নারায়ণগঞ্জ হেফাজতের কর্মসূচীর কারণে লাখো মানুষকে চরম ভোগান্তির মধ্যে পরতে হয়েছে ।
২ নভেম্বর সোমবার সকালে হেফাজতের ঢাকামুখী কর্মসূচীর কারণে চাষাঢ়া থেকেই সাইনবোর্ডগামী সকল যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।
এছাড়া ব্যারিকেডের কারণে মহাসড়কেও যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে করে লোকজনদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। জানা গেছে, সোমবার রাজধানীর বাইতুল মোকারমের সামনে হেফাজতের পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশ ছিল।
ওই সমাবেশ শেষে হেফাজত ফ্রান্সের দূতাবাস ঘেরাওয়ের ঘোষণা ছিল। আগে থেকেই নারায়ণগঞ্জ হেফাজত ঘোষণা দেন তারা নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটি মসজিদের সামনে জড়ো হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকে শত শত লোকজন মসজিদের সামনে জড়ো হয়। সেখানে ছিল ২০-২২টি বাস ও ট্রাক। এছাড়া প্রচুর মটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার ছিল। কিন্তু পুলিশ এসব যান চলাচল করতে দেয়নি। পরে লোকজন বাস ট্রাক থেকে নেমে পায়ে হেঁটে সাইনবোর্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এদিকে পরিবহন বন্ধ করে দেওয়ার কারণে হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে পায়ে হেঁটেই চলাচল করতে দেখা যায়।
তাদের পোহাতে হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। তবে সাইনবোর্ডে আগে থেকেই ঢাকামুখী যান চলাচল বন্ধ থাকায় সেখানে সকাল সাড়ে ১০টায় বাধার সম্মুখীন হন হেফাজতের লোকজন। পরে সেখানে জেলা হেফাজতের আমীর আবদুল আউয়াল মোনাজাত করে চলে যান।
এ সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কে পুলিশ ব্যারিকেড দিলে উভয় সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। তবে পরবর্তীতে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে পায়ে হেঁটে ও মোটর সাইকেলে বায়তুল মোকাররমের সামনে সমাবেশে যোগদান করে কয়েক হাজার নেতাকর্মী।
নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজতে ইসলামের সমন্বয়ক ও মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান সাংবাদিকদের কে বলেন, ভোর থেকেই ঢাকার উদ্দেশ্যে বিভিন্নভাবে নেতাকর্মীরা ঢাকার সমাবেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। তবে বিভিন্ন চাষাঢ়া, শিবু মার্কেট, জালকুড়ি, সাইনবোর্ডসহ বিভিন্ন স্থানে তাদের নেতাকর্মীদের বাধা দেয় পুলিশ। এসব বাধা উপেক্ষা করে প্রায় ৫০ হাজার নেতাকর্মী বায়তুল মোকাররমের সামনে সমাবেশে যোগদান করে বলে দাবি করেন মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান।
তিনি আরও বলেন, ‘সকাল ৯টায় নগরীর ডিআইটি এলাকায় জড়ো হয় নেতাকর্মীরা। শহর থেকে বাস-ট্রাক-পিকআপসহ ২০টি পরিবহনে এসব নেতাকর্মীরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার কথা ছিল। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আরও অর্ধশতাধিক পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়। পরে সেখানে পুলিশ বাধা দেয়। এরপর চাষাঢ়া, শিবু মার্কেট এলাকাতেও বাধা দেয় পুলিশ। সর্বশেষ জালকুড়িতে বাধা দিলে নেতাকর্মীরা সবাই পায়ে হেটে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। ১২টা পর্যন্ত বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনের সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ থেকে আগত নেতাকর্মীরা যোগদান করেন। পরে সবাই ফ্রান্স দূতাবাসের অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। শান্তিনগরে পুলিশি ব্যারিকেডে বাধা পড়লে অনেকটা দূরে অগ্রসর যাই আমরা।’
ভোর থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সড়কে ছিল সাঁজোয়া যান ও জলাকামান। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার সাইনবোর্ড এলাকায় ছিল বিপুল সংখ্যা র্যাব-পুলিশ-ডিবি সদস্যরা। সকাল পৌনে নয়টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কটিতে ব্যারিকেড দেয়া হয়। পরবর্তীতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ মহাসড়কেও ব্যারিকেড দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় উভয় সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। কর্মমুখী যাত্রী ও অন্যান্যরা পড়েন বিপাকে। অনেকেই পরিবহন থেকে নেমে পায়ে হেটে গন্তব্যস্থলে পৌছান। বেলা ১১টার দিকে ব্যারিকেড ছেড়ে দেয় পুলিশ। এরও প্রায় ঘন্টাখানেক পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।









Discussion about this post