মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, সারাদেশে সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র রুখে না দিয়ে কিছু নেতা তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছেন। এই নেতাদের ‘চুনোপুটি নেতা’ সম্বোধন করে ধিক্কার জানিয়েছেন মেয়র আইভী। একই সাথে তাদের সাবধান হতে পরামর্শ দিয়ে মিথ্যাচার বন্ধ করতে বলেছেন তিনি।
শনিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তির পক্ষে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এই আহ্বান জানান। মেয়র আইভীর নেতৃত্বে নগরীর চাষাঢ়া থেকে মন্ডলপাড়া পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই মানববন্ধনে অংশ নেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ও ধর্মীয় সংগঠনের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী।
এই সময় মেয়র আইভী বলেন, ‘এই নারায়ণগঞ্জে যারা সম্প্রীতির কথা বলে জাতীয় স্বার্থকে বাদ দিয়ে ব্যক্তি আইভীকে নিয়ে রাজনীতি করেন তাদেরকে ধিক্কার জানাই। যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়িয়ে বহির্বিশ্বের ষড়যন্ত্রকে রুখে দেওয়ার কথা, তখন নারায়ণগঞ্জের চুনোপুটি নেতারা আইভীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কথা বলেন, পক্ষান্তরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধাচারণ করেন। দেশ যখন অস্থির, সারা বাংলাদেশে যখন আগুন জ্বালানোর চেষ্টা চলছে তখন শহীদ মিনারের মতো পবিত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে যারা মিথ্যাচার করে তারাই এই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর জন্য উসকানি দিচ্ছে বলে আমি মনে করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে বিগত এক বছর যাবৎ অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে চক্রান্ত করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি তাদেরকে সাবধান করে দিতে চাই। এখানে আমরা সকলে ভাই-বোন। সকল ধর্মের মানুষেরই রক্ত লাল। ধর্মের কোথাও বিধর্মীদের আঘাত করার কথা উল্লেখ নাই। সুতরাং যারা গোপণে এই কাজটি করেন তাদেরকে সাবধান করতে চাই। এই সম্প্রীতির শহরে কেবল রাজনৈতিক কারণে ব্যক্তি আইভীকে ভোট না দিতে ষড়যন্ত্র করার জন্য হিন্দুদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করবেন না। করার চেষ্টাও করবেন না।’
সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেয়র আইভী বলেন, ‘সকল ধর্মের ভাইদের প্রতি আহ্বান জানাই, একে অন্যের প্রতি যেন দাঁড়াতে পারি, ইসলাম ধর্মকে যেন মেনে চলতে পারি। নবী করিম (সা.) এর মতো অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীল হতে হবে। কারও প্রতি জুলুম করে বেহেশতে যেতে পারবেন না। যারা জুলুম করেন তারা মানুষ না, তারা জঙ্গি। যদি মানুষ হও তাহলে এই ধরনের অপকর্মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও, রুখে দাঁড়াও।’
সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সভাপতিত্বে এই মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য আনিসুর রহমান দিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল কাদির, আদিনাথ বসু, আসাদুজ্জামান, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আবু ইসহাক, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মরিয়ম কল্পনা, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রানু খন্দকার, সদস্য শামসুজ্জামান ভাষানী, ইউসুফ ভূইয়া ননী, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আহসান হাবীব, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও স্বাচিপ নেতা ডা. আতিকুজ্জামান সোহেল, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ আফসানা আফরোজ বিভা, প্যানেল মেয়র-৩ মিনোয়ারা বেগম, কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা, কবির হোসাইন, অসিত বরণ বিশ্বাস, শাওন অংকন, ফয়সাল সাগর, হোসনে আরা, রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌসি নীলা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক নিজাম উদ্দিন আহমেদ, জেলা যুবলীগের সহসভাপতি আহাম্মদ আলী রেজা রিপন, মহানগর যুবলীগের সহসভাপতি কামরুল হুদা বাবু, সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জ্বল, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের নেতা আলহাজ্ব আবু জাফর, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি শংকর সাহা, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়সহ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের নেতৃবৃন্দ, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।









Discussion about this post