নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
দীর্ঘদিন যাবৎ সরকারের শত শত কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিদেশ থেকে আমদানী করা সূতা চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে কাস্টমস এন্ড বন্ড কমিশনারেট দপ্তর সাড়াসী অভিযানের পর এবার নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় ১৯ জন চোরাই সূতা কারবারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে কাস্টমস কর্মকর্তা মোঃ আতিকুর রহমান ।
বুধবার ২৫ ডিসেম্বর দুপুরে এই মামলা দায়ের কারার পর সাড়াসী অভিযান চালিয়ে সদর থানার ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মোঃ আবদুল হাই নারায়ণগঞ্জ সদর থানার টানবাজার এলাকা থেকে কুক্ষাত সূতা চোর চক্রের অন্যতম হোতা হাজী তোতা মিয়ার অন্যতম অনুসারী মামুন কে গ্রেফতার করে ।
বিকেল সাড়ে তিনটায় সূতা চোরাই চক্রের অন্যতম হোতা মামুন গ্রেফতার হলে তাকে ছাড়াতে হুমড়ি থানায় তদ্বির চালায় ফরিদপুর জেলার অনেক হোমরা চোমরা । এমন তদ্বিরে অতিষ্ট হয়ে থানা থেকে নিজেদের আড়াল করে অপর সূতা চোরচক্রের সদস্যদের আটক করতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা অভিযান অব্যাহত রেখেছে ।
নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজার, নয়ামাটি ও আশেপাশে এলাকায় চোরাই সূতা কারবারীরা দীর্ঘদিন যাবৎএমন ব্যবসা করে একেকজন আঙ্গুল ফুলে করাগাছ বনে গেছেন । যাদের বিরুদ্ধে এতো দিন কোন কর্মকর্তারাই ব্যবস্থা নিতে পারে নাই । একদিকে নিয়েমিত মাসোয়ারা অপরদিকে আইনপ্রয়োগকারী সরকারী কর্মকর্তাদের নানা বাবে মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করায় বিনা বাধায় চোরাই সূতা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল লবন, ক্যাশ এলসি ও পলিথিনের দানা শুল্ক মুক্তভাবে আমদানী করে দেশীয় বাজারে বিক্রি করে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বেনে গেছেন অনেকেই ।
শহরের টানবাজারসহ আশেপাশের এলাকায় এমন চোরাই সূতার ক্রয় ও বিক্রয়ের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। উভয় মামলা ২০ জন চোরাই সূতা ব্যবসায়ীকে আসামী করা হয়েছে।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে ওই মামলা দুটি দায়ের করেন ঢাকা রাজস্ব বোর্ডের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা নাহিদুল হাসান ও আতিকুর রহমান।
কাস্টমস আইনের ১৯৬৯ এর সেকশন ১৫৬ এর (১) এর ৫১ (ক), ৬২ তত্বসহ ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ এর (বি) ধারায় ওই মামলা দুটি দায়ের করা হয়। মামলা নং ৫৮ ও ৫৯।
দায়েরকৃত ওই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে সূতা ব্যবসায়ী তোতা মিয়ার ছেলে চোরাই সূতা কারবারি মামুনকে।
এদিন দুপুরের দিকে টানবাজার অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে, গ্রেফতার মামুনকে ছাড়িয়ে নিতে ব্যাপক তদবিরে নামে বেশ কয়েকজন রথি মহারথি।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, হাজী বিল্লাল, হাজী ইসমাইল, ফরহাদ, সুব্রত রায়, বিপুল মন্ডল, পুলক চৌধুরী, জহির হোসেন, মো. আওলাদ হোসেন, আমিন উদ্দিন, গোবিন্দ সাহা, সেলিম রেজা, ইয়ার্ণ মার্চেন্ট এর সহ সভাপতি আব্দুল মান্নান মিয়া, নজরুল ইসলাম, ফরহাদ, আমিন উদ্দিন, আইয়ুব আলী, মোঃ সেলিম, সমির সাহা ও রুহুল আমিন ।
এর মধ্যে হাজী ইসমাইল ও ফরহাদ এবং মামুনকে উভয় মামলায় আসামী করা হয়েছে।
মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি জানান, দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই টানবাজার এলাকার একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চোরাই সূতার ব্যবসা চালিয়ে আসছিলো।
এরমধ্যে সম্প্রতি ঢাকা রাজস্ব বোর্ড দুইবার অভিযান চালিয়ে কয়েক কোটি টাকার মূল্যের সূতা জব্দ করে। সেই ধারাবাহিকতায় পুরো সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ওই মামলা দায়ের করা হয়।
সদর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে জানা যায়, সাড়াসী অভিযান পরিচালিত হওয়ার কারণে প্রত্যেক সূতা চোরাই কারবারী গা-ঢাকা দিয়ে গ্রেফতার এড়াতে নানাভাবে তদ্বির অব্যাহত রেখেছে









Discussion about this post