এ যেন মগের মুল্লুক ! টানবাজার পতিতাপল্লীর এক সময়ের কর্মচারী, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিবহন সেক্টরে বিতর্কিত নানা কর্মকান্ড করে অসংখ্যবার সংবাদের শিরোনামে স্থান পাওয়া সেই আইয়ুব আলী এবার হাট নিয়ে শুরু করেছে কেলেংকারী ।
সদর উপজেলার কাশিপুরের ভোটারবিহীন নির্বাচনের প্রভাবশালী মেম্বার আইয়ুব আলীকে নিয়ে হাজারো ধিক্কারের পর এবার পবিত্র ঈদের কোরবানির হাট নিয়ে কেলেংকারীতে মেতে উঠায় ঘৃন্য ভাষায় মন্তব্য করেছে কাশিপুরবাসী।
শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর ঈদগা মাঠে কয়েকজন মুসুল্লি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “আমরা কাশিপুরবাসী এমনই দূর্ভাগা যে কখনো কখনো পতিতাপল্লির দালালের কাছ থেকে চারিত্রিক সার্টিফিকেট নিতে হয়, আর এখন তো অবৈধ হাট !”
নামাজশেষে এমন মন্তব্যের ভিডিও ধারণ করায় প্রতিবেদকের কাছে মুসুল্লীরা করজোড়ে অনুরোধ করে বলেন, আইয়ুব আলী ও তার শেল্টারদাতারা এলাকাবাসীকে কতটা জিম্মি করে রেখেছে তা কে না জানেন । এই ভিডিও প্রকাশ করলে আমাদের কতটা ক্ষতি করা হবে তা চিন্তা করলেই মাথা ঘুরে । তাই এমন ঘৃন্য অপরাধের প্রতিবাদ কেউ করতে পারে না । নিজেদের মধ্যে ধিক্কার জানানো ছাড়া আর কোন উপায় নাই । আমাদের নাম প্রকাশ হলে হামলা না হলেও মামলা করে হয়রানি করবে বলেও শংকা প্রকাশ করছেন মুসুল্লিগণ। এমন শংকার ভিডিও ধারণ করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় কাশীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংলগ্ন হাটটির দরপত্র সম্পন্ন হওয়ার আগেই অবৈধভাবে হাট বসিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আইয়ুব আলী। সদর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, হাটটির দরপত্র আগামী ২৬ জুলাই উন্মুক্ত করা হবে। তবে গত মঙ্গলবার থেকেই হাটের কার্যক্রম শুরু করেছেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলায় ১১ হাটের দরপত্র আহবান করা হয়। কাশীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংলগ্ন মাঠে হাটের জন্য দরপত্র জমা দেন নাজমুল হাসান সজল, সাখাওয়াত হোসেন বাবু ও আইয়ুব আলী। গত ২১ জুলাই দরপত্র উন্মুক্ত করা হলে দেখা যায়, তিনজনের কেউই দরপত্রে টাকার অঙ্ক বসাননি। পুনরায় এই হাটটির জন্য দরপত্র আহবান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক। আগামী ২৬ জুলাই হাটটির দরপত্র উন্মুক্ত করা হবে। তবে ইজারা না পেলেও হাট পরিচালনা করছেন কাশীপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আইয়ুব আলী। তিনি এই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান। তার সাথে সহযোগী হিসেবে রয়েছে অন্য দরদাতা সাখাওয়াত হোসেন বাবু।
জানতে চাইলে ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী বলেন, কাগজপত্রের কিছু সমস্যার কারণে দরপত্র বাতিল হয়েছিল। আবারও দরপত্র জমা দিয়েছি।
ইজারা না পেয়েই হাট পরিচালনা করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আসলে এলাকাভিত্তিক হাট তো সবাই মিলেমিশে চালাই আরকি। যেই ইজারা পাক সবাই মিলেই চালাবো।’
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক গণমাধ্যম কে মুঠোফোনে বলেন, কাশীপুরের ওই হাটের দরপত্র আগামী ২৬ জুলাই উন্মুক্ত করা হবে। ইজারা ছাড়া কেউ হাট পরিচালনা করছেন কিনা সে বিষয়ে খোঁজ নিতে এসিল্যান্ডকে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা একটি অবৈধ হাট বন্ধ করে দিয়েছি। এটারও খোঁজ নেওয়া হবে। অবৈধভাবে কোন হাট পরিচালনা করা যাবে না।









Discussion about this post