ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে দেশের সাধারণ জনগণের নিঃসঙ্কোচে কথা বলার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি ও কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সভাপতি ভবানী শংকর রায়ের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি, বাসদের জেলা সমন্বয়কারী নিখিল দাস, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজ, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্তী, সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আওলাদ হোসেন, সমাজ অনুশীলন কেন্দ্রের সংগঠক রঘু অভিজিৎ রায়, সমমনার সভাপতি দুলাল সাহা, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন মন্টু, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন জোটের সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদ।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদ (৫৩) মারা যান। তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে ছিলেন। এই লেখকের মৃত্যুর প্রতিবাদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে চোখ-মুখে কালো কাপড় বেঁধে অবস্থান নেন সংস্কৃতি কর্মী অভি জাহিদ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার লেখক মুশতাক আহমেদ বিনা বিচারে কারাবন্দী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। আদালতে ছয়বার তাঁর জামিন চাওয়া হলে আদালত তা নামঞ্জুর করে দেয়। তাঁর অপরাধ ছিল তিনি এ দেশের দুর্নীতিবাজদের উপর আঘাত করেছেন। এ সরকার জোসেফের মত আসামিকে জীবন ভিক্ষা দিতে পারে আর সামান্য একটা কার্টুন শেয়ার করায় বিনা বিচারে কারাবন্দী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করতে হয় একজন লেখককে। দেশে এমনই শাসন চলছে।
লেখক মুশতাকের মৃত্যুর প্রতিবাদে আয়োজিত মশাল মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জের নিন্দা জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, নাগরিক পরস্পর মতামত বিনিময় না করলে সেখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না। যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুকে স্বাভাবিক মেনে নিতে পারে সে সরকার কোনোভাবেই জনগণের সরকার হতে পারে না। জনগণের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেলে অবশ্যই তারা রাস্তায় নামবে এবং এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটাবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে শুধুমাত্র তাদের অনিয়ম, দুর্নীতি, দুঃশাসন, খুন ও লুটপাটের বিরুদ্ধে জনগণের কণ্ঠ রোধ করার জন্য। তারা যে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে, বন উজাড় করছে, নদী ধ্বংস করছে; সর্বোপরি দেশ ধ্বংস করছে তার প্রতিবাদ যাতে না হয় সেজন্য এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। জনগণের স্বার্থে এই আইন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। মানুষ নিঃসঙ্কোচে কথা বলার অধিকার চায়।
এদিকে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে বাম ছাত্র সংগঠনের মশাল মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে দুপুরে শহরের চাষাঢ়ায় বিক্ষোভ মিছিল করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।









Discussion about this post