শহরের চাষাড়ায় রেল স্টেশন এলাকাতে মাদক বিক্রি ও একটি ক্লাব দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে রুবেল নামের যুবক নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার ২৯ জুন দায়েরকৃত মামলায় ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০ জন অজ্ঞাত দেখিয়ে ৬৩জন সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে নিহতের ভাই রাজীব হাসান মামলাটি দায়ের করেন।
ফতুল্লা থানার পুলিশ ওই ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। আটক ও আসামীরা সকলেই ইসদাইর এলাকার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ।
নিহত রুবেল হাসান (৩০) তিনি সদর উপজেলার ইসদাইর এলাকার শামসুল হকের ছেলে এবং পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী ছিলেন।
আটককৃতরা হলেন মো. শিমুল (৩৮), সম্রাট (২০), বিজয় (১৮), সেলিম মিয়া (৩৫), রাকিব হোসেন (২৫) ও আলী মিয়া (২৫)। তারা সকলেই ইসদাইর এলাকার বাসিন্দা।
মামলার আসামীরা হলো ইসদাইরের জামান (৪০), শিমুল (৩৮), সোহাগ (৩৭), জুয়েল (৩৫), স¤্রাট (২০), বিজয় (১৬), কৃষ্ণ া(২৫), কে-টু (২২), রাব্বি (২২), মানিক (২৫), মুন্সী (২৫), আল আমিন (২৪), শুভ (২১), সজিব (২০), জুয়েল (২১), সাগর ওরফে দাত ভাঙ্গা সাগর (২৫), সেলিম(৩৫), আলী (২৮), ওয়াজিব (৩০), মন্টু (২৮), মিলন (৩০), আমিনুল (২১), ঠোট কাটা স¤্রাট (২৪), অপু (২১), খায়রুল (৩০), জন (২৭), রাকিব ওরফে টাইগার (২৫), ওয়াদ্রিব আহাম্মদ অনন্ত (২৭) প্রমুখ।
এলাকাবাসী জানান, উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা বস্তিতে মাদকের শেল্টার দিয়ে মাসোহারা আদায় করে থাকে। এছাড়া ইসদাইর এলাকায় জমি ক্রয় বিক্রয় করলে তাদের চাঁদা দিতে হয়। ভবন নির্মাণ করলে তাদের কাছ থেকে নির্মাণ সামগ্রী নিতে হয়। এলাকায় ঘর ভাড়া নিলে তাদের কাছ থেকে ডিশ ও ইন্টারনেটের সংযোগ নিতে হয়। মাস শেষে শ্রমিকরা বেতন নিয়ে বাসায় ফেরার পথে পকেট হাতিয়ে টাকা রেখে দেয় তারা। তাদের কথার অবাধ্য হলে ধরে নিয়ে চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন।
স্থানীয় ও হাসপাতালে আহতদের নিয়ে আসা ব্যক্তিদের মাধ্যমে জানা যায়, চাষাঢ়ায় রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকাতে মাদকের একটি স্পট পরিচালনা করতো মানিক ও শামীম গ্রুপ। দীর্ঘদিন ধরেই তারা এই স্পট নিয়ন্ত্রণ করতো। সম্প্রতি স্পটটিতে ভাগ বসাতে শুরু করে ইসদাইর বুড়ির দোকান এলাকার জুয়েল ও সোহাগ গ্রুপ। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কয়েকদিনে ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সোমবার সন্ধ্যায় জুয়েল, জামান ও সোহাগ গ্রুপের ২০ থেকে ২৫ জন যুবক ইসদাইরের মাদক স্পটে এসে মানিক ও শামীম গ্রুপের সদস্যদের মারধর করে। মারধরের এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মাঝে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পরে রাত ৯টায় আবারও জুয়েল, জামান ও সোহাগ গ্রুপ অস্ত্র সস্ত্র হামলা চালায়। এসময় আগে থেকে প্রস্তুত দেশীয় অস্ত্র প্রস্তুত রেখে পাল্টা হামলা চালায় মানিক ও শামীম গ্রুপ। আহত হয় জামান, জুয়েল সোহাগ সহ বেশ কয়েকজন। প্রায় আধাঘণ্টার সংঘর্ষে আশেপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সেই সংঘর্ষের মাঝে পড়ে রুবেল জখম হয়। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানান, সোমবার রাতে চাষাঢ়া রেলস্টেশনের কাছে একটি ক্লাব ঘর দখল নিয়ে একই গ্রুপ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় পথচারী ওই রাজমিস্ত্রি রুবেল সংঘর্ষের মাঝখানে পড়ে সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে প্রান হারায় ।









Discussion about this post