নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) নির্বাচন কে ঘিরে এখনো ধোঁয়াশা কাটছে না বিএনপির। কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। বিপরীতে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য। কেউ কেউ আবার স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন ফরমও সংগ্রহ করেছেন। এ নিয়ে নেতাকর্মীরা আছেন দোলাচলে।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে আটজন মেয়র পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এদের মধ্যে দুজন বিএনপি নেতাও আছেন। এরা হলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল ও সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পাশাপাশি তারা নির্বাচনী মাঠেও নেমেছেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগও রাখছেন। একই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির প্রভাবশালী নেতা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারও নির্বাচনের ইচ্ছা পোষণ করছেন।
এর আগে ১ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার এক কুলখানি অনুষ্ঠানে এসে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত বা আলোচনা হয়নি। তবে বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে দলীয়ভাবে কোনো নির্বাচনেই অংশ নেবে না। এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠ নির্বাচন সম্ভব নয়। বর্তমান সরকার সব নির্বাচন তাদের মতো করে পরিচালনা করছে।
কিন্তু নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতারা মির্জা ফখরুলের সেই বক্তব্যের প্রাধান্য দেননি। ৫ ডিসেম্বর মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল ও সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
নির্বাচন প্রসঙ্গে এটিএম কামাল বলেন, আমার দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনে না গেলে আমি স্বতন্ত্র নির্বাচন করবো। দেশে নির্বাচন ব্যবস্থা শেষ করে দিয়েছে এ আওয়ামী লীগ। তবুও আমি নির্বাচনে অ্যাসিড টেস্ট হিসেবে অংশ নিচ্ছি।
অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, দল নির্বাচনে যাবে কি না আমার জানা নেই। তবে দল যদি নির্বাচনে যায় এবং আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে। এজন্য আমি মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করেছি। তবে নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারবে কি না তা নিয়ে ভোটারদের শঙ্কা আছে। সুষ্ঠু ভোট হলে আমি জয়ী হবো।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, দল যদি সিদ্ধান্ত দেয় তাহলে নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে। দলের নির্দেশনা তো মানতেই হবে। সাধারণ মানুষজনও আমাকে চাচ্ছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই দিনভর আমার বাড়ি লোকে লোকারণ্য হয়ে যাচ্ছে। সবার দাবি, আমাকে নির্বাচনে দাঁড়াতেই হবে। ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহল থেকে অনেকেই আমাকে প্রার্থী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ২০১১ সালে আমাকে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যে কারণে ২০১৬ সালে আমি প্রার্থী হতে চাইনি। কিন্তু এবার আর না করতে পারবো না। দল যদি বলে স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য তাহলেও নির্বাচনে অংশ নেবো।
তবে এসব বিষয় নিয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা রয়েছেন ধোঁয়াশায়। অন্যদিকে নির্বাচনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময়ও ঘনিয়ে আসছে। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে হবে। যদি নির্বাচনে অংশ নিতেই হয় তাহলে আগে থেকেই মাঠে নামার কথা বলছেন বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে দলীয়ভাবে কোনো নির্বাচনেই অংশ নেবে না বিএনপি ।









Discussion about this post