বিশেষ প্রতিনিধি :
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাংক জালিয়াতির মাধ্যমে বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়া সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজন ইউপি সদস্যও রয়েছেন ।
নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত র্যাব-১১ সদর দপ্তরের একটি দল বুধবার রাতে কুমিলা জেলার দাউদকান্দি থানার গৌরিপুর বাজার এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে।
এ সময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র, গুলিসহ বিভিন্ন ব্যাংকের বিপুল পরিমান ভূয়া সীল, লেনদেনের রশিদ এবং জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে র্যাব-১১ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয় ।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন- ইদ্রিস মিয়া, ইউপি সদস্য মমিনুল ইসলাম, আবু বক্কর সালাফি ও রুবেল। তাদের প্রত্যেকের বাড়ি কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ সিনিয়র সহকারি পরিচালক মো: আলেপ উদ্দিন জানান, জাতিয়াতি চক্রের মূল হোতা ইদ্রিস মিয়া গত তিন বছর আগে একটি হোটেলে চাকুরি করার সময় তার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক সৃষ্টি হয় ভারতীয় সফটওয়্যার প্রকৌশলী ও আন্তর্জাতিক জাতিয়াতি চক্রের সদস্য পশু ভাইয়ের সাথে । পশু ভাই দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ হ্যাক করে অবৈধভাবে টাকা উত্তোলন ও রেমিট্যান্স জালিয়াতি করে আসছিলেন। তার কাছ থেকে ইদ্রিস মিয়া জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার নানা ধরণের অভিনব কৌশল রপ্ত করেন। পরে নিজ এলাকার ইউপি সদস্য মমিনুল ইসলাম ও অপর দুইজনকে সাথে নিয়ে ব্যাংক জালিয়াতির একটি সংঘবদ্ধ দল গড়ে তোলেন। এরপর থেকেই এই চক্রটি ব্যাংক জালিয়াতির কাজ শুরু করে।
তারা অগ্রণী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক ও এনসিসি ব্যাংকসহ বিভিন্ন্ সরকারি বেসরকারি ব্যাংকের ভূয়া ভাউচার, কর্মকর্তাদের ভূয়া সীল, স্বাক্ষর, পিন নম্বর এবং ভূয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছবি তৈরি করে ব্যাংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়া শুরু করে। এই চক্রটি গত চার বছরে বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ও এটিএম বুথ থেকে কোটি টাকারও বেশি অর্থ অবৈধভাবে হাতিয়ে নিয়েছে বলে র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদের স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
অভিযানে নের্তৃত্ব দেযা র্যাবের কর্মকর্তা আলেপ উদ্দিন আরো জানান, জালিয়াতি চক্রের এই সদস্যদের কাছ থেকে তিন রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশী পিস্তল, বেশ কয়েকটি দেশীয় অস্ত্র, বিভিন্ন ব্যাংকের ২৪টি ভূয়া সীল, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৬টি ভূয়া লেনদেনের রশিদ, অর্থ গ্রহণের ২৮টি ভূয়া রশিদ, ১১ জনের ভূয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, ১৬টি ভূয়া ছবি এবং জাতিয়াতির কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার প্রিন্টার জব্দ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত চারজনের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র, জালিয়াতি ও ডাকাতির অভিযোগে নতুন করে আরো তিনটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে র্যাবের এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।









Discussion about this post