দূষণ, যানজট, হকার, খুন, গুম ও সন্ত্রাসমুক্ত সবুজ পরিবেশে নদীকে রক্ষা করে মানসম্মত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা সহ পরিকল্পিত উন্নয়নের নিরাপদ বাসযোগ্য নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রত্যাশা জানিয়েছেন নগরবাসী।
২৭ ফেব্রুয়ারী শনিবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শহরের সরকারি গ্রন্থাগার মিলনায়তনে নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির উদ্যোগে ‘আমাদের নারায়ণগঞ্জকে কেমন দেখতে চাই? শিরোনামে নাগরিক মতবিনিময় সভায় বক্তারা ওই প্রত্যাশার কথা বলেন।
সভায় নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায় বলেন, ‘শীতলক্ষ্যা নদী রক্ষা করতে হবে। আমরা আমাদের পুরানো সেই শীতলক্ষ্যা নদী দেখতে চাই। যানজট মুক্ত শহর চাই। শহরে বাসস্ট্যান্ড থাকবে তবে সেটার শৃঙ্খলা থাকবে। শহরে ছিনতাই হয়। নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। ফুটপাত হকার মুক্ত করে মানুষের চলাচলের জন্য করতে হবে।’
আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সেক্রেটারী নাছির উদ্দিন মন্টু বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মশক নিধনের জন্য ওষুধ ছিটানো হয়। কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়। কেন্দ্রীয়ভাবে মশক নিধন কার্যক্রম নিতে হবে। ওয়াশার পানির বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে হবে।’
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজ বলেন, ‘গরীবদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল ছাত্র এক হবে না। কিছু ছাত্র পরীক্ষায় অকৃতকার্য হতে পারে তাই বলে তাদের পড়ার সুযোগ দেয়া হবে না সেটা হতে পারে না। তাদেরও পড়ার সুযোগ দিতে হবে এবং এক শ্রেনি থেকে অন্য শ্রেনিতে উর্ত্তিণ করতে হবে।’
স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে কেউ যদি উন্নয়ন করতে চায় একটি পক্ষ তাতে বাধা দেয়। আমরা উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হই। তাই অপশক্তির বিরোধে শক্ত ভূমিকা নিতে হবে।’
নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক (গণিত ও বিজ্ঞান) শ্রীকান্ত চন্দ্র নন্দী বলেন, ‘দূষন মুক্ত ও পলিথিন মুক্ত নারায়ণগঞ্জ চাই। নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি বহুতল ভবনের ছাদে ছাদ বাগান করা হোক।’
সমমনার সমন্বয়ক দুলাল সাহা বলেন, ‘যানজট এখন প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এজন্য চাষাঢ়া গোল চত্ত্বরের পরিধি বাড়াতে হবে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়ক ৪ লেনে করতে হবে। নগরীর মধ্যে ওভারব্রীজ ও ফুটওভারব্রীজ করতে হবে। এছাড়াও সিটি করপোরেশনের শুধু ভবন করলেই হবে না পার্ক ও খেলার মাঠ করতে হবে।’
গণসংহতি আন্দোলন জেলার সভাপতি তরিকুল সুজন বলেন, ‘শহরের বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা, ৫০ থেকে ১০০ গজ পরপর ময়লার ফেলার ব্যবস্থা রাখত হবে এবং অবৈধ অটোরিকশা বন্ধ করতে হবে।’
নারী উদ্যোক্তা লায়লা হক বলেন, ‘নারীদের জন্য বিনোধন কেন্দ্র থাকতে হবে। নারীদের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।’
মহিলা পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি লক্ষ্মী চক্রবর্তী বলেন, ‘নারীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা হয়। স্কুলগুলোতে ভালো শৌচাগার নেই। থাকলেও সেগুলো নোংরা হয়ে থাকে। নগরীতে উন্নত মানের শৌচাগার নেই। এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বী বলেন,‘নাগরিক কমিটি পূর্বেও অনেক উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন। আশা করছি এবারও সকলের মতামতগুলো নিয়ে মানুষের বাসযোগ্য নিরাপদ নারায়ণগঞ্জ গড়তে যথাযথ ভূমিকা রাখবেন সেই প্রত্যাশা করি।’
নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক বলেন, ‘আমরা সবাই বাসযোগ্য নারায়ণগঞ্জ দেখতে চাই। নারায়ণগঞ্জকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করতে নাগরিক হিসেবে আপনাদের প্রত্যাশাগুলো আমরা জানলাম। সবার প্রত্যশাগুলো আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তুলে ধরবো। এসব কিছু বাস্তবায়নে আমরা সর্বক্ষনিক আন্দোলন সংগ্রাম করে যাবো। অচিরেই সকলের প্রস্তাবগুলো নিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’









Discussion about this post