“শুনতে শোনা যায় সোনার গা ! কিন্তু বাস্তবতায় দেখা যায় মাটির এই গ্রামের নাম সোনারগাঁও !” এমন গ্রাম্য প্রবাদের প্রমাণ করলো নারায়ণগঞ্জ শহরের কালীর বাজারের বিশাল স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের পট্টি হিসেবে পরিচিত স্বর্ণ পট্টি লোকজন ।
বিশ্বব্যাপি মহামারি করোনা ভাইরাসের কারনে সকলেই যখন দিশেহারা ঠিক এমন সময় সারাদেশে গত ২৫ মার্চ থেকে সকল দোকান, মার্কেট , ব্যবস্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে ঘোষনা দেন সরকার । এমন ঘোষনার মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই নারায়ণগঞ্জের সর্বত্র শুরু হয় হাহাকার । খাবারের দাবীতে অনেকেই অস্থির হয়ে উঠে ।
এদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ শহরের সেই স্বর্ণপট্টির অনেক স্বর্ণ কারিগর (শ্রমিক) দের কে শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে কেউ বাজারের লেবারী করছেন, কেউ হেটে হেটে সিগারেট বিক্রি করছেন, কেউ দারোয়ানী হিসেবে কাজ নিয়েছে আবার কেউ ভ্যান গাড়ীতে করে শবজি/ফল বিক্রি শুরু করেছেন পেটের দায়ে ।
স্বর্ণ শিল্পী শ্রমিকদের এমন দূর্দশা দেখে শহরবাসীর প্রশ্ন, তবে কি স্বর্ণ শ্রমিকরা এতোটাই অসহায় ? এমন হাজারো সমালোচনা ও শহরবাসীর প্রশ্নের পর বাংলাদেশ জুয়েলারী সমিতি (বাজুস) এর পক্ষ থেকে ঘোষনা করা হয় নারায়ণগঞ্জের স্বর্ণ শির্পী শ্রমিকদেরকে করোনা কাালের এই ক্রান্তিলগ্নে সহায়তা দেয়া হবে । এমন ঘোষনার পর নারায়ণগঞ্জ জুয়েলারী সমিতির নেতৃবৃন্দ এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে কালীর বাজার স্বর্ণপট্টির সকল শ্রমিকদের তালিকা তৈরী করে । এই তালিকা অনুযায়ী সকল শ্রমিকদের খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে বলে হাজারো শ্রমিকদের সাথে তামাশা শুরু করে । অসহায় স্বর্ণ শ্রমিকদের খাদ্য সহায়তার নাম করে কালীরবাজার জুয়েলারী মালিক সমিতির সভাপতি আল আমিন জুয়েলার্সের শহিদুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক সিঙ্গাপুর জুয়েলার্সের মালিক কৃঞ্চ কমল দেব সকল শ্রমিকদের তালিকা গ্রহণের পর খাদ্য সহায়তা না করে উৃল্টো নানাভবে শ্রমিকদের হয়রানী শুরু করে ।
সারাদেশে লগডাউন শিথিল করার পর স্বর্ণ শ্রমিকরা তাদের কারখানা চালু করলে সভাপতি আল আমিন জুয়েলার্সের শহিদুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক সিঙ্গাপুর জুয়েলার্সের মালিক কৃঞ্চ কমল দেব নারায়ণগঞ্জ সদর থানার পুলিশ দিয়ে শ্রমিকদের উল্টো হয়নানী শুরু করে ।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানার চাষাড়া ফাড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর ওয়াহেদ নিজে স্বর্ণ পট্টিতে উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের কারখানা বন্ধ করে দেয় । এমন বন্ধের বিষয়ে জানাতে চাইলে ইন্সপেক্টর ওয়াহেদ নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেটকে বলেন , জুয়েলারী মালিক সমিতির নেতাদের কথায় ই বন্ধ করা হয়েছে স্বর্ণ পট্টির দোকান।
এমন ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে হাজারো স্বর্ণ শিল্পী শ্রমিকরা । যে কোন সময় জুয়েলারী সমিতির নেতাদের এমন আচরণে বড় ধরণে দ্বন্ধের আশংকায় দ্রুত কালীরবাজার স্বর্ণ শিল্পী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি অরূন কুমার দত্ত, সহসভাপতি বাসুদেব কর্মকার, সাধারণ সম্পাদক মুকুল মজুমদার, সহ সাধারণ সম্পাদক রতন ঘোষ, গণমাণ্য ব্যক্তিদের মধ্যে বিশ্বনাথ পোদ্দার, মনিরুল ইসলাম মনির, বিপ্লব দাস, চন্দন কর্মকারসহ কয়েকজন নেতা নিজেদের মাঝে বৈঠক করে সকল শ্রমিকদের খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা করলে অভূক্ত অসহায় শ্রমিকদের উত্তেজনা দমন করেন।
২০ মে বুধবার সকাল থেকে কালীর বাজার স্বর্ণ শিল্পী শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে শত শত শ্রমিকদের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেয়ার সময় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকুল মজুমদার বলেন, আমাদের শ্রমিকদের সাথে জুয়েলারী মালিক সমিতির নেতারা যে তামাশা করেছে তাতে বড় ধরণের বিপদের আশংকা ছিলো । আমরা চাই কালীর বাজারের সকল ব্যবসাযী ও শ্রমিকরা মিলে মিশে এক সাথে কাজ করি । কিন্তু অসহায় শ্রমিকদের ত্রাণ দেয়ার নামে যে উপহাস করলো তা খুবই দুঃখজনক । আমরা শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে যতটুকু পেরেছি তা দিয়ে শ্রমিকদের সহায়তা করছি । চাউল, ডাউল , আটা, তেল , পিয়াজ, আলু ও লবন দিয়ে একেকটি বস্তা করে কয়েকশত শ্রমিকদের এই সহায়তা দেয়া হচ্ছে । আামদের এই শ্রমিকদের পাশে আামদের শ্রমিক ইউনিয়ন ছাড়া নারায়ণগঞ্জের অন্য কেউ কোন সহায়তা করে নাই ।









Discussion about this post