করোনা ভাইরাসের কারণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধর শততম জন্মদিন উদযাপন, স্বাধীনতা দিবসের সকল কার্যক্রম, সরকারের সকল উন্নয়ন মূলক কর্মসূচী এবং পুরো দেশ বিশাল ছুটির আওতায় নিয়ে আসার পরও কেউ নিজ ঘরে অবস্থান করছেন না। করোনা প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার থেকে ঘরে থাকার জন্য বারংবার নির্দেশনা প্রদান করলেও নারায়ণগঞ্জের সদর থানা এলাকা, বন্দর থানা এলাকার, ফতুল্রা থানা এলাকাসহ সর্বত্রই কেউ মানছেনা এমন আদেশ।
নিজ নিজ ঘরে নিরাপদে অবস্থান না করে প্রয়োজন বা অপ্রয়োজনে হারহামেশাই বাইরে বের হচ্ছে অনেকেই ।প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় মাইকিং করে জন সাধারন কে নিজ নিজ ঘরে থাকার আহবান করলে ও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা।প্রশাসন দেখে বাইরে থাকা মানুষগুলো ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে ও প্রশাসন চলে যাবার পর ফিরে আসে তারা আগের জায়গায়। শুরু করে জমিয়ে আড্ডা।মানুষদেরকে ঘরমুখো করতে পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী ।কিন্তু তারপরে ও ঘরমুখো করা যাচ্ছেনা মানুষদেরকে।
সরকারী ছুটি ঘোষনার পর প্রথম প্রথম দু-একদিন মানুষ-জন ঘরে থাকলে ও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় বেড়েছে ঠিক অতিতের মতোই আনাগোনা।প্রধান সড়কে যান-বাহন চলাচল কিছুটা কম লক্ষ করা গেলে ও প্রতিটি শাখা সড়কের মোড় গুলোতে রিক্সা-অটোরিক্সার জটলা লেগেই থাকে।একই সাথে প্রতিটি পাড়া-মহল্লার চা-সিগারেটের স্টোল গুলোতে দেখা যায় উঠতি বয়সী কিশোর এবং যুবকদের আড্ডা । মানুষ করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা বুঝতে না পারায় এমন আচরন বা জটলা তৈরী করে আড্ডা দিচ্ছে বলে ধারনা করা হচ্ছে । বিশ্বের বহু দেশ প্রথম দিকে করোনা ভাইরাসকে গুরুত্ব না দিলেও এখন তার পরিস্থিতি ভোগ করতে হচ্ছে ।
করোনা ভাইরাস সংক্রমন মোকাবিলায় সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখে ঘরে থাকার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধ করার জন্য সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবেই । সামাজিক দুরুত্বটা হলো নিজের বাসায় থাকা, ভিড়ে না যাওয়া, একজন আরেকজনকে স্পর্শ না করা । বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশের সরকারগত ২৬ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারন ছুটি ঘোষনা করেছে।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বন্দর থানা এলাকার নবীগঞ্জের রসুলবাগ একজন নারী করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করায় পুরো এলাকা লগডাউন করেছে প্রশাসন। এরপরও বন্দর থানা এলাকায় দেখা গেছে মোড়ে মোড়ে মানুষের ভীড় । বিমেষ করে খেয়া ঘাটগুলোতে মানুষের পাগড়াপাড়ের দৃশ্য দেখলে বোঝা যায় যেন স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে পুরো জাতি । শহরের ১ নং খেয়া ঘাট, নবীগঞ্জ ঘাট, টানবাজার ঘাটে মানুষের চলাচলের দৃশ্য দেখে অনেকেই সমালোচান করেছেন প্রকাশ্যেই । এমন সমালোচনাতেও কেউ দূরত্ব বজায় রাখছেন না ।
অপরদিকে ফতুল্লা থানা এলাকার কাশিপুর, ভোলাইল, সামদাইর, ইসদাইর রেল লাইন,পাকিস্তান খাদঁ,কুতুব আইল, কোতালের বাগ,লাল খা, হক বাজার ,লালপুর পৌষপুকুর পাড়, রেললাইন বটতলা, পোস্ট অফিস সড়ক, রেল স্টেশন, জোড়পুল সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় বিভিন্ন চায়ের দোকানগুলোতে চলছে জাম্পাস আড্ডা । ঢাকা-নারায়নগঞ্জ রেল লাইনের উভয় পাশে মানুষের জটলা,খালি ফাকা জায়গা গুলোতে খেলা করছে শিশু-কিশোররা । রেল লাইনের উপর বসে দল বেধে মাদক সেবন করছে বিভিন্ন শ্রেনীর বিভিন্ন বয়সী মাদক সেবীরা ।
শহরের গলাচিপা, দেওভোগ, বাবুরাইল, পাইকপাড়া, ভূইয়াপাড়া, বৌ বাজার, নিতাইগঞ্জ , নলুয়াপাড়া, শহীদনগরসহ প্রতিটি পাড়া মহল্লায় সকল বয়সীদের আড্ডার চিত্র দেখা গেছে । পুলিশ আসার দৃশ্য দেখে আড্ডাবাজদের সকলেই কিছুক্ষনের জন্য নিজেদেরকে আড়াল করলেও ফের একই চিত্র দেখা যায় ।









Discussion about this post