নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের নাম করে বিভিন্ন অবৈধ সেক্টর থাকে মাসোয়ারা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে পুলিশের সাবেক কনস্টেবল নূরুর বিরুদ্ধে। তিনি অবৈধ কারবারিদের কাছে ক্যাশিয়ার নূরু হিসেবেই পরিচিত।
অভিযোগ উঠেছে, নূরু নিজেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমের এলাকার মানুষ এবং তার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে সর্বত্র জাহির করে থাকে। তবে, তার এমন দাবি সম্পর্কে পুলিশ সুপার আদতে জানেন কিনা, এ নিয়ে রয়েছে সন্দেহ। অনেকের মতে, নুরু পুলিশের ক্যাশিয়ার পরিচয় দিয়ে যেভাবে চাঁদাবাজি করে বেড়ায় তা এসপি জানেন কিনা, সে নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
এদিকে সূত্র জানায়, বিভিন্ন অবৈধ কারখানা, লবন, পলিথিন ফ্যাক্টরী, মাদক, চোরাই তেল ব্যবসাসহ অসংখ্য স্থান তেকে প্রতি মাসের পুলিশের নাম করে অন্তত ১০ লাখ টাকারও বেশি উত্তোলন করে থাকেন ক্যাশিয়ার নূরু। তিনি ১৯৮২ সালে পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে যোগদান করেন নুরু। বর্তমানে তিনি পুলিশ বাহিনী থেকে অবসরে আছেন।
তবে, নূরু সম্পদের হিসেবে যে কারো চোখই কপালে উঠবে। বর্তমানে তার তিনটি বহুতল ভবন, একাধিক হায়েস, পরিবহনসহ নানা সম্পদ। একজন কনস্টেবলের এত সম্পদ কীভাবে ! এ নিয়ে সবার মাঝেই রয়েছে আলোচনা। এই আলোচনার সূত্র ধরে জানা গেছে, নূরু পুলিশের কনস্টেবল থাকা অবস্থাই ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের নামে বিভিন্ন অবৈধ কারবার থেকে মাসোয়ার উত্তোলন করতো। তখন থেকেই তার নামের পাশে ক্যাশিয়ার শব্দটি যুক্ত হয়ে যায়।
সূত্র জানায়, বর্তমানে নূরু সম্পদের পরিমাণ কম করে হলেও শত কোটি টাকার উপরে হবে। শুধু শহরেই নয়, গ্রামেও রয়েছে তার অঢেল সম্পদ। যা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে। একজন কনস্টেবল কী করে এত সম্পদের মালিক হতে পারে, এ ব্যাপারে তদন্ত প্রয়োজন বলেও মনে করছেন সচেতন মহল।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম নিতান্তই একজন ভদ্রলোক। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পারভেজ চৌধুরী ভালো মানুষ। কিন্তু তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে সে কীভাবে অবৈধ ব্যবসার থেকে টাকা উঠায় তা ভেবেই বিস্মিত মানুষ। এতে করে তাদের ইমেজও সঙ্কটের মুখে পড়ছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। এ ব্যাপারে তাদের সজাগ দৃষ্টি রাখাসহ ক্যাশিয়ার নূরু অপকর্মের লাগাম টেনে দরকার বলে মনে করেন তারা।
সূত্র জানায়, গেল কয়েক মাস পূর্বে একটি দূর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন নূরু। বর্তমানে তিনি অনেকটা খুঁড়িয়ে হাঁটে। অসুস্থ অবস্থাও বিভিন্ন স্থান থেকে তোলাবাজি চালিয়ে গিয়েছেন নূরু। বর্তমানে তিনি সিএনজিতে করে এসব তোলাবাজি চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
তবে, এ ব্যাপারে ক্যাশিয়ার নূরুর সাথে কথা হলে তিনি জানিয়েছেন, বর্তমান তিনি সলিড। এক টাকাও কোথাও থেকে তুলেন না। আগে তুলতেন। এখন এসবে নিজেকে জড়ান না। তিনি বলেন, আমি হজ করে এসেছি। যদি মিথ্যা বলি, তবে আমার হজ যেন কবুল না হয়।
অন্যদিকে তার সঙ্গেরই অপর একজন জানিয়েছেন, নূরু কাবা, মসজিদ ধরেও মিথ্যা বলতে পারে। তিনি নিজে বাঁচার জন্য হেন কোনো কাজ নেই যে সে করতে পারেন না। অতীতে অনেক পুলিশ অফিসারের উপরেও তিনি দোষ চাপিয়ে দিয়ে নিজে নিরাপদ থেকেছেন।









Discussion about this post