দুই মাসের বিদ্যুৎ বিল একসঙ্গে। কিন্তু বিলের পরিমাণ প্রায় চার বা পাঁচ মাসের। করোনা পরিস্থিতিতে এমন ভুতুড়ে বিল পেয়ে অনেকে বিস্মিত, বিক্ষুব্ধ ।
এমনকি করোনার সময় অনেক পরিবার নিয়ে মাসব্যাপী গ্রামের বাড়িতে। ঘরে কোনো বিদ্যুৎ খরচ হয়নি। সে মাসেও দেখা গেছে স্বাভাবিক সময়ের মতো বিল ধরা হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, করোনার কারণে মিটার রিডিং করতে বাসায় বাসায় যাওয়া সম্ভব হয়নি তাই গড় বিল ধরা হয়েছে।
তবে গড় বিলের নামে ভুতুড়ে বিল নিয়েই অভিযোগ বেশি পাওয়া যাচ্ছে গ্রাহকদের কাছ থেকে। এমন কয়েকটি ভুতুড়ে বিলের কপিও পাওয়া গেছে। মিটারে যে রিডিং বহাল আছে তার সঙ্গে প্রস্তুতকৃত বিলের কপির সঙ্গে কোনো মিল নেই বলছেন গ্রাহকরা।
নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ, নয়ামাটির অসংখ্য কল কারখানাসহ বিভিন্ন বাসা বাড়ি ও মার্কেটের বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীরা জানান, মার্চের ২৫ তারিখ থেকে ঘর তালা দেওয়া। বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়নি। অথচ বিদ্যুৎ বিল এসেছে শত শত / হাজার হাজার টাকা । মিটারের ইউনিট চেক না করেই বিল ধরিয়ে দিয়ে গেছে। বাসায় ভাড়াটেও নেই, কারখানায় উৎপাদন নেই, তাই ভাড়ার টাকাও নেই। কীভাবে এই অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করব। এমন বিক্ষুব্ধ মন্তব্য নগরীর অনেকের।
এমন ভূতুড়ে বিলের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করলে বিদ্যুৎ বিল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, যদি বেশি বিল দেওয়া হয়েও থাকে তা হলে পরের মাসে গ্রাহকদের বিদ্যুতের বিল পর্যায়ক্রমে কম আসবে।
এমন পদ্ধতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ , সোনারগাঁসহ বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, গড় বিলের নামে বিদ্যুৎ অফিস মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছেন। প্রতিটি বিলে গেল বছরের চেয়ে দেড় থেকে দ্বিগুণ বেশি করে দেওয়া হচ্ছে। এখানে বেশি ইউনিট দেখানোর কারণে বিলের ধাপও পরিবর্তন হচ্ছে। টাকার অংকও বাড়ছে। ওরা সমন্বয়ের কথা বলছে কিন্তু সেটা কীভাবে সম্ভব?
এদিকে এখনও ব্যাংকসহ রাজধানীর পরিস্থিতি স্বাভাবিক নেই। সেক্ষেত্রে বকেয়া বিল পরিশোধ না করলে লাইন কাটার মাইকিং শুনেছেন রাজধানীর নয়াপল্টনের একজন গ্রাহক। বহু গ্রাহক এখন বকেয়া ভুতড়ে বিদ্যুৎ বিলের চাপিয়ে দেওয়া বোঝা আর পরিশোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্নের হুমকির মধ্যে আছেন।
সারাদেশে গ্রাহকদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গণ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা কিছু কিছু জায়গা থেকে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে অভিযোগ পাচ্ছি। গ্রাহকদের এই অভিযোগগুলো সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। সকল বিতরণ সংস্থাকে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে গ্রাহক অসন্তোষ দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। দুর্যোগকালীন সময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার দেখা অনেক সময়ই সম্ভব হচ্ছে না। তাই অনেক ক্ষেত্রেই গড় বিল করা হচ্ছে। গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিল নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে বিতরণ সংস্থাগুলোকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।









Discussion about this post