এনএনইউ রিপোর্ট :
ফতুল্লায় পুলিশের পোশাক পড়ে ছিনতাইকালে খেলনা পিস্তল ও বেতারযন্ত্রসহ (ওয়ারলেস) আটক হয়েছেন শাহীন নামে এক যুবক। শাহীন তার সহযোগীদের নিয়ে একটি প্রাইভেটকারে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করছিল বলে ভাষ্য প্রত্যক্ষদর্শীদের।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে ফতুল্লার ভূইগড় থেকে তাকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, আটককৃত ভুয়া পুলিশ সদস্যের নাম শাহীন ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে ফতুল্লা স্টেডিয়াম এলাকায় একটি কালো রঙ প্রাইভেটকার সিগন্যাল দিয়ে থামিয়ে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে পুলিশের পোশাক পড়াসহ চার ব্যক্তি। এসময় প্রাইভেটকারটি দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছিনতাইকারীরাও দুইটি মোটর বাইকে পিছু নেয়। ভুইগড় এলাকায় পৌছালে প্রাইভেটকারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অপর একটি গাড়ির পিছনে সজোরে আঘাত করে। তখন স্থানীয় এলাকাবাসী ছুটে আসলে ছিনতাইকারীদের তিনজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এসময় পুলিশের পোশাক পড়া ব্যক্তিটি আটক করে গণধোলাই দেয় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। পরে খবর পেয়ে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ গিয়ে ছিনতাইকারীকে উদ্ধার করে ।
ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, আটক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে । তার কাছ থেকে কয়েকটি খেলনার পিস্তল (দেখতে অরজিনালের মত), দুটি ওয়্যারলেস সেট উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে “প্রেস বিজ্ঞপ্তি” তে জানানো হয়েছে বিস্তারিত :
জনৈক আব্দুল্লাহ আল নোমান (২৩), পিতা- এইচ এম শাহ আল, সাং- পূর্ব শিয়াচর লালখা, থানা- ফতুল্লা, জেলা- নারায়ণগঞ্জ ড্রাইভার মোঃ দেলোয়ার হোসেন (২৩), পিতা- মোঃ দুলাল শিকদার, সাং- শ্রীনগর, থানা- মির্জাগঞ্জ, জেলা- পটুয়াখালী, এ/পি- পূর্ব শিয়াচর লালখা, থানা- ফতুল্লা, জেলা- নারায়ণগঞ্জ’কে নিয়ে ঢাকা মেট্রো গ-৩৭-৯০৫০ গাড়ী যোগে ঢাকাস্থ ধানমন্ডি যাওয়ার পথে অদ্য ০৪/০১/২০২০ খ্রিঃ তারিখ অনুমান ১৪.৪৫ ঘটিকায় ফতুল্লা থানাধীন লামাপাড়াস্থ নম পার্কের পশ্চিম পাশের্^ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সাইনবোর্ডগামী রাস্তার উপর ০৪ জন ব্যক্তি তাদের গাড়ী সিগনাল দেয়। তন্মধ্যে ০২(দুই) জন পুলিশের পোশাক পরিহিত অবস্থায় ছিল। গাড়ীটি থামালে ০৪ জন ব্যক্তি গাড়ীর কাগজপত্র দেখার কথা বলে জোর পূর্বক উক্ত গাড়ীতে উঠে গাড়ীর ড্রাইভার মোঃ দেলোয়ার হোসেন’কে পিছনের সিটে বসিয়ে ০৪ জনের মধ্যে ০১ জন উক্ত গাড়ীটি চালিয়ে সাইনবোর্ডের দিকে যেতে থাকে। পথিমধ্যে আব্দুল্লাহ আল নোমান ও ড্রাইভার মোঃ দেলোয়ার হোসেন বুঝতে পারে যে, ০৪(চার) জন ব্যক্তি ভ‚য়া পুলিশ। তখন তাদের সাথে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে অনুমান ১৪.৫৫ ঘটিকায় ভ‚ইগড় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌছালে একটি কভার্ড ভ্যানের সাথে গাড়ীটি দূর্ঘটনায় পতিত হয়।
তখন আব্দুল্লাহ আল নোমান ও ড্রাইভার মোঃ দেলোয়ার হোসেনদ্বয়ের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ও উক্ত এলাকায় ফতুল্লা থানা পুলিশের মোবাইল-২২ ডিউটিরত এএসআই(নিঃ)/ রঞ্জন ঠাকুর সঙ্গীয় ফোর্স সহ এগিয়ে এসে মোঃ শামীম (৩৬), পিতা- মহসিন আলী, মাতা- শাহেদা বেগম, সাং- খেয়ার ঘাট, থানা- উলিপুর, জেলা- কুড়িগ্রাম’কে ধৃত করে এবং অপর ০৩ জন পালিয়ে যায়। মোঃ শামীম (৩৬) এর দখল হতে (১) ০২টি মেট্রো পলিটন পুলিশ কালারের জ্যাকেট, যার একটির মধ্যে সার্জেন্ট র্যাঙ্ক ব্যাজ ও শাহিন নামে নেইম প্লেট লাগানো এবং অপরটিতে লতিফ নামে নেইম প্লেট লাগানো আছে, (২) ০৩টি পিস্তল সদৃশ্য গ্যাস লাইট, (৩) ০১টি ওয়াকিটকি সেট, (৪) ০১টি ওয়াকিটকি কন্ট্রোলার, (৫) ০১টি চামড়ার পিস্তলের কভার, (৬) ০১টি চামড়ার হ্যান্ডকাপের কভার, (৭) পুলিশের মনোগ্রাম সংযুক্ত ০১টি ক্যাপ, (৮) ০১টি সিগনাল লাইট, (৯) ০১টি পুলিশে মনোগ্রাম সংযুক্ত কোমরের বেল্ট উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, উক্ত ব্যক্তি অপরাপর ব্যক্তিদের সহযোগিতায় পুলিশের পোশাক পরিধান করে বিভিন্ন স্থান হইতে বিভিন্ন লোকদের নিকট হতে ছিনতাই করে থাকে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।









Discussion about this post