হেফাজত ইসলামীর নেতা মামুনুল হকের নারী কেলেংকারী, বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের নারী কেলেংকারীতে যখন সারাদেশে তোলপাড় চলছে ঠিক সেই সময়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের কালীরবাজারের স্বর্ণ পট্টি এলাকার স্বর্ণ চোরাই কারবারী দুবাই জুয়েলার্সের মালিক রামু চন্দ্র বর্মণ ওরফে রাম বর্মণ কর্তৃক প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার কন্যা (স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী) কে ধর্ষনের ঘটনা মাত্র তিন দিনের মধ্যে আদালতে আপেষ মীমাংশা করায় ব্যাপক তোলপাড়ের সুষ্টি হয়েছে ।
ভয়ে এবং ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আনিসুর রহমানের আদালতে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের ঘটনায় আপোষ মীমাংশার হলফনামা দাখিলে পর পুরো স্বর্ণপট্টি ও আদালত চত্তরে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছেিএমনর ঘটনায় ধর্ষকের জামিন দেয়ার বিষয়ে ।
এদিকে ধর্ষণে মামলায় সোমবার ৪ মে রাতে কারাগার থেকে তিনদিন কারাভোগ শেষে জামিন পেয়ে মঙ্গলবার ৫ মে বিকেলে দুপুরে কালীর বাজার স্বর্ণপট্টির দুবাই জুয়েলার্সের দোকানে বসেই বীরদর্পে রামু চন্দ্র বর্মণ ওরফে রাম বর্মণ উচ্চস্বরে বলতে থাকেন,“টাকা থাকলে খুন ধর্ষন কোন ব্যাপার নাকি !”
ধর্ষকের রামু বর্মণ ছাড়াও শহরের কালীর বাজারের জুয়েলারী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সিঙ্গাপুর জুয়েলার্সের মালিক কৃঞ্চ কমল দে একই কায়দায় ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে বলেন, “বাদীতো ঠিক ই আপোষ মীমাংশা করলো, জামিন হইলো রামুর । টাকায় কি না হয় ।”
জানা যায়, বুধবার ২৮ এপ্রিল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকার মুক্তিযোদ্ধার বাসায় একা পেয়ে কিশোরী সানজিদা বেগম (ছদ্মনাম) কে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং প্রয়োজনে মুসলিম হয়ে এই কিশোরীকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের ঘটনা ঘটায় কালীর বাজারের স্বর্ণ ব্যবসাসী দুবাই জুয়েলার্সের মালিক রামু চন্দ্র বর্মণ ওরফে রাম বর্মণ (৪০)।
৩০ এপ্রিল শুক্রবার স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় কালীরবাজার থেকে রামু বর্মনকে গ্রেফতার করে পুলিশ । নারায়ণগঞ্জ সদর খানায় মধ্যরাত পর্যন্ত টাকার বিনিময়ে আপোষ মীমাংংশা করতে নানা চেষ্টা চালায় নানা অপরাধের হোতা হিসেবে পরিচিত কালীরবাজার জুয়েলারী সমিতির নেতারা ।
শনিবার ১ মে আদালতে পাঠানোর পর ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ না করায় কোন শুনানী না হওয়ায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় বিজ্ঞ বিচারক ।
রোববার ২ এপ্রিল কিরোরীর ২২ ধারা জবানবন্দি রেকর্ড করেন নারায়ণগঞ্জ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল মহসিন ।
৪ মে মঙ্গলবার নারাযণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সিনিয়র আইনজীবী মোঃ নূরুল হুদার মাধ্যমে হলফনামা প্রদান করেন মামলার বাদী ও ধর্ষিতার । এমন হলফনামায় কারণে জামিন প্রদতান করে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক।
জামিন পাওয়ার বিষয়ে মামলার বাদীনী নির্যাতরে শিকার স্কুল ছাত্রীর মা নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, আমি আদালতে যাই নাই কি করে আদালত জামিন দিয়েছে তা আমি জানি না । পরবর্তীতে তার হলফনামার বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন পরবর্তীতে আর ফোন গ্রহণ করেন নাই ।
এমন ঘটনায় আদালতের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলেন, বাদীনীকে ভয়ভীতি ও মোটা অংকের টাকায় পুলিশ প্রশাসন, আইনজীবী ও স্বর্ণ পট্টির চোরাই কারবারী চক্র আপোষ মীমাংশা করতে বাধ্য করেছে । যার কারণে ওই কিশোরী ও তার মা এখন আর নারায়ণগঞ্জ থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ।
ঘটনার বিষয়ে আরো জানা যায়, ধর্ষণের পর কিশোরীর আত্মচিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে ধর্ষক রাম চন্দ্র বর্মণ ওরফে রামু বর্মন পালিয়ে গিয়ে অঞ্জলী জুয়েলার্সের মালিক ও কালীর বাজার জুয়েলারী সমিতির সহ সভাপতি কাজল কর্মকার, সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সিঙ্গাপুর জুয়েলার্সের মালিক কৃঞ্চ কমল দে, মৌ জুয়েলার্সের মালিক উত্তম, সুবল দাস, ধর্ষক রাম বর্মণের বড় ভাই স্বর্ণ চোরা কারবারীর হোতা তপু বর্মণ, জনি বর্মণসহ আরো কয়েকজনের সাথে ঘটনা দামাচাপা দিতে গোপন বৈঠক করে । প্রয়োজনে ১০ লাখ টাকায় ঘটনা ম্যানেজের চেষ্টা চালায় স্বর্ণ ব্যবসাসী এই চক্র। মামলার বাদীকেও ম্যানেজ করতে থানার ভিতরেও এমন প্রস্তাব দেয় । যার ভিডিও রয়েছে প্রতিবেদেকর কাছে।
চাঞ্চল্যকর এমন ধর্ষনের ঘটনায় দ্রুত সময়ে আসামীর জামিনের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা স্কুল ছাত্রী ধর্ষনের ঘটনায় মামলা নিয়েছি, আসামী আদালতে চালান করেছি , ভিকটিমকে ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছি । এরপর আদালত কি করলো তা আমাদের দেখার এখতিয়ার পরে না । আদালতের বিজ্ঞ বিচারক যা ভালো মনে করেছেন তা ই করেছেন ।
এমন চাঞ্চল্যকর ধর্ষন মামলায় আাসামী মাত্র তিন দিনের মধ্যে ১০ লাখ টাকা বিনিময়ে জামিন পাওয়ার বিষয়ে উচ্চ আদালতের বিধি নিষেধ আছে কিনা এমন প্রশ্নে রাস্ট্রপক্ষের ভারপ্রাপ্ত পিপি মনিরুজ্জামান বুলবুল নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, মামলার বাদী হলফনামা দাখিল করেছেন । তাই আদালত শুনানী শেষে জামিন দিয়েছে । এখানে টাকার লেনদেনের বিষয়টি আদালত জানার বিষয় না ।









Discussion about this post