এসপি হারুনের অন্যতম আস্থাভাজন কর্মকর্তা ছিলেন হাসানুজ্জামান । তিনি ছাড়াও আরো কয়েকজন কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জে পোস্টিং পেতে এক প্রকার প্রতিযোগিতায় ডাক তুলেছেন । প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পুলিশের একেকজন কর্মকর্তা ২০ লাখ/ ৩০ লাখ / ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে নারায়ণগঞ্জে পোষ্টিং নিয়ে শুরু করেছে নানা অপকর্ম । পেশাদারিত্বের পরিচয় না দিয়ে কিভাবে বাণিজ্য করে মুণাফা আদায় করা যাবে সেই চিন্তাই থাকতো প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া কর্মকর্তাদের মনে। এসপি হারুন না থাকায় এমন কয়েকজন কর্মকর্তা মোটা অংকের টাকায় নারায়ণগঞ্জে পোষ্টিং নিয়ে বর্তমানে মহা আতংকের মাঝে রয়েছেন। পুলিশের প্রতিটি শাখার মুন্সীদের (অফিস ক্যারানী) কাছে তথ্য নিলেই বেড়িয়ে আসবে কে কে নতুন পোষ্টিং পেতে কত টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে !
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
নারায়ণগঞ্জ জেলার আলোচিত সমালোচিত পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের বিদায়ের মাত্র ১০ দিনের মধ্যে ফতুল্লা মডেল থানার দাপুটে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হাসানুজ্জামানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হযেছে । ফতুল্রা থানায় গত কয়েক মাসে পরিদর্শক (তদন্ত) হাসানুজ্জামানের কথার বাইরে কোন কাজই হতো না বলে ব্যাপকভাবে চাউর ছিলো । একই সাথে ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন কোন কাজই করতে পারতো না বলেও ব্যাপক গুঞ্জন ছিলো পুলিশ ছাড়াও সাধারণ মানুষের মুখে মুখে ।
কোন মামলা বা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটলে পরিদর্শক (তদন্ত) হাসানুজ্জামানকে জানাতেই হবে, এমন প্রথা ছিলো বাধ্যতামূলক । গাজীপুর জেলায় থাকাকালীন সময়েও পরিদর্শক (তদন্ত) হাসানুজ্জামান সকল কর্মকর্তাদের উপর এভাবেই খবরদারী করতেন বলেও সমালোচনা রয়েছে সর্বত্র ।
পুলিশ সুপার হিসেবে হারুন অর রশিদ নারায়ণগঞ্জে যোগদানের পর পরিদর্শক হাসানুজ্জামানসহ গাজীপুর জেলায় নানা অপকর্মের সাথে যুক্ত থাকা বেশ কয়েকজন কর্কর্তা ও পুলিশের কয়েকজন নিম্নপদস্থ কর্মচারী নারায়ণগঞ্জে যোগদান করে একই অপকর্ম অব্যাহত রাখে । যাদের মধ্যে অন্যতম জেলা পুলিশের আর ও ওয়ান ফারুক । ফারুক ছাড়াও আরো কয়েকজন পুরিশ সদস্য দিনকে রাত আর রাতকে দিন বানাতে পটু ছিলো বলেও চাউর রয়েছে জেলা পুলিশের সকল সদস্যদের মাঝে।
১৭ নভেম্বর রোববার সকালে ফতুল্লা থানার দাপুটে পরিদর্শক হাসানুজ্জামানকে প্রত্যাহারের পর এর পেছনে ‘প্রশাসনিক’ কারণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতনেরা। যদিও এর দুইদিন আগে শুক্রবার ১৫ নভেম্বর রাতে এ হাসানুজ্জামানের উপস্থিতিতে থানার ভিতরের তার কক্ষেই এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল থানা যুবলীগের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেলের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগও দায়ের করে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শতক ডিআইও-১ মমিনুল ইসলাম জানান, মূলত হাসানুজ্জামানকে প্রশাসনিক কারণে থানা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে ।
ফতুল্লা থানায় ওসি হিসেবে আসলাম হোসেন থাকলেও বিগত দিনে দোর্দন্ড দাপুটে ছিলেন পরিদর্শক হাসানুজ্জামান। অনেক পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, হাসানুজ্জামান যা বলতেন তাই হতো।
পুলিশের অনকে সদস্যরাই বলেন, এসপি হারুন কর্তৃক পরিচালিত টিমের অন্যতম প্লিয়ার ছিলো পরিদর্শক হাসানুজ্জামান । এমন একটা উইকেট পতন হবে তা সকলেই অনুধাবন করলেও এতো তারাতারি এই উইকেটটির পতন হবে তা কেউ চিন্তাও করে নাই ।
স্থানীয় সূত্র বলছে, গত ১৫ নভেম্বর রাতে ফতুল্লার কুতুবপুরে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংর্ঘষ হয়েছে। এসময় মারধরে আহত হয়েছে অন্তত ৮/১০ জন। আহতরা হলেন রাজিব, মোক্তার,হাসান, রাজু। তাদেরকে শহরের খানপুর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ফতুল্লার কুতুবপুরের মীর হোসেন মীরু ও চাঁদ শিকদার সেলিম বাহিনীর মধ্যে প্রভাব বিস্তার নিয়ে কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এ বিরোধের জের ধরে শুক্রবার রাতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল।
চাঁদ সেলিম জানান, বৃহস্পতিবার ফতুল্লা থানায় অভিযোগ দায়েরের পর এসআই মিজান ঘটনাস্থলে আসেন এবং পরদিন (শুক্রবার) রাতে আমাকে থানায় আসতে বলেন। সে মোতাবেক আমি থানায় প্রবেশ করছিলাম এমন সময় থানা থেকে বের হয়ে আসছিলেন মীর সোহেল আলী, শাহীনসহ আরও বেশ কয়েকজন। তখন মীর সোহেল আলী ও তার লোকজন থানার ভেতরই আমার উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে আমাকে মারতে মারতে থানা থেকে রাস্তার নিয়ে আসে। আবার এখান থেকে টেনে ওসি তদন্তের রুমে নিয়ে যায় আমাকে লকআপে ঢুকিয়ে দিবে বলে।
তিনি আরও বলেন, ওসি তদন্তের রুমে নেওয়ার পর তিনি আমাকে উল্টো ধমকাচ্ছিলেন আর বলছিলেন ‘থানায় আপনার কাজ কি, কেন এসেছেন!’ এভাবে থানার ভেতরই যদি আমাদের উপর হামলা করে তাহলে বাইরে আমাদের নিরাপত্তা কতটুকু এবার বুঝে নেন।









Discussion about this post