পাসপোর্ট অফিস নতুন হলেও পুরনোর চরিত্র এখনো না বদলানোর কারণে প্রতিনিয়তঃ ঘটছে এমন অপ্রীতিকর ঘটনা । অনেক ঘটনা ধামাচাপা পরলেও এবার গ্রাস ভাংচুরসহ আটকের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম দিয়েছে নতুন এই নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস । পাসপোর্ট অফিসে কি করে হয়রানীর মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়া যায় তার হিসাব খুব ভালো করে জানা রয়েছে কর্মমচারীদের সকলের । নতুন এই কার্য্যালয়ে সেই পুরানো বদঅভ্যাসের কারণে এমন কান্ড ঘটেছে বলে জোড় দাবী করেছে প্রত্যাক্ষদর্শী কয়েকজন ভূক্তভোগি
উদ্বোধনের মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গ্রাহক হয়রানি ও কানাডার নাগরিকত্বপ্রাপ্ত এক প্রবাসী ব্যক্তিকে মারধরসহ শারীরিক লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। তবে তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের পাল্টা অভিযোগ, তিনি কয়েকজন কর্মচারীর ওপর হামলাসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছেন।
রোববার দুপুরে সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার ভূঁইগড় এলাকায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশে সদ্য উদ্বোধন হওয়া নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের স্থায়ী কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজমল হোসেন নামের ওই প্রবাসীকে পুলিশ আটক করেছে।
শহরের উত্তর চাষাঢ়া এলাকার মুক্তিযোদ্ধা খাজা মোশারফ হোসেনের ছেলে কানাডা প্রবাসী আজমল হোসেন মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনের পূর্বে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মানছুরা বেগমকে নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। গত তিন মাস আগে তাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সম্প্রতি এই দম্পতি পুনরায় কানাডায় ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাই শিশুকন্যা আরিজার পাসপোর্ট করতে রোববার বেলা ১১টায় আরিজাকে নিয়ে আজমল ও তার স্ত্রী মানছুরা নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে যান।
মেয়ের পাসপোর্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র মহসিন নামের এক অফিস সহকারীর কাছে জমা দিলেও এই কর্মচারী তাকে নানাভাবে হয়রানি করেন। তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে কাগজপত্র ছুড়ে ফেলে দেন। এতে আজমল হোসেন উত্তেজিত হয়ে উঠলে মহসিনের সঙ্গে বাগ বিতণ্ডা সৃষ্টি হয়।
এক পর্যায়ে তিনি কাউন্টারে হাত দিয়ে ধাক্কা দিলে কাচ ভেঙে যায়। এ সময় অফিস সহকারী মহসিনসহ আরও কয়েকজন কর্মচারী মিলে তাকে মারধরসহ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করলে তিনি গুরুতর আহন হন। খবর পেয়ে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আজমত হোসেনকে আটক করে।
প্রত্যাক্ষদর্শী অনেকে্ে বলেন, পাসপোর্ট অফিসে সেই পুরানোর চেহারার লোকজন কি করেন তা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ও ফুটেজের বাইরে থেকেও দেখা যায় । টাকা দিলে সব ঠিক, আর টাকা না দিলেই সব সঠিক কাগজপত্র বেঠিক হয়ে যায় । আর তখন হয় টাকার খেলা । আর টাকা দিলেই সব কিছুই তড়িৎ গতিতে ঠিক হয়ে যায় । এমন ঘটনায় ভাংচুর কেন হয়েছে তা যাচাই করতেই সিসি ফুটেজ খতিয়ে দেখার দাবী জানিয়েছেন অনেকেই ।
নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো. মাহামুদুল হাসান দাবি করেন, আজমত হোসেনের কাগজপত্রগুলো সত্যায়িত করা ছিল না। এ নিয়ে অফিস সহকারীর সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তিনি ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার কাউন্টারের কাচ ভেঙে ফেলাসহ কয়েকজন কর্মচারীকে গালাগাল ও মারধর করেছেন।
তবে প্রবাসী আজমত হোসেনের দাবি, তাকে হয়রানি ও লাঞ্ছিত করায় উত্তেজিত হয়ে কাউন্টারে ধাক্কা দিলে কাচ ভেঙে যায়। তিনি কারও ওপর হামলা করেননি। পুলিশ জানিয়েছে, পাল্টাপাল্টি অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ৮ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের স্থায়ী কার্যালয়ের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে গত ছয় বছর সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুঁড়ি এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে অস্থায়ীভাবে কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।









Discussion about this post