আমি ১০০ ভাগ নিরপেক্ষতা রেখে কাজ করেছি ১৬ বছরের চাকরির জীবনে। আমি কোনো হুমকি-ধমকিতে নেই। কিন্তু কাজের বেলায় আমি কারও কথা শুনি না। আমাকে তদবির করতে পারবে কিন্তু কাজ হবে না। আমি তদবির শুনি কিন্তু কাজ করি না। আামর পুলিশ সদস্যদের পেশাদারিত্বের সাথে যাতে কাজ করে সে লক্ষ্যে প্রথমেই জেলা পুলিশকে সাজাবো । পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদানের পর নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিকদের সাথে স্বচ্ছতার সাথে কাজ করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন মোহাম্মদ জায়েদুল আলম । এরপর নিজ দপ্তরের নানা কাজে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে প্রথমেই প্রায় অর্ধ শতাধিক পুলিশ সদস্যদের রদবদল করলে আলোচনায় উঠে আসেন এসপি মোহাম্মদ জায়েদুল আলম ।
এনএনইউ ডেক্স :
এমন রদবদল প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ জেলায় নব যোগদানকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম জানান, বদলি রুটিন ওয়ার্ক। দেখা যাচ্ছে প্রয়োজনের তুলনায় কিছু কিছু থানায় অতিরিক্ত অফিসার রয়েছে কিন্তু সে তুলনায় ডিবি, ডিএসবিতে লোক সঙ্কট। তাই থানা থেকে লোক সরিয়ে এনে যেখানে সঙ্কট রয়েছে সেখানকার ঘাটতি পূরণ করা হবে।
তিনি আরও জানান, যাদের বদলী করা হয়েছে তাদের কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। এই বদলী পুলিশের চলমান প্রক্রিয়া।
এক সূত্র মতে, ১ জানুয়ারি বিকেলের দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের নবাগত পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই বদলীর আদেশ দেওয়া হয়েছে । বদলিকৃতদের মধ্যে আছেন- সোনারগাঁও থানার ১৪, রূপগঞ্জ থানার ১৪, আড়াইহাজার থানার ৭, ফতুল্লা থানার ৭, বন্দর থানার ৩, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ২, সদর মডেল থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা । তবে একটি অসমর্থিত সূত্র জানিয়েছে জেলার ৭ থানাতেই বদলীর সংখ্যা অর্ধশতর বেশি হবে। এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সোনারগাঁ থানার সেকেন্ড অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানা, আবুল কালাম আজাদ, তাহিদুল্লাহ, রাজু মন্ডল, হাবিব ও আপন কুমার মজুমদার এবং সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নারায়ণ ভৌমিক, নাজমুল হুদা, হাওলাদার ওমর, শাহীন উল্লাহ ও মিজানুর রহমান।
এছাড়াও রূপগঞ্জ থানার ১৪ কর্মকর্তাকে বদলীর আদেশ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে উপ-পরিদর্শক (এসআই) ৭ জন এবং সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ৭ জন।
ফতুল্লাতে ৭ জন, বন্দরে তিন জন, সিদ্ধিরগঞ্জ দুই জন ও সদরে একজন কর্মকর্তা।
এরমধ্যে সদর থানায় এসআই শহীদ এবং সিদ্ধিরগঞ্জে আল আমিন নামে একজন এএসআইকে বদলী করা হয়েছে ।
সোনারগাঁ থানাপুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, কোনো রকম অভিযোগ নয় এই বদলী রুটিন মাফিক করা হয়েছে ।
ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন ৭ জন বদলী করা হয়েছে শুনলেও এ সংক্রান্ত কোনো কাগজ তিনি হাতে পাননি। পরে বিস্তারিত জানাতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।
বন্দর থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন তার থানা থেকে তিনজনকে বদলী করা হয়েছে। তবে, তিনি বাইরে থাকার কারণে বদলীকৃত তিনজনের নাম জানাতে পারেননি ।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) কামরুল ফারুক জানিয়েছেন তার থানা থেকে আল আমিন নামে ২জন এএসআইকে বদলী করা হয়েছে ।
সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন, ৩১ ডিসেম্বর তাদের থানা থেকে শহীদ নামে একজন এসআইকে বদলী করা হয়েছে ।
রূপগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানিয়েছে তার থানা থেকে ১৭ জন এসআই ও এএসআইকে বদলী করা হয়েছে ।
আড়াইহাজার থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জানিয়েছে তার থানাতে কাউকে বদলী করা তথ্য তিনি জানেন না ।
তবে অসমর্থিত একটি সূত্র জানিয়েছে আড়াইহাজার থানাতেও ৭ কর্মকর্তাকে বদলী করা হয়েছে।
নতুন বছরের শুরুতেই জেলার ৭ থানার প্রায় ৪৮ কর্মকর্তার বদলি করা হয়েছে । তবে, এ সংখ্যা ধাপে ধাপে বাড়বে বলে জানা গেছে । যদি বদলির প্রকৃত সংখ্যা দায়িত্ব নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের কেউও জানাচ্ছেন না। এসব কর্মকর্তার মধ্যে একজন পরিদর্শক, ২২ জন এসআই, ২১ জন এএসআই এবং বাকি ২৫ জন কনস্টেবল। জেলায় এই প্রথম একসাথে এত সংখ্যক পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তার বদলির ঘটনা ঘটলো ।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশের আর ও ওয়ান ফারুন নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেটকে বলেন, “পুলিশ সুপার মহদয় যেখানে যতটুকু চাহিদা আছে সে মোতাবেক রদবদল করছেন । এক্ষেতে এটি কোন বদলীর বিষয় নয় । আমি এএসআই দের বিষয়টি দেখি । মোট ২১ জন এএসআই দের রদবদল করা হয়েছে । অপর সকল তথ্য রয়েছে এএসপি হেড কোয়ার্টার সুবাস সাহেবের কাছে ।”









Discussion about this post