নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নিখোঁজের সাত মাস পর লিটন মিয়া (৪৫) নামে এক রং মিস্ত্রীর কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার চনপাড়া এলাকার সিটি গ্রুপের বালুর মাঠে বালু খুঁড়ে লিটনের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।
বিশেষ প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নিখোঁজের সাত মাস পর লিটন মিয়া (৪৫) নামে এক রং মিস্ত্রীর কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার চনপাড়া এলাকার সিটি গ্রুপের বালুর মাঠে বালু খুঁড়ে লিটনের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
নিহত লিটন মিয়া রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া গ্রামের সাহেদ আলীর ছেলে। তিনি স্থানীয় পুর্বগ্রাম এলাকায় একটি জাহাজ নির্মান প্রতিষ্ঠানে (ডকইয়ার্ডে) রংমিস্ত্রী হিসেবে কাজ করতেন।
রূপগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজিম উদ্দিন জানান, গত সাত মাস আগে লিটন মিয়া নিখোঁজ হয়েছে বলে একটি সাধারন ডায়েরী করেন লিটনের স্ত্রী রোকেয়া আক্তার মুন্নি। পরে পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে সন্দেহজনকভাবে নিখোঁজ লিটনের শ্যালক শাকিল, মিলন, আলাউদ্দিন, তার সহযোগী রংয়ের ঠিকাদার মুসাসহ ছয় জনকে আটক করে।
পরে আটকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে লিটন হত্যাকান্ডের রহস্য বেরিয়ে আসতে শুরু করে। আটককৃতদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শনিবার সন্ধ্যায় চনপাড়া এলাকায় একটি বালুর মাঠে বালু খুঁড়ে লিটনের কঙ্কাল উদ্ধার করে। তবে, হত্যাকান্ডের বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে বলে জানান এসআই নাজিম।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সুত্র জানায়, লিটন মিয়া প্রায় এক যুগ পুর্বে চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্রের সামসু রাড়ীর মেয়ে রোকেয়া আক্তার মুন্নিকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়।
চনপাড়া পূর্ণবাসন কেন্দ্রে লিটন মিয়ার শশুর সামসু রারীর একটি প্লট ছিলো। ওই প্লটের পাশেই কয়েকটি খালি জমি ছিলো। জমিগুলো গভীর গর্ত ছিলো। ধীরে ধীরে গর্তগুলো বালু দিয়ে ভরাট করে চারটি প্লট নির্মাণ করে লিটন। প্রতিটি প্লট ১৮/২৪ ফুট প্রশস্থ্য।
এদিকে ডেমরা এলাকার কাইল্লা সিরাজ হত্যা মামলার আসামী ছিলেন এই লিটন মিয়া। ওই মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ লিটনকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়। এ সুযোগে লিটনের শশুরসহ শশুর বাড়ির লোকজন লিটনের দখলে থাকা ওই চারটি প্লট নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। পরে জামিন পেয়ে জেল থেকে ফিরে এসে লিটন তার চারটি প্লট শশুরসহ শশুর বাড়ির লোকজনের কাছে ফেরত চায়। কিন্তু তারা প্লট ফেরত না দিয়ে লিটনকে নানাভাবে হয়রানি করতে শুরু করে।
ওই সময় লিটন স্থানীয় একটি ডকইয়ার্ডে রংমিস্ত্রী হিসেবে কাজ করতো। এক পর্যায়ে গত সাত মাস আগে লিটন মিয়া নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর লিটনের স্ত্রী রোকেয়া আক্তার মুন্নি বাদি হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন। পরিবারের দাবি, প্লট দখলকে কেন্দ্র করেই শশুরসহ শশুর বাড়ির লোকজন লিটন মিয়াকে হত্যার পর লাশ বালির নীচে পুঁতে রেখে গুম করে ফেলে।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, আটকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই হত্যাকান্ডে আরো কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।









Discussion about this post