নিজস্ব প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার এ.আর নীট কম্পোজিট দখলের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি প্রতারক চক্রের বিরোদ্ধে । আর এই প্রতারক চক্রের মূল হোতা শাহাদাত হোসেন বাচ্চু ওরফে চিটার বাচ্চু।
এদিকে এ প্রতারক চক্রকে রক্ষার অভিযোগ উঠেছে একটি রাজনৈতিক মহলের বিরুদ্ধে ।
প্রতারণার শিকার ভূক্তভুগি নারী হাসনাত জাহান রুনুর অভিযোগ এই প্রতারক চক্রের কারনে মৃত্যু হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির মালিক তার স্বামী মজিবুর রহমান সোহেলের। প্রতারকদের থেকে পরিবার ও ব্যাবস্য প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করতে পুলিশের কাছে অভিযোগ করে সুষ্ঠ কোন সামাধান না পেয়ে এ ব্যাপারে সাহায্য চেয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন তিনি।
তিনি জানান তার স্বামী মজিবুর রহমান সোহেলের চলতি বছরের ২১শে নভেম্বর আকস্বিক মৃত্যু হয়। নিজ ব্যাবসায় ঋণ গ্রস্থ হয়ে মৃত্যুর পূর্বে তিনি শাহাদাত হোসেন বাচ্চুর সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি ভাড়া দিতে মৌখিক চুক্তি করেন। পরবর্তীতে বাচ্চুর সঙ্গে সোহেলের একটি খসড়া চুক্তিপত্র হলে চলতি বছরে আগষ্ট মাসে প্রতিষ্ঠানটি বুঝিয়া দেয়া হয় বাচ্চুকে।
সেপ্টেম্বর মাস থেকে তাদের ভাড়া দেওয়ার কথা থাকলেও তারা কোন টাকাই দিচ্ছিল না। তিনি জানান তার স্বামী সোহেল নভেম্বর মাসে ভাড়াটিয়ার কাছে ভাড়া আনতে গেলে তার স্বামী সোহেল এবং সহকারী মামুনকে আটকে রেখে মারধর করে।
পরে আমরা স্বজনরা খবর পেয়ে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। এ ব্যাপারে মামুন ফতুল্লা থানায় একটি অভিযোগ করেন। জীবনের অনিরাপত্তা এবং লজ্জায় এক ধরনের মানসিক চাপে ঘটনার কয়েকদিন পর ২১শে নভেম্বর আমার স্বামী সোহেল মৃত্যু বরণ করেন। আমার স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনেও ভাড়াটিয়া বাচ্চু তাদের দেখতে যায়নি।
আমার স্বামীর মৃত্যুর পূর্বে আমাকে বাচ্চুর সম্পর্কে অবহিত করেন এবং বলেন তিনি তার ঋণ পরিশোধ করার জন্য স্থানীয় ব্যাবসায়ি জাহিদুল ইসলামের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন এবং আরো জানান চুক্তি নিয়ে প্রতারণা করার কারণে বাচ্চুকে তিনি আর ভাড়া দিবেন না।
অন্যদিকে স্থানীয় ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলামকে প্রতিষ্ঠানটি ভাড়া নেয়ার প্রস্তাব দিলে জাহিদুল ইসলাম সম্মতি প্রকাশ করেন । আমার স্বামীর মৃত্যুর পরে সেই মোতাবেক জাহিদুল ইসলামের কাছ থেকে প্রায় ২ কোটি টাকা অগ্রীম গ্রহন করে বিভিন্ন ঋণ পরিশোধ করি এবং ডিসেম্বর ১ তারিখে প্রতিষ্ঠানটি বুঝাইয়া দেওয়ার অঙ্গীকার করে চুক্তিবদ্ধ হই। সেই অনুযায়ী ভাড়াটিয়া বাচ্চু কে জানিয়ে দিলে সে সব হিসাব বুঝিয়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠান টি ছেড়ে দিবে বলে জানান।
এরই মধ্যে নভেম্বর শেষ সপ্তাহে ১০টি প্রতারনার মামলায় সাজা প্রাপ্ত আসামী বাচ্চুকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এর পর বাচ্চুর প্রতিনিধি মোঃ সুলতান ও বাচ্চুর স্ত্রী শাহানাজ এর বড় ভাই মোঃ মাসুম কে আমি প্রতিষ্ঠানটি ছেড়ে দেবার কথা জানালে তারা আমাদের নানা ধরনের হুমকি দেয়।
পরে এ ব্যাপারে ফতুল্লা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি এবং ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম কে অবহিত করি।
অভিযোগের পর আমাদের উভয় পক্ষকে ডেকে ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম বিস্তারিত জানেন। সকল ডকুমেন্ট দেখে স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিত সিদ্ধান্ত হয় বাচ্চুদের পক্ষ থেকে ৩০ নভেম্বর প্রতিষ্ঠান টি বুঝিয়ে দেবে। দুই পক্ষের দুইজন এবং পুলিশের পক্ষ থেকে একজন হিসাব নিকেশ পর্যালোচনা করে যেই পাওনা থাকবে তাহা পরিশোধ করা হবে। দুই ডিসেম্বরের মধ্যে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে কথা দিওে বাচ্চু ও শাহানাজ আক্তারের পক্ষ থেকে কেউ আর দেখা করেননি। এমতাবস্থায় আমার প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ বিল ও গ্যাস বিল পরিশোধ করতে না পারলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানটি না বুঝিয়ে দিলে আমার নতুন ভাড়াটিয়া আমাকে আর টাকা দেবেন না এবং তার কাছ থেকে নেয়া টাকা ফেরত দেওয়ার কথা জানিতে দেন। আমি বাধ্য হয়ে ২ ডিসেম্বর আমার নতুন ভাড়াটিয়াকে প্রতিষ্ঠানটি বুঝিয়ে দেই।
এরপর থেকে বাচ্চুর প্রতিনিধিরা কয়েক বার থানায় মিথ্যা অভিযোগ করে প্রতিষ্ঠানে পুলিশ পাঠিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। যার ফলে আমি আমার নতুন ভাড়াটিয়া হারানোর শঙ্কায় পড়েছি। বর্তমানে আমি অভিবাবকহীন চার শিশু সন্তান নিয়ে দারুন অর্থসংকটে দিন যাপন করছি।
তিনি আরো অভিযোগ করেন বাচ্চু একজন চিহ্নিত প্রতারক। তার লোকজন আমাকে হুমকি দেয় স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ লোক বাচ্চু। তাহার রোষানলে পড়লে আমার এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়-ক্ষতির শিকার হতে হবে।
এমন অবস্থায় আমি প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। আমাকে এই প্রতারক চক্রের হাত থেকে রক্ষা করে স্বাভাবিক জীবন যাপন করার সুযোগ করে দিবেন।
ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন উভয় পক্ষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাটি তদন্তাধীন। চুক্তিপত্র অনুযায়ী দুই পক্ষের মধ্যে মিমংসার চেষ্টা করা হচ্ছে।









Discussion about this post