নিখোঁজের ৯০ দিন পর হেকমত আলী (৪৫) নামে ঢালাই করা একটি ড্রামের ভিতর থেকে এক ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিকেশন (পিবিআই)।
বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার কুশাবো এলাকায় একটি পুকুর থেকে হত্যাকারীর দেখানো মতে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু সায়েম জানান, চলতি বছরের ৪ এপ্রিল সকালে কাঞ্চন পৌরসভার কালাদী এলাকার মৃত কদম আলীর ছেলে স্থানীয় ভুলতা এলাকার নুর ম্যানশন মার্কেটের মোটর সাইকেল ও গাড়ীর পার্টস ব্যবসায়ী হেকমত আলী তার দোকানের ম্যানেজার ও তার আত্মীয় কেরাবো এলাকার ইয়াকুবের ছেলে রফিকুল ইসলাম সবুজের বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে নিজ বাড়ী থেকে বের হয় । এরপর থেকে সে নিখোঁজ ছিল।
এ ঘটনায় ১৪ এপ্রিল নিখোঁজ ব্যবসায়ীর স্ত্রী রোকসানা বেগম বাদী হয়ে ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম সবুজসহ ৪ জনকে আসামী করে একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তের ভার আসে রূপগঞ্জ থানার এসআই আমিনুল ইসলামের কাছে। তিনি মামলার ভিত্তিতে প্রধান আসামী রফিকুল ইসলাম সবুজকে রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তিতে সবুজ পুলিশের কাছে কোনরকম স্বীকারোক্তি না করায় অপহরনের সন্দেহভাজন আসামী হিসেবে তাকে আলাদতের মাধ্যেমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
এদিকে মামলাটির অধিক অগ্রগতির জন্য মামলার বাদী আদালতে তদন্তভার অন্যত্র হস্তান্তরের আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে অধিকতর তদন্তের জন্য গত ১৮ জুন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিকেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জের উপর দায়িত্বভার অর্পিত হয়।
গত ২৬ জুন মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই এর এসআই আবু সায়েমকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি ৩০ মে আদালতের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২ দিনের রিমান্ড আনেন রফিকুল ইসলাম সবুজকে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে লোমহর্ষক হত্যার বর্ননা। ৮৯ দিন পূর্বে ব্যবসায়ী হেকমত আলীকে অন্যান্য সহযোগীদের সহায়তায় হত্যার পর তাকে একটি তেলের ড্রামে ঢুকিয়ে ড্রামটি সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের কুশাবো এলাকার একটি পুকুরে ফেলে রাখে হত্যাকারী রফিকুল ইসলাম সবুজ।
এদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে রফিকুলের দেখানো মতে সেই পুকুর থেকে ঢালাই করা ড্রামভর্তি লাশটি উদ্ধার করা হয়। লাশের পড়নে পাঞ্জাবী ও শরীরের বিভিন্ন অংশ দেখে মামলার বাদী ব্যবসায়ীর স্ত্রী রোকসানা ও পরিবারের অন্যান্যরা নিশ্চিত করে এটা নিখোঁজ ব্যবসায়ী হেকমত আলীর লাশ।
নিহত ব্যবসায়ী হেকমতের স্ত্রী ও মামলার বাদী রোকসানা আক্তার জানান, দোকানের ম্যানেজার তার বোনের ছেলে রফিকুলের সাথে ব্যবসার টাকা পয়সা নিয়ে প্রায় সময়ই ঝামেলা হতো। টাকা পয়সা আত্মসাতের জন্যই তার স্বামীকে রফিকুল তার সহযোগীদের সহায়তায় হত্যা করেছে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিকেশন(পিবিআই)এর পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ হোসেন বলেন, পিবিআই মামলাটির দায়িত্বভার গ্রহনের পর নিষ্ঠারসাথে দায়িত্ব পালন করায় মাত্র এক সপ্তাহে ক্লুলেস একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার নিস্পত্তি করা সম্ভব হয়েছে। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে রফিকুলের অন্যান্য সহযোগীদের আমরা আটক করতে সক্ষম হবো ।









Discussion about this post