ‘আনিসুল হকের ফাঁসি’ চেয়ে প্রথমে স্লোগান দেন। শুনানির শেষে এজলাস থেকে বের হওয়ার সময় আনন্দ করে হাসতে হাসতে উচ্ছ্বাসের সাথে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে কিল-ঘুষি দেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। এই সময় আনিসুল হকের মাথায় পুলিশের হেলমেট ও পুলিশী বেষ্টনী থাকায় গুরুতর আহত হন নাই আনিসুল হক। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা সাবেক এ আইনমন্ত্রীকে নিয়ে দৌঁড়ে আদালতের বারান্দা ত্যাগ করেন এবং একইভাবে তাকে দ্রুততার সাথে প্রিজন ভ্যানে তুলতে সমর্থ হয় পুলিশ।
গণমাধ্যমকর্মীদের ধারণ করা ভিডিওতেও এজলাসের প্রবেশমুখে আনিসুল হককে চর-থাপ্পর দিতে দেখা যায়।

এরপরেও প্রিজনভ্যানে থাকা অবস্থায়ও বাইরে আদালত প্রাঙ্গণে ‘ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই, আনিসুল হকের ফাঁসি চাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষুদ্ধ বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
শুনানির আগে ও পরে বিএনপির মিছিলে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির ও আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধানকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় বলেও জানান আদালতে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এ সময় অনেকেই বলেন, ‘এবার আইনমন্ত্রীকে চর, থাপ্পর কিল ঘুষি মারলো আইনজীবীরা !’
আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান এ বিষয়ে বলেন, এজলাস থেকে বের হওয়ার পর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি হয়, পরে পুলিশ দ্রুততার সঙ্গে আসামিকে প্রিজন ভ্যানে তোলে। কিন্তু সেখানে কেউ চর-থাপ্পর দিয়েছে এমনটা আমার নজরে পড়েনি।
আর এমন ঘটনায় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির সাংবাদিকদের বলেন, আনিসুল হককে উৎসুক জনগণ মারধর করেছে। তবে এতে বিএনপন্থি আইনজীবীদের কোনো সম্পৃক্ততা নাই।









Discussion about this post