সোনারগাঁয়ের মেঘনা নদীতে ইঞ্জিনচালিত নৌযান নিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপি নেতা ও কালবেলার এক সাংবাদিকসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে নৌ পুলিশ।
আজ বুধবার (২৫ জুন) দুপুর ১টার দিকে মেঘনা নদীর বিভিন্ন চৌকি এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
ঘটনার বিষয়ে নৌ পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, চিহ্নিত এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মেঘনা নদীতে মাছ ধরার নৌকা, বালুবাহী ট্রলার ও অন্যান্য নৌযানকে জিম্মি করে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে আসছিলো। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে নৌ পুলিশ তাদের হাতেনাতে আটক করা হয়েছে।
আটককৃত ১১ জনের মধ্যে দুই জনের পরিচয় বিশেষভাবে আলোচিত, মো. রুবেল: পেশায় সাংবাদিক। তিনি সোনারগাঁ প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁদাবাজ চক্রের কার্যক্রমের সঙ্গে তিনি সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ আছে।
মো. সোহাগ, সোনারগাঁ উপজেলার বৈদ্দারবাজার ইউনিয়নের ছাত্রদল নেতা। তিনি উপজেলা বিএনপি সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের ঘনিষ্ঠ এবং বিশ্বস্ত কর্মী হিসেবে এলাকায় ব্যাপক প্রভাব ও পরিচিত। নদীপথে চাঁদাবাজি কার্যক্রমে তার নেতৃত্বের ব্যাপক গুঞ্জন স্থানীয়দের মধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অপর আটককৃতরা হলেন : আল আমিন (৪০), পিতা- মৃত মজহার উদ্দিন, সাং- কাদরারগাঁও, ৭নং ওয়ার্ড, সোনারগাঁ। মো. হোসেন মিয়া (৩২), পিতা- মৃত জলিল উদ্দিন, সাং- হাজিয়া বৈদ্দ্যপাড়া, ৩নং ওয়ার্ড। মো. আরিফ (৩৮), পিতা- আকেল আলী, সাং- জাজিরা, ৯নং ওয়ার্ড। মো. হাসান বশির (৪৫), পিতা- মৃত আব্দুল হক মোল্লা, সাং- ফতেপুরচর, ৯নং ওয়ার্ড, মো. জালাল হোসেন (৩৫), পিতা- বদরুল হক বেপারী, সাং- হাজিয়া বৈদ্দ্যপাড়া, ৩নং ওয়ার্ড। মো. তোকাইদার হোসেন (৮২), পিতা- মৃত শাহ জাহান, সাং- জাজিরা, ৯নং ওয়ার্ড। মো. দুলাল (৪৫), পিতা- মৃত হাজী ফজলুল হক, সাং- কাদরারগাঁও, ৯নং ওয়ার্ড। মো. মাহাবুব আলম (৩০), পিতা- মৃত দেলোয়ার হোসেন, সাং- সাতগাঁও ইউপি (পি আড়া), বুড়িচং, কুমিল্লা,মো. করিম মিয়া (৩২), পিতা- মৃত সোহরাব আলী, সাং- ফিরোজপুর, ৪নং ওয়ার্ড। মো. একরাম মিয়া (৩২), পিতা- মৃত সোহরাব আলী, সাং- ফিরোজপুর, ৪নং ওয়ার্ড। মো. তাজুল ইসলাম (৪০), পিতা- মৃত হযরত আলী বেপারী, সাং- জাজিরা, ৯নং ওয়ার্ড।
পুলিশ আরো জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় চাঁদাবাজি ও নৌপথে সন্ত্রাসের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাদের আদালতে সোপর্দের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এমন চাঁদাবাজির ঘটনায় স্থানীয় জেলে ও নৌযান মালিকরা নৌ পুলিশের এ অভিযানে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। অনেকের দাবি, চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যে নদীপথে নৌ চলাচল ও মাছ ধরা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত ছিলো।
এ বিসয়ে নৌ পুলিশের আরো এক কর্মকর্তা বলেন, মেঘনা নদীসহ সকল নদীপথে চাঁদাবাজি ও নৌপথের সন্ত্রাস দমনে আমাদের অভিযান চলমান থাকবে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে ।









Discussion about this post